রক্তাক্ত মেয়ের মৃত্যু, তবুও নারী-খতনা সমর্থন বাবার

১০ বছরের ছোট্ট মেয়েটির খতনা দিতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত বিপজ্জনক ও অপ্রয়োজনীয় বিধায় বহু মানুষই এর প্রতিবাদ করেন। কিন্তু সোমালিয়ার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন।

আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, নিজের মেয়ের মৃত্যুর পরেও নারী-খতনা সমর্থন করেন সোমালিয়ার ডাহির নূর। জোরপূর্বক খতনা দেওয়ার পর গত ১৭ জুলাই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মেয়েটির মৃত্যু হয়।

নিহত শিশুর বাবা ডাহির নূর বলেন, এলাকার লোকজন এতেই সন্তুষ্ট। বিপজ্জনক হলেও এটাই আমাদের সংস্কৃতি।

এই বর্বর প্রথার বিরুদ্ধে বহু দেশেই প্রবল জনমত রয়েছে। কিন্তু সোমালিয়ায় ৯৮ শতাংশ নারীরই খতনা করা হয় বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ। সোমালিয়ার আইন অনুযায়ী নারী খতনাকে সমর্থন করা হয় না। তবে একে একেবারে নিষিদ্ধও করা হয়নি।

নারী খতনায় সাধারণত জননাঙ্গের বাইরের অংশগুলো কেটে ফেলা হয়। এতে অনাকাঙ্ক্ষিত আঘাতের ঘটনা ঘটে। এছাড়া চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে অপ্রয়োজনীয় হওয়ায় এ অনুশীলনকে সমর্থন করা হয় না।

খতনার পর শিশুটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন ড. আব্দিরাহমান ওমর হাসান। তিনি বলেন, শিশুটিকে মারাত্মকভাবে কেটে আহত করা হয়েছিল। এছাড়া তার টিটেনাস সংক্রমণও হয়েছিল।

সোমালিয়ায় সাধারণত নারী খতনার সময় ব্যবহৃত সরঞ্জাম জীবাণুমুক্ত করা হয় না। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

বর্বর এ প্রথায় নিজ মেয়ের মৃত্যুর পরেই সেই বাবা নূর বিষয়টি নিয়ে অসন্তুষ্ট নন। তিনি এ প্রথার বিরুদ্ধে কোনোকিছু বলতে নারাজ। এমনকি তার মেয়ের মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করতেও তিনি রাজি নন।

এমনকি যে নারী তার মেয়ের খতনার কাজটি করেছিলেন তার বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ ধরনের ক্ষেত্রে কারো বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ নেই বলে জানান সোমালিয়ার একটি নারী অধিকার গ্রুপের পরিচালক হায়া অ্যাডেন মোহাম্মেদ।

সোমালিয়ায় নারী খতনা নিয়ে শুধু একটি এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা নয়। অসংখ্য দুর্ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। এটি তার শুধু একটি নজির মাত্র। এর সঙ্গে দেশটির রাজনীতিও জড়িত হয়ে পড়েছে। নারী খতনা নিষিদ্ধ করার ঝুঁকি কেউই নিতে চাইছে না।