বিদায় নিচ্ছে ২০২৩ সাল, নতুন বছরের ব্যস্ত সূচি নিয়ে প্রস্তুত পুরো ক্রীড়াঙ্গন। ক্রীড়া-সংশ্লিষ্ট ও বিশ্লেষকরা নিজেদের মতো করে নতুন বছরের পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন। আবার কেউবা হাজির করছেন এবার কারা ক্রিকেট মাঠে আলো ছড়াবেন। তেমনই দুই তারকা ক্রিকেটারকে নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন ইংল্যান্ডের ক্রিকেট বিশ্লেষক ও ধারাভাষ্যকার নাসের হুসেইন। যেখানে তিনি ভারতীয় ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলি ও পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক বাবর আজমকে রেখেছেন।
নাসের হুসেইনের ওই বিশ্লেষণী ভিডিও আজ (রোববার) প্রকাশ করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। যেখানে দুই তারকার প্রতি নিজের প্রত্যাশার কথাও জানিয়েছেন সাবেক এই ইংলিশ ক্রিকেটার। তিনি বলেন, ‘আমার প্রথম পছন্দ হচ্ছে একজন মেগাস্টার এবং এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আর সে হচ্ছে বিরাট কোহলি। নিশ্চিতভাবে, সে ২০২৩ বিশ্বকাপে দারুণ পারফর্ম করেছে। তার রেকর্ডময় সব ইনিংসেই নজর ছিল সবার, কিন্তু আমরা মনোযোগ দিইনি সে কিভাবে ব্যাট করেছে।’
নাসের আরও বলেন, ‘কৌশলগতভাবে আমি বিরাটকে কখনো এভাবে ব্যাট করতে দেখিনি। শট খেলার সময় তার ব্যাটের শব্দ, মুম্বাইয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলা ইনিংস এবং এরকম আরও পাঁচটি ইনিংসের কথা বলতে পারি, যেখানে সে খুব ভালো অবস্থানে ছিল। এটি বিরাট, ভারত ও বিরাট ভক্তদের জন্য ভালো ইঙ্গিত। এর মানে সে মানসিকভাবে খুব ভালো আছে এবং তার খেলার ধরনও অন্যরকম।’
এ বছর কোহলি ৮টি টেস্টে ৫৫.৯১ গড়ে ৬৭১ রান করেছেন। যেখানে ছিল দুটি করে সেঞ্চুরি ও হাফসেঞ্চুরির ইনিংস। বিশেষ করে সবচেয়ে ভালো সময় কাটিয়েছে ওয়ানডে ফরম্যাটে, ২৭ ম্যাচে ৭২.৪৭ গড়ে তিনি ১৩৭৭ রান করেছেন। ফরম্যাটটিতে কোহলির ব্যাটে এসেছে ৬টি সেঞ্চুরি ও ৮টি হাফসেঞ্চুরি। এ বছর তার কোনো আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা হয়নি। সবমিলিয়ে ৩৫টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে ২০২৩ সালে ৬৬.০৬ গড়ে ২০৪৮ রান করেন কোহলি।
এরপরই নিজের দ্বিতীয় পছন্দ হিসেবে বাবর আজমের নাম উল্লেখ করেন নাসের। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে জুনে হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ভালো করার জন্য বাবরের রান পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। বিষয়টি উল্লেখ করে ইংলিশ ধারাভাষ্যকার বলেন, ‘আমার দুই পছন্দকেই একে অপরের সঙ্গে তুলনা করতে দেখা যায়। তাদের একজন বাবর। আমি মনে করি আসন্ন বছর সে এবং পাকিস্তানের জন্য বড় কিছু করার বছর। সে ক্যাপ্টেন্সি ছেড়ে দিয়েছে, যা কাঁধের বোঝা কমিয়ে দিয়েছে তার। এর মাধ্যমে পাকিস্তানের জন্য তার অনেক রান করার সুযোগ এনে দিয়েছে। দলটিও সেটাই চায়। ক্যারিবীয় দ্বীপে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হবে। আগের আসরেও তারা ফাইনাল খেলেছিল। এবারও ভালো করতে চাইলে সাবেক এই অধিনায়কের রান পাওয়ার বিকল্প নেই।’
২০২৩ সালে বাবরের সবচেয়ে বাজে সময় গেছে টেস্ট ফরম্যাটে। ৫টি টেস্ট ম্যাচে ২২.২৬ গড়ে তিনি মাত্র ২০৪ রান করেছেন। যেখানে নেই কোনো ফিফটি। এছাড়া ২৫টি ওয়ানডে ম্যাচে ৪৬.৩০ গড়ে ১০৬৫ রান করেছেন বাবর। ফরম্যাটটিতে দুটি সেঞ্চুরির পাশাপাশি এবং ১০টি ফিফটি পেয়েছেন এ বছর। বাবর ৫টি টি-টোয়েন্টিতে ৪৩.৩৩ গড়ে ১৩০ রান করেছেন, রয়েছে একটি সেঞ্চুরিও। সবমিলিয়ে ৩৫ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৩৯.৯৭ গড়ে ১৩৯৯ রান করেছেন বাবর।