কাতারে অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় চাপে ফিফা

কাতার বিশ্বকাপের আর বেশিদিন বাকি নেই, মাত্র ১৩ দিন। ২০ নভেম্বর থেকে শুরু হবে এর ধামাকা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শোনা যাচ্ছে বিশ্বকাপের সুর। তবে এর মধ্যেই মুখোমুখি অবস্থানে ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ফিফা ও ইউরোপীয় ফুটবলের ক্ষমতাধর অ্যাসোসিয়েশনগুলো।
বিশ্বকাপ আয়োজনে কোনোরকম কমতি রাখেনি কাতার। তবে এর পিছনে যারা কাজ করেছেন, সেই অভিবাসী শ্রমিকদের প্রতি কাতারের বিরূপ আচরণ নিয়ে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে অনেক দেশ। তখন দলগুলোকে আদর্শগত ও রাজনৈতিক ‘যুদ্ধ’ বন্ধ করে ফুটবলে মনোযোগ দেওয়ার বার্তা দেয় ফিফা।

শ্রমিকদের প্রতি অন্যায় ঢাকতে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন আহবানকে মোটেই আমলে নেয়নি ইউরোপের ফুটবলের ১০টি দেশের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। এই দলে আছে ইংল্যান্ড ও জার্মানির মতো শক্তিধর দেশগুলোও। তারা ফিফাকে জানিয়ে দিয়েছে, অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় পদক্ষেপ নিতে হবে।

কাতার আয়োজক স্বত্ব পাওয়ার পর দেশটির গরম আবহাওয়া নিয়ে আলোচনা হয় অনেক। ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের মৌসুমের মাঝামাঝি বিশ্বকাপ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েও কড়া সমালোচনা হয়। পরে নতুন সমালোচনা শুরু হয় মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে। যার একটি হলো, অভিবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের বাজে আচরণ।

এ প্রসঙ্গে ফিফা বরাবর খোলা চিঠি দিয়েছে ইউরোপের ১০ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। চিঠিতে তারা জানিয়েছে, অভিবাসী শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণে তহবিল গঠন, দোহাতে একটি অভিবাসী শ্রমিক কেন্দ্র তৈরি করতে হবে। এগুলো নিশ্চিত করার জন্য ফিফার প্রতি চাপ অব্যাহত রাখার কথা চিঠিতে বলা হয়।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য কাতারে অভিবাসী শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দিতে বিশ্বকাপের প্রাইজ মানির সঙ্গে মিল রেখে ৪৪ কোটি ডলার বরাদ্দ করতে ফিফার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থা।

গত সপ্তাহে অস্ট্রেলিয়া দল কাতারে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সমকামিদের বিষয়ে দেশটির অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানায়। এই সিদ্ধান্তের আরো একধাপ এগিয়ে প্রতিবাদ করে ডেনমার্ক। ডেনমার্ক দল গত মাসে জানিয়েছিল, মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে পরিবার নিয়ে দলটির খেলোয়াড়রা কাতার ভ্রমণ করবেন না।

এতোসব অভিযোগের তীর যখন ফিফার দিকে, ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি তখন বিশ্বকাপের ৩২ দলকে চিঠি পাঠিয়ে ফুটবলে মনোযোগ দিতে বলেছিল। যেটা স্রেফ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়।

পরে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অভিযোগ করে, মানবাধিকার বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।