অবশেষে বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক প্রধান কোচ নিষিদ্ধ হলেন হাথুরুসিংহে !

আর দশ ঘণ্টা পরই শিষ্যরা মাঠে নামবেন মহাগুরুত্বপূর্ণ এক সিরিজে (শাস্তি ঘোষণার সময়ানুযায়ী)। বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক প্রধান কোচ ও বর্তমান শ্রীলঙ্কা দলের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে হয়ত গল টেস্টে ভালো করার ছক আঁকছিলেন।

এমন সময়ই পেলেন দুঃসংবাদ। উইন্ডিজের মাটিতে অ্যান্টিগা টেস্টে বল টেম্পারিং এবং এরপর মাঠে নামতে আপত্তি জানানোয় নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে তাকে। আইসিসির এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে শ্রীলঙ্কার মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট সিরিজের দুটি ম্যাচেই।

হাথুরুসিংহে ও চান্দিমালের পাশাপাশি একই পরিণতি বরণ করে নিতে হয়েছে দলের ম্যানেজারকেও। ছবি: এএফপি
হাথুরুসিংহের এই পরিণতি বরণ করে নিতে হয়েছে শ্রীলঙ্কার টেস্ট অধিনায়ক দীনেশ চান্দিমাল ও ম্যানেজার আসাঙ্কা গুরুসিনহাকেও। ফলে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হোম সিরিজে দুটি টেস্ট ম্যাচের কোনোটিতেই দলের সাথে উপস্থিত থাকতে পারবেন না তারা।

এর আগে সেন্ট লুসিয়া টেস্ট সমাপ্তির পর আইসিসির ২.৩.১ ধারা অনুযায়ী, ক্রিকেটের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ আচরণের জন্য তাদেরকে অভিযুক্ত করা হয়। ঐ টেস্টের দ্বিতীয় দিন বল টেম্পারিং করার বিষয়টি সামনে আসে তৃতীয় দিন খেলা শুরুর সময়।

অভিযোগের প্রতিবাদ জানিয়ে শ্রীলঙ্কা দল মাঠে নামতে অসম্মতি জানায়। অনেক জলঘোলার পর দুই ঘণ্টা দেরিতে শুরু হয় দিনের খেলা। শ্রীলঙ্কার এমন আচরণ ছিল ক্রিকেটের ‘স্পিরিট অফ গেম’র সাথে বেমানান।

সেন্ট লুসিয়া টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে আম্পায়াররা ফুটেজ দেখে বল টেম্পারিং সম্পর্কে জানতে পারার পর তৃতীয় দিনের শুরুতে বল পাল্টানোর তথা নতুন বল নামানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তবে এই গুরুতর ব্যাপারটি লঙ্কানরা জানতে পারেন তৃতীয় দিন মাঠে নামার নির্ধারিত সময়ের মিনিট দশেক আগে।

দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষদিকে গড়ালে একটি উইকেটের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল সফরকারী শ্রীলঙ্কা। এমন সময়ে বল টেম্পারিং হয়েছে- এই খবর পেলে দুই অন-ফিল্ড আম্পায়ার আলিম দার ও ইয়ান গোল্ড এবং টিভি আম্পায়ার রিচার্ড ক্যাটেলবরো বল টেম্পারিং সম্পর্কে অবগত হন। ব্রডকাস্টারের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় ফুটেজ সংগ্রহের পর পরের দিন সকালে তা যাচাই করেন আম্পায়াররা। এ সময় দেখা যায়, পকেটে হাত দিয়ে লজেন্স জাতীয় কিছু বের করে চান্দিমাল মুখে পুরেন এবং এরপর লালা দিয়ে ভিজিয়ে বলটিকে বোলার লাহিরু কুমারার কাছে হস্তান্তর করেন।

এই ফুটেজ দেখে আম্পায়াররা বল টেম্পারিংয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত হন। এরই ধারাবাহিকতায় তৃতীয় দিনের খেলা শুরুর আগে তারা শ্রীলঙ্কাকে পাঁচ রান জরিমানা করেন। এ সময় ‘প্রমাণ ছাড়া অভিযোগ আনয়ন’ এর দাবি এনে খেলা বয়কট করে লঙ্কান দল। দীর্ঘ প্রায় দুই ঘণ্টা পর তারা মাঠে প্রবেশ করলে অবশেষে ঐ দিনের খেলা শুরু হয়।

অবশ্য এতেও জড়িয়ে ছিল নাটকীয়তা। শ্রীলঙ্কা মাঠে না নামার অনড় অবস্থানে থাকলে ম্যাচ রেফারি জাভাগাল শ্রীনাথ সকাল সাড়ে এগারোটার মধ্যে মাঠে নেমে খেলা শুরুর নির্দেশ দেন, অন্যথায় জানানো হয়- এই ম্যাচ শ্রীলঙ্কা উইথড্র করেছে বলে ধরে নেওয়া হবে। শেষপর্যন্ত শ্রীলঙ্কা বেঁধে দেওয়া সময়ের শেষমুহূর্তে মাঠে নামে।