শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের পথেই এগুচ্ছে বিএনপি। বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যেকোনো পরিস্থিতিতেই নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছে দলটি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর লন্ডন থেকে নির্বাচনের বার্তা নিয়েই এসেছেন, মির্জা ফখরুল বিষয়টি গোপন রাখলেও তাঁর ঘনিষ্ঠদের নির্বাচনের ব্যাপারে ‘সবুজ সংকেত’ পাওয়ার কথা বলেছেন। শুধু মির্জা ফখরুল নয়, বিএনপির তিন নেতা ভারতে গিয়ে আগামী নির্বাচনে বিএনপি অবশ্যই অংশগ্রহণ করবে বলে নিশ্চিত করে এসেছেন। বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ আজ মার্কিন দূতাবাসের দুজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ‘প্রতিকূল পরিবেশেও নির্বাচনে অংশগ্রহণে’র সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।
বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করবে লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। বিএনপির একাধিক শীর্ষ নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুধু ২০ দলীয় জোট নয়, একটি সর্বদলীয় নির্বাচনী প্লাটফরম করে নির্বাচনে যেতে চায় বিএনপি। আর এরকম একটি নির্বাচনী মোর্চা গড়তে বিএনপি মহাসচিব ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের সাথে সংলাপ শুরু করেছেন। বিএনপি সূত্রগুলো বলছে মূলত: ৫ কারণে বিএনপি নির্বাচনে যেতে বদ্ধপরিকর। এই কারণগুলো হলো:
১. বিএনপি মনে করছে, সারাদেশে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। নানা কারণে আওয়ামী লিগের উপর জনগণ ত্যক্ত-বিরক্ত। ভোটের সুযোগ পেলে তারা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে। বিএনপি মনে করছে, শত প্রতিকূলতার মধ্যেও নির্বাচনে অংশ নিলে, বিএনপির জয়ের সম্ভাবনাই বেশি।
২. আওয়ামী লীগ যেভাবে নির্বাচনে জয়ের স্বপ্ন দেখছে, তা অলীক বলে মনে করছে বিএনপি। বিএনপির মতে, সারাদেশে একযোগে হলে খুলনার মতো নির্বাচন বা কারচুপি করা আওয়ামী লীগের জন্যে কঠিন হয়ে যাবে। এরকম কারচুপি নতুন আন্দোলনের ভিত্তি তৈরি করবে।
৩. ভারতসহ আন্তর্জাতিক মহল বিএনপিতে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য চাপ দিচ্ছে। উন্নয়ন সহযোগীরা বিএনপিকে আশ্বস্ত করেছে যে, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার পর যদি কোনো অনিয়ম হয়, তাহলে তারা সেটি দেখবে।
৪। বিএনপি মনে করছে, এই মুহূর্তে আন্দোলন করার মতো বাস্তব অবস্থা দেশে নেই। আন্দোলন করে নির্বাচন বর্জন করলে, নির্বাচন প্রতিহত করা সম্ভব হবে না। এর ফলে বিএনপির অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।
৫. বিএনপির বিশ্বাস, বেগম জিয়ার মুক্তি ইস্যুটি এবার নির্বাচনে বিএনপির জন্য একটি প্লাস পয়েন্ট হবে। বেগম জিয়ার প্রতি মানুষের সহানুভূতি ভোটে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এই আবেগ বিএনপির পক্ষে নাটকীয় ফলাফল আনতে পারে।
বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করলেও এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে বিএনপি আরও কিছুটা সময় নেবে।