সেই ‘ঈগল’ চিহ্ন নিয়ে তোলপাড়

সেই ‘ঈগল’ চিহ্ন- এবার জাতিগত বৈরিতার বিতর্কে জড়ালেন সুইজারল্যান্ডের দুই ফুটবলার। তারা হলেন- সাকা ও সাকিরি। কি করেছেন তারা? সার্বিয়ার-সুইজারল্যান্ড ম্যাচ জয়ের পর এই দুই সুইস ফুটবলার যে ‘ঈগল’ চিহ্ন দেখিয়েছেন তাতেই খেপেছে সার্বিয়া। এমনকি এ বিষয়টি তদন্ত করতেও শুরু করেছে ফিফা।

সাকা ও সাকিরি দু’জনেই আলবেনিয়ান বংশোদ্ভূত। অভিযোগ, তারা ইচ্ছাকৃতভাবেই বিজয় উল্লাস দেখাতে গিয়ে আলবেনিয়ার জাতীয় পতাকায় থাকা ঈগলের চিহ্নকে হাতের অঙ্গভঙ্গিতে প্রকাশ করেছেন। আর তাতেই ক্ষুব্ধ সার্বিয়া। কারণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরেই কমিউনিস্ট সোভিয়েত শিবিরে থাকা যুগোশ্লোভিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল আলবেনিয়া। শীতল যুদ্ধের আবহে সেই সম্পর্ক ক্রমেই জটিল হয়েছে।

গত ২২ জুন সার্বিয়া বনাম সুইজারল্যান্ডের ম্যাচ ছিল কালিনিনগ্রাদে। সুইসরা ২-১ গোলে সার্বিয়ানদের পরাজিত করে। আর সেই ম্যাচে গোল করেই দুই সুইস ফুটবলার ঈগল চিহ্ন দেখান। সার্বিয়ার অভিযোগ, অযথা দর্শকদের ভাবাবেগে আঘাত করেছেন দুই আলবেনীয় বংশোদ্ভূত সুইস ফুটবলার।

এদিকে বিতর্ক আরও একটি বিষয়ে। সেই ম্যাচেই সুইস ফুটবলার সাকিরি যে বুট পরেছিলেন তার রং সুইজারল্যান্ড ও কসোভোর পতাকায় ছিল। ম্যাচের পরেই সার্বিয়া ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ফিফার কাছে অভিযোগ দায়ের করে।

সেখানে বলা হয়েছে, দুই সুইস খেলোয়াড় ইচ্ছে করেই সার্বিয়ানদের অপমান করেছেন। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে ফিফার তদন্তকারী দলটি। ২০০৮ সালে সার্বিয়া থেকে ছিন্ন হয়েছে কসোভো। পরে তারা ফিফা তালিকাভুক্ত হয়।

নব্বই দশকের শেষে এসে তীব্র জাতিগত সংঘর্ষ রক্তাক্ত হয় যুগোশ্লাভিয়া। এর জেরে টুকরো হয় সেই দেশ। তৈরি হয় সার্বিয়া-মন্টেনগ্রো, ক্রোয়েশিয়া, স্লোভেনিয়া, ম্যাসিডোনিয়া, বসনিয়া-হারজেগোভিনার মতো রাষ্ট্র। একাধিক রাষ্ট্রে ভেঙে গেলেও পূর্বতন যুগোশ্লোভিয়ার অভ্যন্তরে যে জাতিগত সমস্যা ছিল সেটা থেকে গিয়েছে। এর পাশাপাশি আলবেনিয়ার সঙ্গে সার্বিয়ার সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা হলেও তাতে তেমন কিছু অগ্রগতি হয়নি।

আর সেই রেশ ধরেই কি দুই আলবেনিয়ান বংশোদ্ভূত সুইস ফুটবলার সার্বিয়ানদের অপমান করেছেন? উঠছে এমন প্রশ্ন। কেন তারা আলবেনিয়ার পতাকায় থাকা ঈগল চিহ্ন দেখালেন সেটা জানতে চায় ফিফা।