ইরানে কারাগারে অগ্নিকাণ্ডে হতাহত ৬৫

ইরানের রাজধানী তেহরানের এভিন কারাগারে অগ্নিকাণ্ডে চার বন্দী নিহত ও আরও ৬১ জন আহত হয়েছেন। শনিবার রাতে তেহরানের এই কারাগারে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের এই ঘটনা ঘটেছে বলে দেশটির সরকারি গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে।

শনিবার ইরানি কর্তৃপক্ষ বলেছে, আর্থিক অপরাধ ও চুরির দায়ে দোষী সাব্যস্ত বেশ কয়েকজন কারাবন্দীর লড়াইয়ের পর একটি কারাগারের ওয়ার্কশপে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তেহরানের ওই কারাগারে দ্বৈত নাগরিকসহ ইরানের নিরাপত্তা বিধি লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত অনেক বন্দী রয়েছেন।

ইরানের বিচার বিভাগ বলেছে, শনিবারের অগ্নিকাণ্ডে আহতদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর। ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে চারজন মারা গেছেন বলে দেশটির সরকারি গণমাধ্যম জানিয়েছে।

হিজাব পরার বিধান লঙ্ঘনের দায়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নৈতিকতা পুলিশ ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনিকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশি হেফাজত থেকে কোমায় নেওয়া হয় এই তরুণীকে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মাহসা আমিনি।

পুলিশি নির্যাতনে আমিনির প্রাণহানি ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। এই ঘটনার পর ইরানে গত তিন বছরের মধ্যে বৃহত্তম বিক্ষোভ শুরু করেছেন দেশটির তরুণ-তরুণী, বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি স্কুলের শিক্ষার্থীরাও। আন্দোলনকারী তরুণ-তরুণীরা হিজাব খুলে প্রায় প্রত্যেক দিনই আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর মুখোমুখি হচ্ছে।

ইরানের চলমান বিক্ষোভ সহিংসতায় এখন পর্যন্ত শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে; যাদের বেশিরভাগই বিক্ষোভকারী। তবে নিহতদের মধ্যে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও শিশুরাও রয়েছে।

রোববারও ইরানের তাবরিজ, রাশত শহরসহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারের দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে তেহরানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ‘ইরান বড় কারাগারে পরিণত হয়েছে’, ‘এভিন কারাগার কসাইখানায় পরিণত হয়েছে’ বলে স্লোগান দিতে শোনা যায়।

তবে এই ভিডিওর সত্যতা স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। বন্দীদের ‘গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের’ অভিযোগে ২০১৮ সালে মার্কিন সরকার এভিন কারাগারকে কালো তালিকাভুক্ত করেছিল। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর এভিন কারাগারের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে রাজনৈতিক বন্দীদের কিছু পরিবার।