এখন বিএনপিকে সংসদে আনার মিশনে নেমেছেন ড.কামাল

বিএনপিকে সংসদে আনার মিশনে নেমেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড.কামাল হোসেন। গতকাল রোববার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে কেন জাতীয় সংসদে যাওয়া উচিত সে ব্যাপারে ড.কামাল তার যুক্তিও তুলে ধরেন।

যদিও বৈঠক শেষে গণফোরাম নেতা মোস্তফা মোহসীন মন্টু জানিয়েছেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট শপথ নেবে না। কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একাধিক নেতা জানিয়েছে, বৈঠকে সংসদে যোগ দেয়ার পক্ষেই ছিলেন ড. কামাল হোসেন।

এর আগে গত শুক্রবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার। এই বৈঠকেও মার্কিন রাষ্ট্রদূত বিএনপিকে জাতীয় সংসদে যোগ দেয়ার পরামর্শ দেন। যদিও এই বৈঠকের পর কোন পক্ষই বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে মুখ খোলেননি।

তবে, বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সংসদ সদস্য হিসেবে বিএনপির নির্বাচিতরা যেন শপথ নেন, এজন্য বিএনপির উপর চাপ বাড়ছে।

বিএনপির একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ড. কামাল হোসেন বিভিন্ন বিদেশি দূতাবাসের পরামর্শেই এখন তার অবস্থান পরিবর্তন করেছেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সর্বশেষ স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচিত কেউ শপথ নেবেন না। কিন্তু দুই দিনের মধ্যে ড. কামাল পাল্টে গেলেন।

বিএনপির ওই নেতা আরো বলেন, শুক্রবার মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসায় অনুষ্ঠিত বৈঠকেও বিএনপি মহাসচিবকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন যে, ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে তার কথা হয়েছে।

তিনি সংসদে যাওয়ার পক্ষে।

এর পরদিন ড. কামাল হোসেন তার দলের বৈঠকে সংসদে যাওয়ার পক্ষে মত দেন। গণফোরামের একাধিক সূত্র বলছে, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য চাইছে বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যেন সংসদে যোগ দেয়। সংসদীয় গণতন্ত্রের রীতি অনুযায়ী সেখানেই তারা যেন সরকারের বিরুদ্ধে তাবৎ অভিযোগসমূহ উত্থাপন করে।

একটি সূত্র দাবি করেছে, গত বৃহস্পতিবার বিদায়ী ভারতীয় রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ টেলিফোনে কথা বলেন। সেখানে শ্রিংলা যেকোনো মূল্যে গণতান্ত্রিক রীতিনীতির চর্চা যেন অব্যাহত থাকে সেজন্য বিশেষ ভূমিকা নেওয়ার জন্য ড. কামাল হোসেনকে অনুরোধ করেন।

শ্রিংলা বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলার একটাই গণতান্ত্রিক প্লাটফরম আছে সেটা হলো সংসদ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানাচ্ছে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এবং জেএসডির নেতা আ. স. ম. আবদুর রব রোববার ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে কথা বলেন। দুজনকেই ড. কামাল সংসদে যোগ দেয়ার পক্ষে যুক্তি দেখান।

ড. কামাল এটাও বলেছেন যে, বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সংসদে যোগ দিলে তারাই হবে প্রধান বিরোধী দল। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টি যেহেতু মহাজোটের শরীক হিসেবে সংসদ নির্বাচন করেছে, তাই তারা বিরোধী দলের মর্যাদা পেতে পারে না। বিরোধী দল হিসেবে ক্ষুদ্র শক্তি (৮টি আসন) নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সরকারের মোকাবেলা করা উচিত।’

এ ব্যাপারে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীও একমত পোষণ করে বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে ড. কামাল হোসেনের মতের সঙ্গে একমত। আমি মনে করি সংসদে গিয়ে উচ্চকন্ঠে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলা উচিৎ। এতে মানুষ বুঝবে। কারণ দেশের সবাই জানে কি নির্বাচন হয়েছে। তাই বিএনপির উচিৎ সংসদে গিয়ে কথাগুলো বলা।’–বাংলাদেশটূডে