আজ পাকিস্তানে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয়েছে । বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ভোট চলে। জাতীয় পরিষদের ২শ’ ৭২টি আসন ছাড়াও প্রাদেশিক পরিষদের ৫শ’ ৭৭টি আসনে নির্বাচন হচ্ছে। পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে ভোটগ্রহণের পর এখন চলছে গণনা। ফলাফলও আসতে শুরু করেছে। প্রাথমিক ফলাফলে এগিয়ে রয়েছে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, এখন পর্যন্ত ন্যাশনাল এসেম্বলির ১৮১টি আসনের বেসরকারি ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে ইমরান খানের পিটিআই ৬২টি আসনে জয় লাভ করেছে। নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন পেয়েছে ৪৩টি আসন। আর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ২৬টি আসন। অন্য দলগুলো সব মিলিয়ে ৫০টি আসনে জয়লাভ করেছে।
ব্যাপক সহিংসতার মধ্য দিয়ে বুধবার পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় নির্বাচন। দ্বিতীয়বারের মতো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে এই নির্বাচন হচ্ছে।
আজ জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে ভোট হচ্ছে। ৩৪৭ আসন বিশিষ্ট পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের ২৭২টিতে সরাসরি ভোট হয়। ৭০টি আসন রয়েছে সংরক্ষিত। এছাড়াও সিন্ধ, পাঞ্জাব, বেলুচিস্তান ও খাইবার পাকতুনখার প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য নির্বাচনেও ভোট দিয়েছে দেশটির সাড়ে ১০ কোটি ভোটার। পাকিস্তানে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন জাতীয় পরিষদের কমপক্ষে ১৩৭টি আসন।
নির্বাচনকে ঘিরে উত্তপ্ত দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি। প্রচারের সময় জঙ্গি হামলায় দুইজন প্রার্থীসহ নিহত হয়েছে শতাধিক মানুষ। দুর্নীতি অভিযোগে সুপ্রিম কোর্ট অযোগ্য ঘোষণা করায় নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী মুসলিম লীগ নেতা নওয়াজ শরিফ।
দুর্নীতির মামলায় ১০ বছরের দণ্ড নিয়ে কারাগারে রয়েছেন নওয়াজ ও তার মেয়ে। নির্বাচনে মুসলিম লীগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তার ছোট ভাই শাহবাজ শরিফ। পিএমএল এর অভিযোগ, সেনাবাহিনী অপ্রকাশ্যে তাদের দলের বিরুদ্ধে কাজ করছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পিএমএল এর সাথে মূল লড়াই হবে সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানের তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের। তিনি সেনাবহিনীর সমর্থন পাচ্ছেন বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তবে তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হতে পারে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টোর নেতৃত্বে পাকিস্তান পিপলস পার্টি।
এদিকে গুঞ্জন ছড়িয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে জেলে রেখে প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ প্রধান ও সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খান। নির্বাচনের আগে প্রকাশিত বেশ কয়েকটি জরিপেও ইমরান খানকেই দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
সাবেক স্বৈরশাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফ ক্ষমতা থেকে সরে গেছেন মাত্র ১০ বছর। এরইমধ্যে দুই মেয়াদের সরকার ক্ষমতায় ছিল। একবার পিপিপি ক্ষমতায় এলেও পরবর্তী সময়ে ক্ষমতায় আসে নওয়াজ নেতৃত্বাধীন মুসলিম লীগ। তারা পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকলেও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নওয়াজ মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। এর আগে পিপিপি ক্ষমতায় থাকাকালেও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীও পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি।