ইরানে একটি মাজারে বোমা হামলায় কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। এছাড়া এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪০ জন। বুধবার (২৬ অক্টোবর) দক্ষিণ ইরানের শিরাজ শহরে শিয়া ওই ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলার পর হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সংস্থা আইআরএনএ’র বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
ইরানি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার সন্ধ্যার প্রথম দিকে ইরানের দক্ষিণাঞ্চলীয় শিরাজ শহরের শাহ চেরাগ মাজারে এই হামলার ঘটনা ঘটে। মূলত তিনজন সশস্ত্র লোক মাজারে প্রবেশ করার পরই সেখানে হামলা হয়।
হামলাকারীদের মধ্যে দু’জনকে আটক করা হয়েছে, তবে একজন এখনও পলাতক রয়েছে। আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসআইএল (আইএসআইএস) নিজেদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
ইরানের রাষ্ট্রের সাথে সম্পৃক্ত মিডিয়া আউটলেট নুর নিউজ জানিয়েছে, হামলাকারীরা ইরানি নাগরিক নয়। এছাড়া ফারস নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, শিরাজে নিহতদের মধ্যে একজন নারী ও দুই শিশু রয়েছে।
বুধবারের হামলায় বেঁচে যাওয়া এক প্রত্যক্ষদর্শী আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘আমরা নামাজের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম এবং এরপরই গুলির শব্দ শুনতে পাই, আমরা অন্য দিক দিয়ে পালানোর চেষ্টা করি এবং তারপরে আমি বুঝতে পারি যে, আমার শরীর থেকে রক্ত ঝরছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি দেখতে পাচ্ছিলাম না কারা গুলি করছে … রাস্তা থেকে (গুলিবর্ষণ) শুরু হয়েছিল এবং তারপর তারা মাজারের দিকে আসে এবং তারা যাকে দেখে তাকেই গুলি করে। আমি কয়েকজনকে আহত ও নিহত অবস্থায় দেখেছি, কিন্তু হামলাকারীদের দেখতে পাইনি।’
তেহরান ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি অব ওয়ার্ল্ড স্টাডিজের সহযোগী অধ্যাপক ফুয়াদ ইজাদি বলেছেন, গুলি চালানোর উদ্দেশ্য ছিল ‘উপাসকদের ওপর হামলা’। তিনি বলছেন, ‘এটি একটি আইএসআইএস ট্রেডমার্ক – তারা মসজিদে হামলা করে, তারা মাজারে হামলা করে।’
আল জাজিরার ডোরসা জাব্বারি ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে বলেছেন, শিরাজ শহরের এই মাজারটি ধর্মীয় তীর্থযাত্রীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
উল্লেখ্য, ইরানের শিরাজ শহর হলো তীর্থযাত্রা ও পর্যটনের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য। এর আগে ২০০৮ সালের এপ্রিল মাসে এই ধরনের সর্বশেষ হামলা হয়েছিল। সেসময় একটি মসজিদে পেতে রাখা বোমায় ১৪ জন নিহত হয়েছিলেন।