মাত্র এক কারণেই স্বপ্ন শেষ বেলজিয়ামের

মাত্র এক কারণেই- বল পজিশন ম্যাচের ফলাফলে তেমন কোনো প্রভাব ফেলে না। এবারের বিশ্বকাপে বারবারই প্রমাণ হয়েছে। আজও আরেকবার প্রমাণ হলো এটা । কার্যকর আক্রমণই আসল কথা।বল পজিশনে বেলজিয়াম যেখানে ৬৪ শতাংশ, ফ্রান্স সেখানে মাত্র ৩৬। কিন্তু হলে কি হবে, ম্যাচ শেষে হেসেছে ফ্রান্সই। বল পজিশনে অনেক পিছিয়ে থেকেও বেলজিয়ামকে ০-১ গোলে হারিয়ে ফাইনাল ওঠে গেছে দিদিয়ের দেশমের দল।

একটি মাত্র কর্নারই ব্যবধান গড়ে দিয়েছে, ম্যাচের ভাগ্য পাল্টে দিয়েছে। ৫১তম মিনিটে কর্নার থেকে ফ্রান্সকে লিড এনে দেন উমতিতি। এই ব্যবধান ধরে রেখেই খেলা শেষ করে ফ্রান্স। শেষ দিকে বারবার আক্রমণ করেছে বেলজিয়াম। কিন্তু ভাগ্য সহায় ছিল না তাদের। আক্রমণভাগে রোমেলো লুকাকুর নিস্ক্রিয়তাও মূল্য দিতে হয় বেলজিয়ামকে। ফ্রান্সের গোলমুখে পুরো ৯০ মিনিটে একটি শটও নিতে পারেননি লুকাকু। তবে দুর্দান্ত খেলেছেন এডেন হ্যাজার্ড। তাকে মনে রাখবে ফুটবলপ্রেমীরা।

উত্তেজনার প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য সমতায়। গোল না হলেও আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে দারুণ জমে ওঠে প্রথমার্ধের খেলা। এ সময়ে বল পজিশন ৬০ শতাংশ বেলজিয়ামের দখলে থাকলেও আক্রমণে এগিয়ে ছিল ফ্রান্স। ফ্রান্স তিনটি শট নেয় বেলজিয়ামের গোলমুখে। অন্য দিকে বেলজিয়াম গোটা দুয়েক শট নেয় ফ্রান্সের গোল সীমানায়। দুর্দান্ত খেলেছেন দুই দলের গোল রক্ষক। বলতে গেলে প্রথম ৪৫ মিনিটে নায়ক তারাই।

১৮তম মিনিটে মাতুউদির জোরালো শট সেভ করে দেন বেলজিয়াম গোল কিপার কোর্তোয়া। পরের মিনিটে দুর্দান্ত এক আক্রমণে ফ্রান্সের রক্ষণভাগ কাঁপিয়ে দেয় বেলজিয়াম। ভাগ্য নিতান্ত ভালো ছিল ফরাসীদের। এডেন হ্যাজার্ডের বাঁ পায়ের দুর্দান্ত শট কর্নারের বিনিময়ে বিপদমুক্ত করেন হুগো লরিস। ২২তম মিনিটে আরেকবার বেঁচে যায় ফ্রান্স। কর্নার থেকে পাওয়া বলে দারুণ শট নিয়েছিলেন অ্যাল্ডারওইরেল্ড। এবারও দারুণ দৃঢ়তায় বল বিপদমুক্ত করেন লরিস।

দুই আক্রমণ থেকে বেঁচে ঘুরে দারুণভাবে দাঁড়ায় ফ্রান্স। পরপর বেশ কয়েকটি দুর্দান্ত আক্রমণ শানায় তারা। ৩১তম মিনিটে জিরুড ঠিকঠাক হেড নিতে পারলে এগিয়ে যেতে পারত ফ্রান্স। ৩৪ মিনিটে এমবাপে দারুণ একটা বল দিয়েছিলেন জিরুডকে। কিন্তু সুযোগটা এবারও কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। বলে টোকা মারতে পারলেই গোল পেতে পারত ফ্রান্স। ৩৯মতম মিনিটে সবচেয়ে ভালো সুযোগটি পেয়েছিল ফ্রান্স। কিন্তু এ যাত্রায়ও বেঁচে যায় বেলজিয়াম। এমবাপের কাছ থেকে বল পেয়ে শট নিয়েছিলেন কাভার্ড। কিন্তু গোলকিপারের দৃঢ়তায় এবারও বেঁচে যায় বেলজিয়াম।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও ফ্রান্স সেই তাদের রুদ্রমূর্তি ধরে রাখে। ৫২তম মিনিটে বেলজিয়ামকে হতাশায় ডুবিয়ে ১-০তে এগিয়ে যায় সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। মাপা কর্নার থেকে মিলিয়ন ডলারের গোলটি করেন স্যামুয়েল উমতিতি।

৬৫তম মিনিটে আক্রমণে যায় বেলজিয়াম। কিন্তু ফেলানির হেড বারের অল্প বাইরে দিয়ে চলে যায়। পিছিয়ে পড়া বেলজিয়াম গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। বারবার আক্রমণে যায় তারা। অন্যদিকে ব্যবধান ধরে রাখার জন্য রক্ষনভাগকে আরও বেশি শক্তিশালী করে রাখে ফ্রান্স। আস্তে আস্তে ফ্রান্সের অভিষ্ট লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে ম্যাচ। ৭০ মিনিট, ৮০, ৮৫ মিনিট পেরিয়ে যায় সেই ১-০ ব্যবধানেই। শেষদিকে একের পর এক আক্রমণে করেও গোলের দেখা পাচ্ছিলো না বেলজিয়াম। শেষমেশ ১-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ফ্রান্স।