জাপান জিতলে, ইচ্ছে করে হারবে ইংল্যান্ড-বেলজিয়াম!

ইংলিশ থ্রি লায়ন্স এবং বেলজিয়ান রেড ডেভিলসরা নিজেদের শেষ ম্যাচে বৃহস্পতিবার একে অপরের মুখোমুখি হবে গ্রুপ ‘জি’র শীর্ষস্থান দখল করে প্রথম পর্ব শেষ করার লক্ষ্যে। কালিনিনগ্রাদে এই দুই দল মুখোমুখি হবে। কিন্তু অবাক করা ব্যাপার হলো, এর আগের ম্যাচটিতে গ্রুপ ‘এইচ’ থেকে জাপান যদি জয়ী হয়ে নিজেদের গ্রুপে শীর্ষস্থান নিয়ে নেয় তাহলে ইংল্যান্ড এবং বেলজিয়ামের এই লড়াই জয়ী হওয়ার পরিবর্তে পরাজিত হয়ে দ্বিতীয় স্থান লাভ করাই হবে মূল ব্যাপার। কারণ ‘এইচ’ গ্রুপের শীর্ষ দল এবং ‘জি’ গ্রুপের দ্বিতীয় স্থানে থাকা দল মুখোমুখি হবে শেষ ১৬ বা দ্বিতীয় রাউন্ডের লড়াইয়ে।

এশিয়ার জাপান ইংলিশ থ্রি লায়ন্স এবং বেলজিয়ান রেড ডেভিলসদের জন্য সহজ প্রতিপক্ষ হতে পারে এই চিন্তা থেকেই দুটি দলের এই অদ্ভুত চিন্তা কাজ করছে। যদিও জাপানকে নিজ গ্রুপ থেকে বাদ পরা পোল্যান্ডকে হারালেই চলবে। কিন্তু পোল্যান্ডকে গ্রুপ ‘এইচ’ থেকে ফেভারিট ভাবা হয়েছিল কিন্তু পরপর তিন ম্যাচে পরাজিত হয়ে পোল্যান্ড বিশেষজ্ঞদের চিন্তা এবং মাঠের খেলার ফলাফলের মধ্যে যে পার্থক্য সেটাই প্রমাণ করেছে। জাপানের বিপক্ষে পোল্যান্ড একটি শেষ মরণ কামড় দিতে চাইবে সম্মান নিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপ শেষ করার ইচ্ছা নিয়ে। সেটা না হলে জাপানকেই জয়ী দল ভাবা হচ্ছে এবং ইংল্যান্ড ও বেলজিয়ামের ইচ্ছাও তাহলে পূর্ণতা পাওয়ার দিকে যাবে।

বেলজিয়ান কোচ ইতোমধ্যেই ইংল্যান্ড লড়াইকে সামনে রেখে তার দলের সেরা তিন তারকা রোমেলো লুকাকু, এডেন হ্যাজার্ড, ড্রাইস মার্টেনসকে বিশ্রাম দেয়ার চিন্তা-ভাবনা করছেন বলে জানিয়েছেন। লুকাকু তাদের শেষ ম্যাচে যেখানে রেড ডেভিলসরা ৫-২ গোলে বিধ্বস্ত করেছিল পানামাকে সেই ম্যাচ থেকে হাঁটুতে সামান্য ব্যথা নিয়ে ম্যাচ শেষ করে এবং এডেন হ্যাজার্ডের কাফ মাসলে কিছুটা সমস্যা রয়েছে এবং মাটেনসের হাঁটুতেও ছোট একটু সমস্যা রয়েছে; কিন্তু এই সব সমস্যা এতটা গুরুতর হয়নি যে ইংল্যান্ডের মতো বড় দলের বিপক্ষে দলের সেরা তারকাদের বিশ্রাম দিতে হবে।

বেলজিয়ামের কোচ জানান, কলম্বিয়া যদি গ্রুপ ‘এইচ’ থেকে শীর্ষস্থান নেয় তাহলে এই বেলজিয়ান কোচ নিজ দলের সেরা খেলোয়াড়দের সামান্য ইনজুরি নিয়ে খেলতে নামাতে পারেন ইংলিশদের বিপক্ষে; কিন্তু সেটা খুবই সম্ভাবনার ওপর নির্ভর করা চিন্তা, কারণ গ্রুপ ‘এইচ’ থেকে জাপান এগিয়ে আছে এবং মার্টিনেজ মনে করেন ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেটও নিজেদের সেরা অস্ত্র, স্ট্রাইকার ও অধিনায়ক হ্যারি কেনকে বেলজিয়ামের বিপক্ষে বিশ্রামে রাখতে পারেন।

এসব হিসাব-নিকাশকে বাইরে রাখলে বেলজিয়ানরা গ্রুপ ‘জি’ থেকে তাদের সেরা ফর্মেই আছে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে তিউনিসিয়া এবং পানামাকে ৩-০ এবং ৫-২ গোলে হারিয়েছে তিউনিসিয়ার বিপক্ষে কিছুটা এলোমেলো থাকলেও ইংল্যান্ড তাদের দ্বিতীয় ম্যাচেও প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলতে আসা পানামা বা লস ক্যানালরসদেরকে ৬-১ গোলে হারায়। তিউনিসিয়ার বিপক্ষে দু’টি গোল এবং পানামার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক থ্রি লায়ন্সদের সেরা তারকা হ্যারি কেনকে আত্মবিশ্বাসের দিক দিয়ে বেলজিয়ামের বিপক্ষে এগিয়ে রাখবে।

ডেলে আলির থাই ইনজুরি ছাড়া ইংল্যান্ড ক্যাম্পে কোনো বড় ধরনের ইনজুরি সমস্যা নেই। রুবেন লফটাস-চেক পানামার বিপক্ষে আলীর স্থানে খেলেছেন এবং রেড ডেভিলস খ্যাত বেলজিয়ানদের বিপক্ষেও টটেনহামের এই আক্রমণভাগের ফুটবলারকে বিশ্রামে রাখতে পারেন কোচ সাউথগেট এবং লফটাস-চেক আরো একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন। রাহিম স্টার্লিং এর আগের দু’টি ম্যাচ খেললেও হ্যারি কেনের সাথে তাকেও বেলজিয়ানদের বিপক্ষে বিশ্রাম দেয়া হতে পারে। গ্যারি কাহিল এবং এরিক ডায়ার যোগ হতে পারেন আক্রমণভাগ ও মাঝমাঠকে শক্তিশালী করতে।

কোচ সাউথগেট দলকে ৩-৫-২ ফরমেশনে খেলাবেন। আগেও কোচ মার্টিনেজ জানিয়ে রেখেছেন ইংলিশদের বিপক্ষে তার সেরা তিন তারকা লুকাকু, হ্যাজার্ড এবং মার্টেনসকে বিশ্রামে রাখবেন। তাদের স্থানে একাদশে আসতে পারেন থরগান হ্যাজার্ড এবং মিচি বেতসুয়াই। মারাওনি ফেলানি এবং মোসা ডেম্বালে এই ম্যাচে বেলজিয়ানদের আক্রমণভাগে আসতে পারেন। কোচ মার্টিনেজ দলকে ৩-৪-২-১ ফরমেশনে খেলাবেন। ইংল্যান্ড এগিয়ে আছে বেলজিয়ামের বিপক্ষে পূর্রবর্তী ছয় লড়াইয়ে ছয় ম্যাচে তারা তিনটিতে জয় পেয়েছে, দু’টি ম্যাচ ড্র হয়েছে এবং একটি ম্যাচে পরাজিত হয়েছে থ্রি লায়ন্সরা।