মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবার দিলেন নতুন ঘোষণা

তিন বছর আগে পাহাড়ি এলাকা ওয়াং কেলিয়ানে মানব পাচার ও গণকবর আবিষ্কারের ঘটনা তদন্তে রয়েল কমিশন অব ইনকোয়ারি (আরসিআই) গঠন করবে মালয়েশিয়া। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মুহিদ্দিন ইয়াসিন বলেছেন, এই কমিশনের সদস্যদের নাম নবনির্বাচিত রাজার কাছে হস্তান্তর করা হবে সম্মতির জন্য। তবে তাতে যেসব নাম থাকবে বা কখন ওই তালিকা জমা দেয়া হবে এ বিষয়ে তিনি কিছু বলেন নি। এ খবর দিয়েছে স্টার অনলাইন।

তিন বছর আগে ২০১৫ সালে ওয়াং কেলিয়ান দিয়ে মানব পাচারের বিষয়টি আবিষ্কার করে মালয়েশিয়া। ওই এলাকায় পাহাড়ি দুর্গম এলাকায় দেশটির নিরাপত্তা রক্ষীরা দেখতে পান গণকবর। সেখানে কয়েক শত মানুষকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ধারণা করা হয়, তারা মিয়ানমারের রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশী।

তাদেরকে দালালরা অবৈধ পথে মালয়েশিয়া নেয়ার জন্য ওই এলাকায় ক্যাম্পে জমায়েত করেছিল। নির্যাতনে তারা মারা যান। এসব মানুষকে কক্সবাজার উপকূল অথবা মিয়ানমার থেকে নিয়ে গিয়েছিল পাচারকারীরা। ঝুঁকিপূর্ণ বোটে করে তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় থাইল্যান্ডের উপকূলীয় জঙ্গলে। সেখানেই তাদেরকে জিম্মি করে চাওয়া হয়েছিল মুক্তিপণ। যারা দেশে থাকা আত্মীয়দের মাধ্যমে সেই মুক্তিপণ দিতে পেরেছিলেন তারা মুক্ত হয়েছেন এবং মালয়েশিয়ায় গিয়েছেন। যারা মুক্তিপণ দিতে পারেন নি তাদের ওপর নেমে এসেছিল বর্বর নির্যাতন। তাদেরকে খাবার ও পানি ছাড়া ফেলে রাখা হয়েছিল।

এমন পরিস্থিতিতে পড়ে ওইসব মানুষ মারা যান। থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় এসব মানুষের গণকবর আবিষ্কার হবার পর দু’দেশই তাদের নৌসীমান্তে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করে। আন্দামান সাগরে দেখা দেয় অভিবাসী সঙ্কট। ওই অঞ্চলে বেশ কয়েক হাজার রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশী অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরে বিশ্বজুড়ে ক্ষোভের মুখে ভাসমান ওইসব অভিবাসীদের গ্রহণ করতে সম্মত হয় মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়া। এ নিয়ে তখন ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক মহলে।

এখন ওই ঘটনা তদন্তে নতুন গতি এসেছে। ড. মাহাথির মোহাম্মদ নেতৃত্বাধীন নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার আট মাসের মাথায় দুর্নীতিমুক্ত মালয়েশিয়া গঠনের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বারনামা রিপোর্ট করেছে যে, ২৭শে জানুয়ারি আরাউতে পারলিস মালয় কংগ্রেসের সেশনে যোগ দেয়ার পরে মুহিদ্দিন বলেছেন, এর আগে এ বিষয়ে তদন্ত করেছে পুলিশ। তারা এ নিয়ে রিপার্ট তৈরি করেছে। তা সত্ত্বেও আমরা একটি আরসিআই গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যাতে কোনো ভুল বোঝাবুঝি বা পক্ষপাতিত্ব এড়ানো যায়। তিনি আরো বলেন, এই কমিশনকে ওই দুটি বিষয়ে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেয়ার জন্য ৬ মাস সময় দেয়া হবে।