শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) ভোর ৬টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাঁচ কেজির প্রতি পাল্লা মুলা ১০০ টাকা, শালগম ১৩০, শিম ১৭০, পাতা পেঁয়াজ ১০০ টাকা, ধুন্দল ১৫০, করলা ১৮০-২০০, কাঁচা টমেটো ১৫০, পাকা টমেটো ৫০০ – ৫৩০, বরবটি ২৪০, বেগুন ১৫০-২০০, ধনিয়া পাতা ৩৫০, চিচিঙ্গা ১৫০, পটল ১২০, আলু সাদা ১১০, লাল ১২০, নতুন আলু ২৫০, গাজর ২৫০, ঢেঁড়স ১৬০ কাঁচামরিচ ১৩০ টাকা। আরও দেখা গেছে, লতি পাল্লা প্রতি (৫ কেজি) ২২০ টাকা, জলপাই ১০০, বাঁধা কপি ৩০ টাকা পিস, লেবু এক থেকে আড়াই টাকা প্রতি পিস। মাঝারি সাইজের ফুলকপি ১২ – ১৫ টাকা পিস ও বড় সাইজ ২০ টাকা, কাঁচা কলা ২০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর বিভিন্ন ক্ষুদ্র সবজি ব্যবসায়ীরা কারওয়ান বাজার থেকে সংগ্রহ করেন প্রায় সব ধরনের সবজি। পাল্লা দরে বিক্রি হয় সব ধরনের সবজি। কারওয়ান বাজার থেকে সংগ্রহ করা এসব সবজি খুচরা বাজারে বিক্রি হয় পাইকারির চেয়েও অনেক বেশি দামে।
পাতা পেঁয়াজ বিক্রেতা আব্দুল আজিজ বলেন, বাজার খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। পাতা পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ২১ টাকা কিনেছে কিন্তু বিক্রি করতে হচ্ছে ১৯ থেকে ২০ টাকা। গতকাল বৃহস্পতিবার ১৭ টাকা কেজি কিনে বিক্রি করতে হয়েছে ১৫ টাকা। অন্যান্য শীতের সময় যে পরিমাণ চাহিদা থাকে এবার চাহিদা তেমন নেই, তাই বিক্রিও কম।
ঢেঁড়স বিক্রেতা আব্দুল বারেক বলেন, আমি সব সময় ঢেঁড়স নিয়ে আসি। আমি প্রায় ৩০০ কেজি ঢেঁড়স নিয়ে এসেছিলাম যার মধ্যে ৫০ থেকে ৬০ কেজির মতো আছে । ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা পাল্লা ধরে বিক্রি করছি দাম বেশ কিছুদিন ধরে স্থিতিশীল রয়েছে। পাইকারি বাজারে দামের খুব একটা কমবেশি হয় না দু-এক টাকা ওঠানামা করে।
বেগুন বিক্রেতা সোহাগ বলেন, বেগুনের চাহিদা আগের চেয়ে প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। সবাই বলাবলি করছে বেগুনে নাকি ক্যানসার এমন কথা ছড়িয়ে পড়ার পর বেগুনের চাহিদা প্রায় তলানিতে। আগের চেয়ে অনেক কম চাহিদা, তেমন ব্যবসা নেই। খুব একটা বেচাকেনা হচ্ছে না। আগে যেখানে ৫০০ থেকে ৭০০ কেজি বেগুন বিক্রি হতো। তা এখন ২৫০ থেকে ৩০০ কেজিতে নেমে এসেছে।
ট্রাকভর্তি ফুলকপি নিয়ে বিক্রি করতে কারওয়ান বাজারে এসেছেন আব্দুল মোতালেব। তিনি বলেন, আমার ফুলকপিগুলো মাঝারি সাইজের ১২ থেকে ১৫ টাকা দরে প্রতি পিস ফুলকপি বিক্রি করেছি। অন্যান্য বারের থেকে এবছর দাম কিছুটা কম। শীতের শুরুর দিকে দাম সবসময় ভালো পাওয়া যায়। তবে এবার বাজারে চাহিদা একটু কম মনে হচ্ছে, ফলে দামটাও আশানুরূপ পাচ্ছি না।
বকশিবাজার থেকে ব্যবসায়ী সাত্তার এসেছেন তার দোকানের জন্য প্রয়োজনীয় সবজি কিনতে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, শুক্রবার আমি একটু বেশি কাঁচামাল কিনি কারণ, ছুটির দিনে কেনাবেচা ভালো হয়। প্রতি কেজি সবজিতে পাঁচ থেকে সাত টাকা লাভে বিক্রি করে থাকি। শীতের সবজিগুলোই সবচেয়ে বেশি চলে।
এদিকে খুচরা সবজির বাজার ঘুরে দেখা যায়, পাইকারি মূল্যের চেয়ে খুচরা মূল্যের প্রতিটি সবজি ১০ থেকে ২৫ টাকা কেজি প্রতি বেশি বিক্রি হচ্ছে। মতিঝিল বাজারের লাভলু মিয়া টমেটো বিক্রি করছেন ১৩০ টাকা অথচ পাইকারি মূল্য কেজিপ্রতি ১০০ টাকা। ১ কেজি টমেটোতে ৩০ টাকা বেশি। এভাবে তার দোকানে সব সবজি পাইকারি দামের চেয়ে ১০-৩০ টাকা কেজিপ্রতি বেশিতে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
সবজি ক্রেতা তারেক মাহমুদ বলেন, সবজির বাজার সবসময় ঊর্ধ্বমুখি থাকে। বলতে গেলে নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সরকারিভাবে নিয়মিত মনিটরিং করা হলে দাম অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এতে বিশেষ করে নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষেরা বেশি উপকৃত হবে। প্রতি কেজি সবজি পাইকারি মূল্যর চেয়ে খুচরা বিক্রি অনেক বেশি। আয় না বাড়লেও দিন দিন সংসারের খরচ বেড়েই চলতে।