তখন ৭ম ওভারের পাঁচটি বল শেষ হয়েছে। জীবন পাওয়া শ্রীলঙ্কার জয়ের নায়ক কুশল মেন্ডিস তখন ভয়ংকর হয়ে উঠছেন। শেখ মেহেদীর বলে কুশল স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ধরা পড়লেন উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের হাতে। আম্পায়ারও তর্জনি উঁচিয়ে ধরলেন।
বিপজ্জনক ব্যাটারকে ফিরিয়ে বাংলাদেশ দলের উদযাপন। কুশল নিলেন ডিআরএসের আশ্রয়। বল ব্যাটে লেগেছিল কি না তা দেখতে গিয়ে ধরা পড়ল নো বল। ফলাফল, আবারও জীবন পেলেন কুশল, যিনি শেষমেশ ম্যাচসেরা পারফরম্যান্স করে দলকে এনে দিয়েছেন জয়।
স্পিনার হয়েও শেখ মেহেদীর এই নো বল মানতে পারছেন না কেউই। ম্যাচের শেষ ওভারে যখন ৮ রান প্রয়োজন, তখন আবারও আস্থা রাখা হয়েছিল মেহেদীর ওপর। আঁটসাঁট বোলিংয়ে ম্যাচ বাঁচানোর আশা যখন কোটি প্রাণে, তখন মেহেদী তৃতীয় ডেলিভারিতে নো বলের সাথে ২ রান দিয়ে জয় দিলেন ‘আগাম উপহার’। ম্যাচ শেষে মেহেদীর এই জোড়া নো বল উঠল কাঠগড়ায়।
অন্য সবার মতো অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও মেহেদীর এই দুই নো বল কোনোভাবেই মানতে পারছেন না। তার মতে, স্পিনারদের জন্য নো বল করা ক্রাইম বা অপরাধের শামিল।
সাকিব বলেন, ‘কোনো অধিনায়কই নো বল চায় না। নো বল ক্রাইম, স্পিনাররা নো বল করলে বিগ ক্রাইম। আমরা আজ অনেক ওয়াইড ও নো বল করেছি। এসব নিয়ে কাজ করতে হবে। আমাদের বোলিংয়ে শৃঙ্খলা ছিল না। চাপের মুখে আমরা ধরতেই পারছিলাম না কী করব। সামনে ভালো করতে হলে এসব শুধরাতে হবে।’
বোলিংয়ে শৃঙ্খলা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে দুই বিভাগই। বিশেষত স্পিনাররা দিতে পারেননি আস্থার প্রতিদান। সাকিব ঘুরে-ফিরে সেই নো বল নিয়েই সবচেয়ে হতাশ। তার ভাষায়, ‘কুশল স্পিন অনেক ভালো খেলে। তাকে দ্রুত সাজঘরে ফেরাতে পারলে স্পিনারদের জন্য সহজ হতো। সে ক্রিজে থাকায় স্পিনারদের জন্য বল করা কঠিন ছিল। ২ রানে সে জীবন পায়। এরপর আউট হল কিন্তু নো বল, তাও একজন স্পিনারের বলে। আগেই বললাম, স্পিনারের বলে নো বল মেনে নেওয়ার মতো নয়।’
সাকিব মনে করেন, ম্যাচে চাপের মুহূর্তই মেহেদীর নো বলের কারণ। চাপে খেলোয়াড়রা যে ভেঙে পড়েন, তার নজিরও দেখা হল অধিনায়কের।
তিনি বলেন, ‘পেস বোলাররা তাও নো বল করে। স্পিনাররা নো বল করা অবশ্যই ক্রাইম। সাধারণত আমাদের স্পিনাররা এরকম নো বল করে না। আজকে বোঝা গেল চাপের মুখে আমরা কতটা ভেঙে পড়তে পারি। স্কিল অনুযায়ী অনেক জায়গায় উন্নতির জায়গা আছে। কিন্তু এই যে চাপে পড়লেই ভেঙে পড়ি, শ্বাসরুদ্ধকর মুহূর্তে হেরে যাচ্ছি বারবার এসব জায়গায় উন্নতি করা খুব জরুরী। এমন ম্যাচের ৫০ শতাংশও যদি জিততাম তাহলে দেখতে টি-টোয়েন্টিতে রেকর্ড অনেক ভালো থাকত।’