মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত সকল প্রবাসীদের বিশেষ বিজ্ঞপ্তি নতুন পাসপোর্ট না থাকায় ইমিগ্রেশন ফিঙ্গারপ্রিন্ট করতে পারতেছেন না এমন কেউ কি আছেন?

যাদের পাসপোর্ট এই অবস্থায় আছে তারা যোগাযোগ করুন।

ঢাকায় সাদা পাসপোর্টের সংকটের কারণে পাসপোর্ট প্রিন্ট করতে পারছে না। সরকারের পরিকল্পনা ছিল জুন থেকে ১০ বছর মেয়াদী চিপ যুক্ত ইলেকট্রিক পাসপোর্ট দিবে সেই জন্য সাদা পাসপোর্ট আমদানি বন্ধ ছিল কিন্তু সেই সারভার রেডি না হওয়ায় ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট এখন করা যাচ্ছে না।

তাই হঠাৎ এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।
তাই যারা ইমিগ্রেশন করবেন তারা কোন লিংক ধরে ঘুষ দিয়ে দ্রুত পাসপোর্ট করিয়ে নিয়ে আসেন নয়ত আগামী ২ মাসেও পাসপোর্ট পাবেন না।

পাসপোর্টের কারণে ইমিগ্রেশন করতে পারছেন না শুধু তারা যোগাযোগ করুন- 01123343862 whatsapp

 

আরও পড়ুন…

ডিউটি শেষে ক্লান্ত হয়ে যখন দরজার পাশে দাঁড়াই, তখন ভাবি, এই বুঝি বউ এসে এলোমেলো চুলগুলো কানের পাশে গুজতে গুজতে দরজা খুলে অভিবাদন করে ঘরে যাবার আহবান করছে।

দুই ছেলে বাবার ফিরে আসার আনন্দে খেলনা গুলো ছুড়ে ফেলে দুই পাশ থেকে জড়িয়ে ধরে আহ্লাদিত হয়ে তাদের প্রিয় চকোলেট কিংবা চিপস খুঁজছে।আমি দুই ছেলেকে বাহুতে চেপে পাশের সোফায় বসে তাদের সাথে খুনসুটিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। আমার স্ত্রী সামনে এসে দাঁড়িয়ে, আমার হাতে তোয়ালে ধরিয়ে দিয়ে সন্তানদের শাসিয়ে ফ্রেশ হবার জন্য অনুরোধ করছে। মা এসে তার বউমাকে বকা দিয়ে বলছে, আহা! বউমা বাবা তার ছেলেদের সাথে একটু খেলুক না। পরক্ষণে ভাবি, না আমি তো প্রবাসী!!

নিজেই দরজা খুলে ঘর্মাক্ত পোশাক নিয়েই খাটে লম্বা হয়ে শুয়ে ফোনটা চার্জে কানেকশন দিয়ে ফেসবুকিং করতে করতে ঘন্টাখানিক পার করে দেই। বউ ফোন দিয়ে জানতে চায় খেয়েছো কি? বলি না এখনই ফ্রেশ হব, রান্না করব তারপর খাব। বউ অভিমান করে বলে, এক্ষুনি যাও গোসল করে খাওয়া দাওয়া সেরে আমাকে কল দিও। ফোনটা রেখে অনিচ্ছাসত্ত্বেও গোসল করে রান্না ঘরে গিয়ে কোনরকম রান্না করে খেতে বসে মনে হয় …

মা আমার জন্য খাবার তৈরি করে অপেক্ষা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে বসে আছে। টেবিলে সাজানো আমার সব প্রিয় খাবারগুলো একে একে মা সব আমার প্লেটে তুলে দিচ্ছেন। আমি বারবার মাকে বাধা দিয়ে বলছি এত খেতে পারব না। আমি সব খেয়ে ফেললে আপনারা খাবেন কি? মা শাসন করে বলছে, আমাদের কথা তোমার চিন্তা করতে হবে না। আমরা সারাদিন বাসায় থাকি আর তুমি তো আমাদের জন্য খেটে মরো। পাশ থেকে বাবা এসে বলছে, খা বাবা খা। তোর মা তোর জন্য কষ্ট করে রান্না করেছে। ছেলে দুটি তাদের পড়া রেখে দৌড়ে এসে আমার দুই পাশে খালি চেয়ারে বসে বলছে, দাদী আমরাও আব্বার সাথে ভাত খাব। বউ আড়ালে দাঁড়িয়ে ছিল ছেলেদের দেখে এগিয়ে এসে বলছে, আসো বাবারা আমি তোমাদের খাইয়ে দেই। ছেলেরা আহ্লাদিত করে বলছে না মা আমরা আব্বুর সাথেই খাব। হঠাৎ মনে পড়ে কি ভাবছি আবোলতাবোল আমি তো প্রবাসী!! আমার কপালে কি এত সুখ আছে? আমার মা তো আকাশের তারা হয়ে আছে।

নিজের হাতে নিজে খাবার তুলে বিষণ্ণবদনে খাবার খেতে শুরু করি।

বিছানায় এসে ভাবি এই বুঝি বউ বিছানা গুছিয়ে দিচ্ছে আর ছেলেরা আমার জায়গা দখল করে শুয়ে আছে। দুই ভাইয়ের যুদ্ধ লেগে গেল আমার পাশে শোবার জন্য। বাধ্য হয়ে দুজনকেই বুকে নিয়ে শুয়ে পড়লাম।কিন্তু না এগুলো শুধুই আমার কল্পনা আমি তো প্রবাসী!

নিজের বিছানা নিজেই গুছিয়ে কোনরকমেই মাথা গুজে শুয়ে থাকি। অনেকসময় তো এলোমেলো বিছানা আর তেলছিটে বালিশের কভারে মাথা রেখে শুয়ে থাকি। অসুস্থতা মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী। আমিও মাঝেমধ্যে অসুস্থতায় পড়ি। অসুস্থ শরীর নিয়ে বিছানার এপাশওপাশ করি আর ভাবি এই বুঝি মা আমার পাশে বসে মাথায় জলপট্টি দিচ্ছে আর আদুরে গলায় বকুনি দিচ্ছে। সারারাত তার চোখে ঘুম নেই। যেন আমি অসুস্থ নই সে নিজেই অসুস্থ। তার অস্তিরতা দেখে আমি উদ্বিগ্ন হই। মনে মনে আল্লাহকে বলি আল্লাহ মায়ের জন্য হলেও আমাকে আর অসুস্থ কর না। পরক্ষনেই মনে হয় আমি ভুলে যাই কি করে? আমি তো প্রবাসী!!

এগুলো এখন শুধুই আমার কল্পনা। সুখী হবার ব্যর্থ চেষ্টা। অসুস্থ শরীর নিয়ে একাকী রুমে কাতরাতে থাকি। কেউ নেই আমার পাশে। আমার মত প্রত্যেকটা প্রবাসীই একাকী জীবনযাপন করে। মাঝেমাঝে তারা কল্পনা করে তারা একাকী নয়, বর্তমান জীবন নিয়ে তারা সুখী। কিন্তু এই সুখ তাদের একাকীত্ব দূর করতে পারে না। বাড়ি ফেরার অধীর আগ্রহে দিনযাপন করে তারা।