প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার প্রস্তুতি

ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা

মিজানুর রহমান, সহকারি শিক্ষক

পিরোজপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়

পূর্ব প্রকাশের পর

তোমরা মনোযোগ দিয়ে পড়, সামনে পরীক্ষা।

৪। যে-কোনো আটটি প্রশ্নের উত্তর

দাও। ৬ ´ ৮=৪৮

ক) নবি-রাসুলগণের মূল শিক্ষা কী? এ শিক্ষার আলোকে তুমি কীভাবে মানুষকে দ্বীনের পথে আহ্বান করবে ?

খ) একজন মুসলিমের চরিত্র কেমন হওয়া উচিত? তার চরিত্রে কোনো ধরনের খারাপি থাকতে পারে কি? যদি না পারে তাহলে কেন ?

গ) ব্যাপক অর্থে ইবাদত বলতে কী বোঝায় ? ইবাদাতের জন্য পবিত্র থাকা প্রয়োজন কেন ?

ঘ) আওকাতুস সালাত বলতে কী বোঝায় ? পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের সময় বর্ণনা করো।

ঙ) তুমি কীভাবে মসজিদের আদব রক্ষা করে আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পার ?

চ) সমাজে ধনী ও দরিদ্রের বৈষম্য দূর করতে জাকাত কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে ?

ছ) পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাকে ইমানের অঙ্গ বলা হয়েছে কেন ?

জ) ধর্মীয় অনুশাসন পালনে আন্তরিকতার প্রয়োজন কেন ?

ঝ) দেশপ্রেমের উত্তম আদর্শ ছিলেন মহানবি (স) কথাটি অর্থ বুঝিয়ে লেখ।

ঞ) মহানবি (স) এর আদর্শ অনুসরণে তুমি কীভাবে চাকরদের সাথে ব্যবহার করবে ?

বিজ্ঞান

সুষম খাদ্য গ্রহণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ

হিমন এডওয়ার্ড গমেজ , সিনিয়র শিক্ষক

সেন্ট গ্রেগরী হাইস্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা

১) একটি বার্গারে বিভিন্ন ধরনের খাবার যেমন – গরু ও মুরগির মাংস, টমেটো, লেটুস, পনির, পাউরুটি ইত্যাদি থাকে। তারপরেও খুব বেশি বার্গার খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর কেন ?

উত্তর : একটি বার্গারে বিভিন্ন খাবার যেমন গরুও মুরগির মাংস, টমেটো, লেটুস, পনির, পাউরুটি ইত্যাদি থাকে। তারপরও বার্গার অতিরিক্ত খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। কারণ, বার্গার এক ধরনের জাঙ্ক ফুড। জাঙ্ক ফুড সুস্বাদু হলেও সুষম খাদ্য নয়। জাঙ্ক ফুডে অত্যাধিক চিনি, লবণ, ও চর্বি থাকে যা আমাদের শরীরে খুব সামান্য দরকার হয়। সাধারণত অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড তথা বার্গার গ্রহণে আমাদের শরীরে পুষ্টিহীনতা, অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি বা মোটা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।

২) খাদ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে আমরা নানাভাবে উপকৃত হই। কিন্তুু খাদ্যে রাসায়নিকের ব্যবহার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয় কেন? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : খাদ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে আমরা নানাভাবে উপকৃত হই। কিন্তু খাদ্যে রাসায়নিকের ব্যবহার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। কারণ অনেক অসাধু ব্যবসায়ী খাবার সংরক্ষণের জন্য ফরমালিন, ফল পাকানোর জন্য বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ যেমন— কার্বাইড ব্যবহার করে। ফলে এ সকল ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রিত খাদ্য গ্রহণের ফলে বৃক্ক ও যকৃত অকার্যকর হয়ে যেতে পারে। শরীরের বৃদ্ধি কমে যেতে পারে। অ্যাজমা ও ক্যান্সার হতে পারে।

তাই খাদ্যে রাসায়নিক ব্যবহার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

১. সুষম খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা ৫টি বাক্যে লেখ।

উত্তর : সুষম খাদ্য গ্রহণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সুষম খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা নিম্নরূপ—

১.কর্মক্ষম থাকার জন্য আমাদের সঠিক পরিমাণ পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন যা আমরা সুষম খাদ্য থেকে পেয়ে থাকি।

২.প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ না করলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং সহজেই রোগে আক্রান্ত হয়।

৩.সুষম খাদ্যের অভাবে শরীরের কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়।

৪.অপুষ্টিজনিত কারণে শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।

৫.অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণের ফলে ওজনজনিত সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। আমাদের বয়স ও কাজের ধরণ অনুযায়ী সঠিক পরিমাণে সুষম খাদ্য গ্রহণ করা উচিত।

.সুষম খাদ্যে কয়টি উপাদন থাকে? যারা বেশি পরিশ্রম করে তাদের পরিমিত খাদ্য গ্রহণ প্রয়োজন কেন একটি বাক্যে লেখ। অতিরিক্ত খাবার খাওয়া নিরুত্সাহিত করতে তুমি কী করবে তা তিনটি বাক্যে লেখ।

উত্তর : সুষম খাদ্যে ৬টি উপাদান থাকে।

যারা বেশি পরিশ্রম করে তাদের দেহকে সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম রাখতে, দেহের বৃদ্ধি সাধন ও ক্ষয়পূরণে এবং দেহে তাপ শক্তি জোগাতে পরিমিত খাদ্য গ্রহণ করতে হয়।

অতিরিক্ত খাবার খাওয়া নিরুত্সাহিত করতে আমি নিচে উল্লিখিত কাজ তিনটি করব—

১.অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করব।

২.অতিরিক্ত খাবার খেলে দেহভারী হয়ে যায় সে সম্পর্কে সবাইকে জানাব।

৩.অতিরিক্ত খাবার খেলে শিশুরা খেলাধুলায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে সে সম্পর্কে সবাইকে জানাব।

৩.সুমনা ৬ বছরের শিশু, তার বাবা অধিক পরিশ্রম করে। কর্মক্ষম থাকার জন্য সুমনার বাবার কী প্রয়োজন? কী অনুযায়ী তার খাদ্য গ্রহণ করতে হবে? উক্ত খাদ্যটির প্রয়োজনীয়তা তিনটি বাক্যে লেখ।

উত্তর : কর্মক্ষম থাকার জন্য সুমনার বাবার সঠিক পরিমাণ পুষ্টি উপাদান প্রায়োজন। সুমনার বাবাকে বয়স ও কাজের ধরণ অনুযায়ী সঠিক পরিমাণে সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।

সুষম খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা হলো—

১.শরীর সুস্থ সবল রাখার জন্য সুষম খাদ্যের প্রয়োজন।

২.কর্মক্ষম থাকার জন্য সুষম খাদ্যের প্রয়োজন।

৩.সুষম খাদ্য না খেলে দেহের গঠন, বৃদ্ধি সাধন, ক্ষয়পূরণ, শক্তি উত্পাদন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে।

বাংলা

মো. সুজাউদ দৌলা, সহকারী অধ্যাপক

রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ, ঢাকা

অপেক্ষা

সেলিনা হোসেন

প্রশ্ন-১। রুমার জন্মদিনের গল্পটি কী?

উত্তর: ‘অপেক্ষা’ গল্পে একজন শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার দুই মেয়ে রুমা ও রুবার জন্মদিনের গল্প বর্ণিত হয়েছে।

রুমার জন্মদিনের গল্প: রুমা ও রুবা তাদের বাবা-মায়ের দুই আদরের মেয়ে। দুই মেয়ের জন্মদিন সম্পর্কে রাহেলা বানু ও জসীম মিয়া মজার গল্প বলেন। রুমার জন্মদিনের একটা গল্প আছে। শুনে রুমা বায়না ধরল গল্পটি শোনার জন্য। তখন রাহেলা বানু বললেন যেদিন রুমার জন্ম হলো, সে দিন বাড়ির উঠানের শিউলি গাছটায় অনেক শিউলি ফুল ফুটেছিল, এতো শিউলি ফুল আগে কখনো একসঙ্গে ফোটেনি। আর রাহেলা বানুও কখনো এত ফুল একসঙ্গে দেখেনি। সে ফুলের খুশবু চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল। এটাই রুমার জন্মদিনের গল্প।

মূলত, রুমার যে দিন জন্ম হয়েছিল, সেদিন তাদের উঠানের শিউলি গাছটায় অনেক ফুল ফুটেছিল।

প্রশ্ন-২। রুবার জন্মদিনের গল্পটি কী?

উত্তর: মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ‘অপেক্ষা’ গল্পে দুই বোন রুমা ও রুবার জন্মদিনের চমত্কার গল্প রয়েছে।

রুবার জন্মদিনের গল্প: যেদিন রুবার জন্ম হয়েছিল, সেদিন জসীম মিয়া বাড়ির বাইরের আম গাছটার নিচে বসেছিলেন। হঠাত্ তিনি মাথার উপরে তাকিয়ে দেখলেন যে, গাছটা আমের বোলে ভরে গেছে। এত বোল জসীম মিয়া আগে কখনো দেখেননি। আমের বোলের গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল। এটাই রুবার জন্মদিনের গল্প।

মূলত, যেদিন রুবার জন্ম হয়েছিল, সেদিন তাদের বাড়ির বাইরের আম গাছটা আমের বোলে ভরে গিয়েছিল।

প্রশ্ন-৩। রাহেলা বানু দুমুঠো চাল কলসিতে জমিয়ে রাখে কেন?

উত্তর: রাহেলা বানু দেশকে শত্রুর হাত থেকে মুক্ত করার জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করতেন।

যে কারণে জমিয়ে রাখতেন: রাহেলা বানুর স্বামী জসীম মিয়া মুক্তিযুদ্ধে শহিদ হয়েছেন। তিনি ছিলেন মুক্তিবাহিনীর স্থানীয় সংগঠক। জীবিত থাকা অবস্থায় সহযোদ্ধাদের বলেছিলেন যে, যেকোনো বিপদে বা প্রয়োজনে তারা যেন জসীম মিয়ার বাড়িতে যায়। এ কথা জানত রাহেলা বানু। ফলে সব সময় তিনি কলসিতে দুমুঠো চাল জমিয়ে রাখতেন। রান্নার জন্য রুমা আর রুবা লাকড়ি জমিয়ে রাখত চুলার ধারে। রাতে কোনো মুক্তিযোদ্ধা এলে রাহেলা বানু জমানো চাল রান্না করে তাদের খাওয়ান।

রাহেলা বানু মুক্তিযোদ্ধাদের খাওয়াতে ভালোবাসতেন। এ কারণেই তিনি হাঁড়িতে দুমুঠো চাল জমিয়ে রাখতেন।

প্রশ্ন-৪। লোকজন গোল হয়ে বসে কী করেছিল? তারা কী শুনতে পেল?

উত্তর: লোকজন গোল হয়ে বসে রেডিও শুনছিল। তারা ঢাকা শহরের গণহত্যার কথা শুনতে পেল।

লোকজন গোল হয়ে বসে যা করছিল: রুমা ও রুবার বাবা জসীম মিয়া বাজার থেকে চাল কিনে এনে বাড়ির বারান্দায় ধপাস করে বসে পড়ে। স্ত্রীকে বলে দেশে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। এ কথা শুনে রুমা ও রুবা ঘর থেকে দৌঁড়ে বের হয়ে যায়। তারা দেখে যে, আম গাছের নিচে লোকজন গোল হয়ে বসে রেডিও শুনছে। রেডিওতে তখন বিবিসির খবর চলছিল। লোকজন যা শুনতে পেল: লোকজন আম গাছের নিচে গোল হয়ে বসে রেডিও শুনছিল। বিবিসির সংবাদে তারা ঢাকার গণহত্যার কথা শুনতে পেল। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী রাতের অন্ধকারে ঢাকা শহরে গণহত্যা শুরু করেছে। কিছুদিন আগে তারা বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণে দেশের স্বাধীনতার পূর্বাভাস শুনেছিল। আর আজ তার ফলস্বরূপ গণহত্যার খবর শুনতে পেল।