বিশ্ববাজারে কমল সোনার দাম

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভসহ অনেক কেন্দ্রীয় ব্যাংকই সুদের হার বাড়াচ্ছে। এতে শক্তিশালী হচ্ছে ডলার, বিপরীতে বিনিয়োগ সম্ভাবনা কমায় পড়ছে সোনার দাম। এক মাস ধরেই বিশ্ববাজারে সোনার দাম কমছে। এতে প্রায় ছয় মাসের মধ্যে সোনার দাম সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। তবে বিশ্ববাজারে দাম কমলেও গত এক মাসে দেশের বাজারে সোনার দামে কোনো পরিবর্তন আসেনি।

বাজারসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং ইকোনমিকসের হিসাবে, সোনার পাশাপাশি গত এক মাসে বিশ্ববাজারে রুপা ও প্লাটিনামের দামে বড় পতন হয়েছে। এক মাসের ব্যবধানে সোনার দাম কমেছে ৩.১০ শতাংশ। রুপার দাম কমেছে ১০.৮২ শতাংশ। আর প্লাটিনামের দাম কমেছে ১৩.০৬ শতাংশ। কোটাক সিকিউরিটিজের কমোডিটি রিসার্চ বিভাগের প্রধান রবীন্দ্র রাও বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি ব্যাপক আকার ধারণ করায় বড় অর্থনৈতিক দেশগুলোর বেশির ভাগই সুদের হার বাড়াচ্ছে এবং মুদ্রানীতি কঠোর করছে। এতে ডলার শক্তিশালী হচ্ছে। ফলে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনার আকর্ষণ কমছে। ’

এক মাস আগে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল এক হাজার ৮৬৮.০৯ ডলার। সেখান থেকে কমতে কমতে এখন তা এক হাজার ৮১০.১৮ ডলারে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ এক মাসে প্রতি আউন্স সোনার দাম কমেছে ৫৭.৫১ ডলার। এর মধ্যে গেল সপ্তাহে বিশ্ববাজারে সোনার দাম কমেছে ১৬.০৭ ডলার বা ০.৮৮ শতাংশ। সোনার পাশাপাশি গেল সপ্তাহে কমেছে রুপা ও প্লাটিনামের দামও। গত সপ্তাহে প্রতি আউন্স রুপার দাম কমেছে ১.২৪ ডলার বা ৫.৮৭ শতাংশ। এতে প্রতি আউন্স রুপার দাম দাঁড়িয়েছে ১৯.৮৭ ডলারে। আর প্লাটিনামের দাম গত সপ্তাহে কমেছে ১৮.৫১ ডলার বা ২.০৪ শতাংশ। এতে প্রতি আউন্স প্লাটিনামের দাম দাঁড়িয়েছে ৮৮৯ ডলারে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই বিশ্ববাজারে সোনার দামে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। হুট করে সোনার দামে বড় উত্থান, এরপর আবার বড় দরপতনের ঘটনা ঘটছে কয়েক মাস ধরেই। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। বিশ্ব অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। হু হু করে বেড়েছে বিভিন্ন পণ্যের দাম।

সোনা আমদানিতে শুল্ক বাড়াল ভারত

বাণিজ্য ঘাটতি কমানো ও রুপির দরপতন রোধ করার লক্ষ্যে সোনা আমদানিতে শুল্ক বাড়াল ভারত সরকার। দেশটি সোনা আমদানিতে শুল্ক ১০.৭৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করেছে। ভারতীয় গণমাধ্যম জানায়, চলমান বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ন্ত্রণ ও আমদানি কমাতে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ নিয়ম ৩০ জুন থেকে কার্যকর হয়েছে। এর আগে দেশটিতে বেসিক কাস্টমস শুল্ক ছিল ৭.৫ শতাংশ। এখন এটি ১২.৫ শতাংশ হবে। সব মিলিয়ে স্বর্ণ আমদানির ওপর মোট শুল্ক দাঁড়াবে ১৫ শতাংশ। ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি স্বর্ণের আমদানি বেড়ে গেছে। চলতি বছরের মে মাসে মোট ১০৭ টন স্বর্ণ আমদানি করা হয়। জুনে এর পরিমাণ ছিল আরো বেশি।

সূত্র : ট্রেডিং ইকোনমিকস, লাইভমিন্ট