বোনের মৃত্যু বদলে দিয়েছে পাকিস্তানি ওপেনারের জীবন

এশিয়া কাপে ফাইনালে শ্রীলংকার কাছে শিরোপা হাতছাড়ার জন্য পাকিস্তানের ব্যাটিং ব্যর্থতাকে দুষছেন বিশ্লেষকরা।

মূলত: গোটা সিরিজেই পাকিস্তানি ব্যাটাররা ছিলেন ব্যর্থ। ব্যাট হাসেনি খোদ অধিনায়ক বাবর আজমের। এছাড়া টপঅর্ডারের ফখর জামান, মিডলঅর্ডারের খুশদিল, আসিফ আলিরাও নিজেদের নামের সুবিচার করতে পারেননি।

এ নিয়ে তুমুল সমালোচনার মধ্যে টি-টোয়োন্টি বিশ্বকাপ দলে নেওয়া হয়ে টপঅর্ডার বাটার শান মাসুদকে। টি-টোয়োন্টিতে এখনও অভিষেক ঘটেনি এ বাঁহাতি ব্যাটারের।

পাকিস্তানের জার্সিতে ২৫টি টেস্ট এবং পাঁচটি ওয়ানডে খেলেছেন শান মাসুদ। তবে বিশ্বকাপের আগে আসন্ন ইংল্যান্ড সিরিজে তার টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয়ে যেতে পারে। ৩২ বছর বয়সি এ ওপেনার সবশেষ ওয়ানডে খেলেছেন ২০১৯ সালে।

টি-টোয়েন্টিতে অনভিজ্ঞ এ ব্যাটারের জন্য বিশ্বকাপ বড় একটি চাপ ও চ্যালেঞ্জ। কিন্তু চাপ অনুভব করছেন না শান মাসুদ। তিনি জানালেন, নিজের প্রিয় বোনের মৃত্যুর পর আর কোনো কিছুতেই চাপ অনুভব করছেন না।

একটি বড় দুর্ঘটনা তার জীবন বদলে দিয়েছে। যে ঘটনার কারণে, ক্রিকেটীয় ফর্মেও এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন।

মূলতঃ শান মাসুদের জীবন বদলে দিয়েছে তার বোনের মৃত্যু। বোনের মৃত্যুর পর নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আবার বাইশ গজে নিজেকে ফিরে পেতে মরিয়া পাকিস্তানের এই ব্যাটোর।

বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাওয়া নিয়ে নিজের পরিকল্পনা ও অনুভূতির বিষয়ে করাচিতে শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন শান মাসুদ।
তিনি বলেন, ‘আমি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছু শিখেছি এবং একজন ব্যক্তি ও খেলোয়াড় হিসেবে অভিজ্ঞ হয়ে উঠেছি। জীবনে ক্রিকেটের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ অনেক কিছু আছে। তাই আমি যা যা করি, সেসব নিয়ে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি। আমার বোনের মৃত্যু আমাকে জীবনকে অন্যভাবে ভাবতে শিখিয়েছে। আমি এখন অনুভব করি, দেশের হয়ে প্রিয় ইভেন্টে খেলার সুযোগ পাওয়া এবং তা থেকে উপার্জন করা খুব দারুণ ব্যাপার। কিন্তু ক্রিকেটে সাফল্য ও ব্যর্থতা ছাড়াও জীবনে আরো অনেক কিছু আছে। ’

একটিও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ না খেলেই বিশ্বকাপ স্কোয়াডে। কোনো চাপই অনুভব করছেন না?

শান মাসুদ বলেন, ‘আমি মনে করি, ক্রিকেটাররা সুযোগ পেলেই সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। আর পারফর্ম করতে না পারলে, শুধু ওই ক্রিকেটারই দায়ী। আর কেউই না। তাই সফলভাবে প্রত্যাবর্তন করতে না পারলে কাউকে দোষ দেব না আমি। আমি কেবল আমার সেরাটা দিতে পারি। যদিও ফল আমার হাতে নেই। ’

শান মাসুদ মূলত পাকিস্তানের টেস্ট দলের নিয়মিত পারফরমার। মাত্র ৫টি ওয়ানডে খেলা এ ব্যাটার ইতোমধ্যে ২৫টি টেস্ট ম্যাচ খেলে ফেলেছেন। রান করেছেন ১৩৭৮। যেখানে চারটি শতক ও ৬টি অর্ধশতক রয়েছে।

তবে পাকিস্তানের সাবেক কোচ মিকি আর্থার চাচ্ছেন শান মাসুদের এ প্রতিভা সীমিত ওভারে কাজে লাগাতে।

মিকি আর্থারই বলেন, ‘শান মাসুদ যেন কোনো কিছুতেই সন্তুষ্ট ছিলে না। এ কারণেই তাকে আমি আবার দলে ডেকেছি।’

অনেকের মতে, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক না ঘটলেও ফ্রাঞ্চাইজি লিগে দারুণ ব্যাট করেন শান মাসুদ। পাকিস্তান সুপার লিগ, ইংল্যান্ডে ভাইটালিটি ব্লাস্ট এবং জাতীয় টি-টোয়েন্টি কাপে দুর্দান্ত খেলার কারণেই সুযোগ পেয়েছেন বিশ্বকাপ দলে।

টেস্টে বিশেষজ্ঞ ওপেনার হিসাবে মাঠে নামেন শান মাসুদ। তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাকে মিডলঅর্ডারে নামানো হতে পারে।