ঢাকায় আড়মোড়া ভেঙে ছুটির দিনে ধানের বিএনপির ব্যাপকভাবে প্রচার

বাধাবিঘ্নের অভিযোগ আনা বিএনপি এবং তার জোটের প্রার্থীরা সাপ্তাহিক ছুটির দিন রাজধানীতে ব্যাপকভাবে প্রচার চালিয়েছেন। এত দিন না নামলেও প্রথমবারের মতো ভোটারের কাছে গেছেন ঢাকা-১০ আসনের আবদুল মান্নান।

আগামী ৩০ ডিসেম্বরের ভোট সামনে রেখে প্রচারের সুযোগ আছে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত। আর গত ১০ ডিসেম্বর থেকেই আওয়ামী লীগ চালাচ্ছে দাপুটে প্রচার। প্রার্থীদের পোস্টার, ব্যানারে ছেয়ে গেছে লোকালয়। চলছে মাইকিং, প্রার্থীরাও বিতরণ করছেন লিফলেট, যাচ্ছেন ভোটারের কাছে।

তবে এখনো আড়ালেই ঢাকা-১২ আসনের সাইফুল আলম নীরব এবং ঢাকা-১৬ আসনের আহসানউল্লাহ হাসান। প্রচারে নেমে হামলার অভিযোগ করেছেন ঢাকা-৪ আসনের সালাহউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা-৬ আসনের সুব্রত চৌধুরী, ঢাকা-৮ আসনের মির্জা আব্বাস, ঢাকা-৯ আসনের আফরোজা আব্বাস। বাকি প্রার্থীরাও বাধা, ভয়-ভীতির কারণে মাঠে না নামার কথা বলেছিলেন।

তবে গতকাল সকাল থেকেই দল বেঁধে প্রচারে নামেন বিএনপি ও তাদের জোটের প্রার্থীরা। সঙ্গে ছিলেন নারী কর্মীরাও। দুই নারী প্রার্থী গেছেন বাড়ির ভেতরেও। অন্যরা বাজার, লোকালয়, সড়কের ধারে চালিয়েছেন প্রচার।

এ সময় ধানের শীষের প্রার্থীরা সরকারের নানা সমালোচনা করার পাশাপাশি তারা ক্ষমতায় এলে কী কী উন্নয়ন করবেন, তা তুলে ধরেন ভোটারের কাছে।

দুপুরে শাজাহানপুর, শান্তিনগর ও রাজারবাগ এলাকায় বিএনপির মিছিলও দেখা গেছে। সঙ্গে ছিলেন ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী মির্জা আব্বাস।

ঢাকা-৪ আসনে সালাহউদ্দিন আহমেদ ভোটারদের কাছে না গেলেও নিজ বাসভবনে নেতা-কর্মীদের ডেকে নানা দিকনির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তার ছেলে তানভীর আহমেদ রবিন।

ঢাকা-৫ আসনে নবী উল্লাহ নবী প্রচার চালান বিশ্বরোডের সাদ্দাম মার্কেট ও মাতুয়াইলের আশপাশের এলাকায়। তিনি শুরু থেকেই মোটামুটি মাঠে আছেন। প্রতিদিনই প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে।

টিকাটুলীর সেন্ট্রাল মহিলা কলেজ এলাকা থেকে এর আশপাশে প্রচার চালান ঢাকা-৬ আসনের প্রার্থী সুব্রত চৌধুরী। তিনি ভোটারদের নির্ভয়ে কেন্দ্রে গিয়ে ধানের শীষে ভোট দেওয়ার অনুরোধ করেন।

ঢাকা-৭ আসনে মোস্তফা মহসিন মন্টু চকবাজারের শাহী মসজিদ এলাকা থেকে খাজে দেওয়ান, ঢাকেশ্বরী মন্দির এলাকা হয়ে আজিমপুর মেটার্নিটি পর্যন্ত প্রচার চালান। গণফোরাম নেতার ঘনিষ্ঠ আবিদ আহমেদ খান সুজন বলেন, ‘আমরা নির্বিঘেœই ভোটারের কাছে গেছি।’

ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী মির্জা আব্বাস প্রচারে নেমে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘মাঠের অবস্থা ভালো নয়। আমরা প্রচারণা চালাচ্ছি গেরিলা কায়দায়, চোরাগোপ্তাভাবে।’

শাজাহানপুর, শান্তিনগর ও রাজারবাগ এলাকায় মিছিল করে আব্বাস বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন আমরা কয়জন লোক নিয়ে মিছিল শুরু করেছিলাম। আর কয়জন লোক নিয়ে শেষ করলাম। জনগণের স্রোতের মুখে তাদের সব চক্রান্ত ছিন্ন হয়ে যাবে।’

খিলগাঁও এলাকায় সকাল থেকে প্রচার চালান ঢাকা-৯ আসনের আফরোজা আব্বাস। তার প্রচারে নানা সময় হামলা ও বাধার অভিযোগ এনে বলেন, ‘আমি ভয় পাই না। হামলা যতই হোক, আমি নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাব। প্রতিদিনই প্রোগ্রাম করছি, আগামীতেও করব।’

সরকারদলীয় প্রার্থী সাবের হোসেন চৌধুরীর উদ্দেশে আফরোজা বলেন, ‘আপনি আমাকে সুযোগ করে দেন। যেহেতু আপনি সরকারে, তাই আমাকে আপনি নিরাপত্তা দেন।’

ঢাকা-১০ আসনের আব্দুল মান্নান জুমার নামাজের পর নির্বাচনী এলাকা ধানমন্ডিতে প্রচার চালান। ভোটারদের হাতে নিজের লিফলেট তুলে দিয়ে নির্বাচনে ধানের শীষে ভোট চান। তিনি এর আগে সেভাবে প্রচার চালাননি এই এলাকায়।

ঢাকা-১১ আসনে শামীম আরা বেগম নূরেরচেলা, শাহজাদপুর, বাড্ডা, আদর্শনগর এলাকায় গণসংযোগ করেন। তিনি অলি-গলিতে গিয়ে ভোটারদের কাছে ভোট ও দোয়া চান। প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে নারীদের সঙ্গে সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে কথা বলেন।

ঢাকা-১২ আসনের প্রার্থী সাইফুল আলম নীরব অজ্ঞাত স্থানে থাকলেও তার পক্ষে মহিলা দলের কর্মীরা প্রচারণা চালিয়েছেন। হাতিরঝিল ও তেজগাঁও এলাকায় নীরবের পক্ষে তারা লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ করেন।

ঢাকা-১৩ আসনের আব্দুস সালাম জুমার নামাজের আগে এবং পরে কাটাসুর ও বসিলা এলাকায় নির্বাচনী প্রচার চালান। এ সময় তার সঙ্গে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহসহ স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

এর আগে সকালে গুলশানে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে নারায়ণগঞ্জে রওনা হন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম। সেখানে তিনি বিএনপি ও জোটের শরিকদের পক্ষে ধানের শীষে ভোট চান।

সূত্র: ঢাকা টাইমস