জমে উঠেছে পার্থ-ফারুকের লড়াই


হেভিওয়েট ও তারকাখচিত প্রার্থীদের জন্য বিশেষভাবে আলোচিত ঢাকা-১৭ আসনটি। প্রার্থীদের মধ্যে নৌকা নিয়ে আছেন রূপালী পর্দা কাঁপানো আকবর হোসেন পাঠান ফারুক, লাঙ্গল নিয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, ধানের শীষ নিয়ে ২০ দলীয় জোটের শরিক বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ এবং সিংহ প্রতীক নিয়ে বিএনপির সাবেক মন্ত্রী নাজমুল হুদা।

ঢাকার এই আসনটিতে প্রধান সব প্রতিদ্বন্দ্বীরই পোস্টার চোখে পড়ে। আওয়ামী লীগের তুলনায় কম হলেও আছে ধানের শীষের পক্ষেও পোস্টার আছে মূল সড়ক এবং অলিগলিতে।

গুলশান-২ এর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকুরে এম এন রহমান মুশফিক বলেন, ‘এখানে নৌকার পোস্টার বেশি দেখা যাচ্ছে। লাঙ্গলেরও আছে। তবে তা সংখ্যায় কম। নৌকা ও লাঙ্গলের মিছিলও দেখা যায় মাঝে মাঝে। কিন্তু ধানের শীষসহ বাকিদের খবর একটু কম। বাসায় এসে কেউ ভোটও চাচ্ছে না।’

প্রচারে বেশি সক্রিয় ফারুক। তার নায়কের পরিচিতিও কাজে লাগছে। ভোটারের কাছে গেলে সাড়াও মিলছে। সেলফি তোলার আবদারও মেটাতে হচ্ছে ভোট চাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে।

ঢাকা টাইমসকে ফারুক বলেন, ‘হিরো ফারুককে মানুষ পছন্দ করে জানতাম। কিন্তু ভোটের মাঠে যে সাঁড়া পাচ্ছি, তা আশাতীত। আশা করছি, জনগণের ভালোবাসায় ঢাকা-১৭ আসনটি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে পারব।’

ফারুকের সম্ভাব্য প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এরশাদ নাকি পার্থ নাকি ত্রিমুখী লড়াই হবে, সেটি বোঝার উপায় নেই। কারণ, ভোটাররা সেভাবে মুখ খুলছেন না। আর এই আসনের বেশির ভাগ এলাকাতেই মিছিল, নির্বাচনী ক্যাম্প চোখে পড়ে না।

ফারুকের মতো চলচ্চিত্রের তারকা না হলেও পার্থরও আলাদা পরিচিতি আছে রাজনৈতিক অঙ্গণে। তরুণ রাজনীতিক হিসেবে আছে জনপ্রিয়তাও। তিনি ভোলা-১ আসনে ভোট করে আসছিলেন গত দুটি নির্বাচনে। তবে এবার শেষ মুহূর্তে ঢাকা-১৭ আসনে তাকে প্রার্থী করেছে বিএনপির নেতৃত্বে জোট।

ঢাকার প্রচার মফস্বলের মতো না, আর পার্থও সেভাবে আদাজল খেয়ে ভোটারের কাছে যাচ্ছেন, এমন নয়। ঢাকা টাইমসকে তিনি বলেন, ‘হুমকি-ধমকিও হজম করতে হচ্ছে। তবে সব বাধা পেরিয়ে আমাদের প্রচারণা চলছে। …আমি নির্বাচন করে বিজয়ী হতে চাই। গ-গোল করতে চাই না। গ-গোল করে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে পেরে ওঠা সম্ভব নয়। তাদের অধীনে নির্বাচন হচ্ছে-এ বিষয়টা মাথায় রেখে প্রচারণা চালাচ্ছি। এক্ষেত্রে প্রচারণার ক্ষেত্রে মাঝে মাঝে গোপনীয়তাও অবলম্বন করতে হচ্ছে।’

নৌকার তুলনায় পোস্টার কম থাকার বিষয়ে পার্থ বলেন, ‘সব জায়গায় যা হচ্ছে, এখানেও তাই হচ্ছে। পোস্টার লাগালে ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। পরে আবার লাগানো হচ্ছে।’

অবশ্য ফারুক এই অভিযোগ নাকচ করেছেন। তিনি বলেন, ‘রাজনীতির মাঠ থেকেই চলচ্চিত্র অঙ্গনে গিয়েছি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হিসেবে রাজনৈতিক শিষ্টাচার শিখেছি। সেখানে পোস্টার ছেঁড়ার শিক্ষা পাইনি। কাজেই এগুলো আমার কাজের মধ্যে পড়ে না। এরপরও যারা অভিযোগ করছেন, তারা ডাহা মিথ্যা বলছেন। আমরা পোস্টার না ছিঁড়লেও একটি গোষ্ঠী আমাদের পোস্টার ছিঁড়েছে বলে অভিযোগ পেয়েছি।’

এই আসনে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ৬৭ হাজার ৮৪২ ভোটে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে জিতেছিলেন এরশাদ। তবে তখন আওয়ামী লীগের সমর্থন ছিল তার প্রতি। কিন্তু এবার নৌকার আলাদা প্রার্থী থাকায় তিনি অত ভোট পাচ্ছেন না, এটি সহজেই অনুমেয়।