অস্ট্রেলিয়া, না শ্রীলঙ্কা?

গ্রুপে নিজেদের অবস্থান মোটেও স্বস্তিদায়ক নয় অস্ট্রেলিয়ার। প্রথম ম্যাচ জয়ী তিন শীর্ষ দল নিউজিল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও ইংল্যান্ডের পরেও নেই বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। খারাপ রান রেটের কারণে আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ডেরও পরে অবস্থান এবারের বিশ্বকাপ স্বাগতিকদের। তাই আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কোমর বেঁধে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া, যে ম্যাচ জিততে প্রয়োজনে মিচেল মার্শও বোলিং করতে চান।

স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার গায়েই ফেভারিট ট্যাগ লাগিয়ে শুরু হয়েছিল বিশ্বকাপ টি-টোয়েন্টি। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের কাছে ৮৯ রানে হেরে বাজেভাবে শুরু হয়েছে তাদের টুর্নামেন্ট। এর মাসুল গুনে অস্ট্রেলিয়া এখন পয়েন্ট টেবিলে সবার নিচে। সেদিন সিডনিতে অজি বোলারদের তুলাধোনা করেছিল কিউইরা। তাই বল হাতে অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক ফিঞ্চকে নতুন ভরসা দিতে প্রস্তুত মিচেল মার্শ, ‘আমি বোলিং করার জন্য প্রস্তুত। একজন অলরাউন্ডার হিসেবে আমি নিজেকে তৈরি করতে চাই এবং ম্যাচজুড়ে প্রভাব রাখতে চাই। ’

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে গত আগস্টে ম্যাচের পর মার্শ আর বোলিং করতে পারেননি। গোড়ালির চোট সারিয়ে দলে ফেরা এই অলরাউন্ডার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামলেও বোলিং করেননি। তবে বোলিংয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ফিটনেস আছে বলে শ্রীলঙ্কার ম্যাচের আগে অধিনায়ককে আশ্বস্ত করেছেন মিচেল মার্শ। ‘আমি বোলিং করতে পারলে দলে বোলিং বিকল্প বাড়বে। স্টোয়নিস, ম্যাক্সি (ম্যাক্সওয়েল) এবং আমি মিলে চার ওভার করে দিতে পারব। দলের প্রয়োজনে আমরা যেকোনো সময় বোলিং করতে পারি’—অলরাউন্ড পারফরম্যান্স দিয়ে দলকে আরো ভারসাম্যপূর্ণ করার জন্য তৈরি মিচেল মার্শ।

এক ম্যাচ হারের পরই চ্যাম্পিয়নদের বোলিং, ব্যাটিং ও ম্যাচ পরিকল্পনা নিয়ে কথা শুরু হয়ে গেছে। তবে পার্থের অপ্টাস স্টেডিয়ামে তাদের পেসাররা স্বমহিমায় ফিরবে বলে মার্শের বিশ্বাস, ‘আমাদের অবশ্যই আক্রমণাত্মক হতে হবে। আমাদের তিন ফাস্ট বোলার যখন শুরু করবে তখন থামানো যাবে না। অন্য ম্যাচে তারা নিশ্চয়ই ভয়ংকর হয়ে ফিরবেন। ’ পার্থের বাউন্সি উইকেটে হয়তো দেখা যাবে স্টার্ক-কামিন্স-হ্যাজেলউডের আসল রূপ।

পার্থের পেস সহায়ক উইকেটে অজি পেসারদের আগ্রাসী বোলিংই হবে শ্রীলঙ্কার জন্য বড় দুশ্চিন্তার বিষয়। প্রথম পর্বে নামিবিয়ার কাছে হারের পর টানা তিন ম্যাচ জিতেছে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নরা। ধারাবাহিক জয়ের বড় অস্ত্র ছিল স্পিন বোলিং। তিন ম্যাচে ৯.৭৮ গড়ে ৯ উইকেট নেওয়া লঙ্কান স্পিন বোলিংকে নেতৃত্ব দিয়েছেন লেগস্পিনার হাসারাঙ্গা। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটা পার্থে বলে কাজ করছে নতুন শঙ্কা—উইকেটে স্পিন ধরবে তো? ওদিকে পেস আক্রমণের সেরা বোলার দুশমন্ত চামিরা চোট পেয়ে ছিটকে গেছেন টুর্নামেন্ট থেকে। অন্য দুই পেসার দানুশকা গুনাতিলেকা ও প্রমোদ মাদুশান লড়ছেন চোটের সঙ্গে। আজকের ম্যাচের জন্য পেস আক্রমণ সাজানো নিয়ে দুর্ভাবনা থাকলে লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকা জানিয়েছেন তাঁর দল লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত, ‘চোট থাকবেই। এর মধ্যেই সেরাটা দিয়ে লড়তে হবে আমাদের। অস্ট্রেলিয়া শক্তিশালী তবে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে খেলার ধারা বদলাতে বেশি সময় লাগে না। দু-তিনটি বিগ হিটে যেমন ইনিংসের চেহারা বদলে যায়, সেরকম দু-তিনটি ভালো বলেও খেলা ঘুরে যায়। ’

টি-টোয়েন্টির রোমাঞ্চ এখানেই, চোখের পলকে মোড় ঘুরে যায় ম্যাচের। তাই আগাম বলারও উপায় নেই শেষ বাঁক নিয়ে আজকের ম্যাচ কোন দলের ড্রেসিংরুমে আনন্দরেণু ছিটাবে!