এক ঢিলে দুই পাখি’ শিকার করবেন সুলতান মনসুর

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির ভরাডুবির মধ্যেও সুলতান মনসুরের জয় নিয়ে অনেকটা আশ্চর্য হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারাও। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ থেকে সাবেক হওয়ার পর তেমন আলোচনায় ছিলেন না মনসুর আহমেদ। তবে এলকায় যে তিনি এতটা জনপ্রিয় খোদ আওয়ামী লীগ নেতারাও তা চিন্তা করেননি হয়তো।

গণফোরামের হয়ে ধানের শীষ প্রতীকে বিজয়ী হওয়ার পর ডাকসুর সাবেক এই ভিপি ফের আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছেন এমন সংবাদও গণমাধ্যমে এসেছে।

সংবাদে বলা হয়েছে, আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের প্যানেলকে বিজয়ী করতে সাবেক এই ভিপিকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে।

এবিষয়ে মনসুর আহমেদ বলেন, আমি তো ছাত্রলীগের প্যানেল থেকেই ভিপি নির্বাচিত হয়েছি। নেত্রী (শেখ হাসিনা) আমাকে নেতা বানিয়েছেন। ছাত্রলীগের প্যানেলকে নির্বাচিত করার কোনো দায়িত্ব পালনের প্রস্তাব এলে তা অবশ্যই গ্রহণ করবো।

আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তো আওয়ামী লীগ ছাড়িনি। আওয়ামী লীগ আমাকে বহিষ্কারও করেনি। সক্রিয় হওয়ার বিষয়টি ভবিষ্যতে দেখা যাবে।

এদিকে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর শপথগ্রহণ নিয়ে জটিলতায় ভুগছেন তিনি। একদিকে দলের পক্ষ থেকে চাপ রয়েছে শপথ না নিতে। অন্যদিকে শপথ না নিলে তার রাজনৈতিক জীবনের ইতি ঘটতে পারে বলেও ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।

এঅবস্থায় দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে শপথ নিলে দল থেকে বহিস্কার এবং সংসদ সদস্য পদ হারানোর ভয় থেকে যায় (কোনো সংসদ সদস্য নিজ দল থেকে বহিস্কৃত হলে তার আসন শূন্য হয়)।

অন্যদিকে সংসদীয় আইন অনুযায়ী সংসদ সদস্য হিসেবে গেজেট প্রকাশের তিন মাসের মধ্যে শপথ না নিলে যে কারো সংসদ সদস্য পদ বাতিল হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন পুনরায় সেই আসনে তফসিল ঘোষণা করবে।

এসব দিক চিন্তা করে অভিজ্ঞ এই নেতা ‘এক ঢিলে দুই পাখি’ শিকারের পন্থা অবলম্বন করতে যাচ্ছেন বলে সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, নিজ দল গণফোরামের মত উপেক্ষা করেই সময়ের একেবারে শেষ দিকে শপথ নেবেন সুলতান মনসুর। এক্ষেত্রে তাকে যদি গণফোরাম থেকে বহিস্কার করা হয় তবে তার সংসদীয় আসনটি শূন্য ঘোষিত হবে। এবং পুননির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচন করবেন।

এমনটি যদি হয় তবে, একদিকে যেমন সংসদ সদস্য হিসেবেও টিকে থাকবেন অন্যদিকে পুরোনো দল আওয়ামী লীগের ফেরার রাস্তাও তুলনামূলক সহজ এবং ইতিবাচক হবে।

আর আওয়ামী লীগে ফেরা যদি নাও হয় তবুও সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার পরিকল্পনা করে রেখেছেন তিনি।

এবারের নির্বাচনে জয়ের পর এলাকায় জনপ্রিয়তা নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন সুলতান মনসুর। তাই পুননির্বাচনে সতন্ত্র প্রার্থী হলেও তার জয় কেউ ঠেকাতে পারবে না বলেই ধারণা এই নেতার।

তাছাড়া পূর্বের সকল ভেদাভেদ ভুলে অভিজ্ঞ নেতাদেরে শেখ হাসিনা যেভাবে দলে ডেকে নিচ্ছেন তাতে সুলতান মনসুরকে দলের ভেড়ানো সময়ের ব্যাপার বলেও মনে করা হচ্ছে।–গোনিউজ২৪