কেমন হলো সন্দীপ সিংয়ের বায়োপিক ‘সুরমা’

বায়োপিকে ভেসে যাচ্ছে বলিউড। এ সপ্তাহে মুক্তি পেয়েছে হকি খেলোয়াড় সন্দীপ সিংয়ের জীবনভিত্তিক ছবি ‘সুরমা’। মারাত্মক চোট পাওয়ার পরও তাঁর কামব্যাকের কাহিনি চিত্রায়িত হয়েছে এই ছবিতে। অতএব ‘সুরমা’ সত্যি ঘটনার পর্দায় অবতরণ।

যেকোনো খেলোয়াড়ের জীবনকাহিনি সাধারণভাবে দর্শকদের আলোড়িত করে। সমস্ত বাধা, সবরকম কষ্টকে অতিক্রম করে তাদের ফিরে আসার গল্প, তাঁদের আত্মবিশ্বাস উদ্বুদ্ধ করে জনমানসকে। আর এই গল্প সন্দীপ সিং ওরফে ‘ফ্লিকার’ সিংয়ের।

সন্দীপ সিংয়ের ভূমিকায় দিলজিৎ দোসাঞ্জ অসাধারণ। আর এটাই ছবিটার তুরুপের তাস। অভিনেতা স্ক্রিনে থাকলেই আমরা তাঁর অভিনয় দিয়েই গল্পটাকে অনুভব করেছি। ইয়ং প্লেয়ারদের পেটানোর জন্য কোচের বিরাগভাজন হওয়া থেকে হরপ্রীতের প্রেমে পড়া, সবটাই। হরপ্রীতও (তাপসী) হকি প্লেয়ার। সে-ও দেশের হয়ে হকি খেলতে চায়। এদিকে একটা ট্রেনে ঘটা একটি দুর্ঘটনায় সন্দীপ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যান।
তারপরই শুরু হয় তাঁর বেদনাদায়ক যাত্রা, মাঠে ফেরার লড়াই।

এই চ্যালেঞ্জই তৈরি করে ‘সুরমা’র চিত্রনাট্য। সন্দীপের ঘুরে দাঁড়ানোর কাহিনিই তাঁকে খবরের শিরোনামে নিয়ে আসে। প্রত্যেকটি ওঠাপড়ার ঘটনা ডকুমেন্টেড হয়। আর এই দৃশ্যগুলোয় বাড়াবাড়ি না থাকাটাই ছবির নাটকীয়তাকে স্বকীয় করে রাখে। মেলোড্রামা হওয়া থেকে আটকায়।

সন্দীপ সাধারণ একজন ছেলে, যে ভারতের হকি জার্সি পরার স্বপ্ন দেখে, দাদাকে প্রতিদিন খেলায় সাহায্য করে আবার সুন্দরী মেয়ের সঙ্গে ফ্লার্টও করে। তবে একটা ঘটনা এবং সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো তাঁকে ছবির হিরোতে পরিণত করে। ঘাম ঝরিয়ে খেলার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা, একটা ভাংড়া গান, আর এই হকির ছবি দেখতে গিয়ে দর্শকের চোখে জল আসবে।

একটা ভালো ছবি আমাদের আনন্দিত করে, সঙ্গে দৃঢ় হওয়ার গেমপ্ল্যানও দেয়। হকিতে সেই পর্যাপ্ত উত্তেজনা আছে যা ছবির সিনেম্যাটিক দৃষ্টিকোণকে টানটান রেখেছে। যদিও আমরা বুঝতে পারিনি দল কী করে জিতল? শুধু কঠোর সংগ্রাম দেখা গেল ছবিজুড়ে। সেদিক থেকে দেখতে গেলে ছবিটা ব্যক্তিগত টানাপড়েন দেখাতে গিয়ে প্রফেশনাল দিকটা এড়িয়ে গিয়েছে।

তবে আবারও দিলজিৎ ছবিতে যেন পাশের বাড়ির ছেলে। ভাইয়ের চরিত্রে নজর কেড়েছেন অঙ্গদ বেদী। নিজের দমে ভারতীয় হকি দলে জায়গা করতে চায়। কোচ হিসেবে হুসেন অনবদ্য। দোসাঞ্জের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অভিনয় করেছেন তাপসী পান্নু।