আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, বিশ্বব্যাংক কয়েক মাস ধরেই বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছে। সম্ভাব্য দুর্ভিক্ষের ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনেও গুরুত্ব পেয়েছে এ প্রসঙ্গ। তিনিও এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেছেন।
আগামী বছর যদি বৈশ্বিক মন্দা দেখা দেয় তবে কী ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ পড়তে পারে তা নিয়ে একটি প্রতিবেদন করেছে বিবিসি বাংলা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির শিক্ষক সায়মা হক বিদিশার বরাত দিয়ে এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- বাংলাদেশের সামনে কয়েকটি বিষয় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আসবে। এগুলো হলো- রপ্তানি আয় কমে যেতে পারে, আমদানি করা খাদ্য পণ্যের দাম বাড়বে, মন্দায় বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমলে তার সাথে দেশের বাজারের সমন্বয় সাধন করা, রেমিটেন্স কমতে পারে।
তিনি আর বলেন, বিশ্ব অর্থনীতি মন্দায় পড়লে বাংলাদেশের রপ্তানিতে এর প্রভাব পড়বে কারণ তৈরি পোশাকের চাহিদা কমবে। তবে সঠিকভাবে এগুতে পারলে এখানে কিছুটা ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে। কারণ বাংলাদেশ যেসব পোশাক রপ্তানি করে সেগুলো খুব উচ্চ মূল্যের নয়।
তার মতে বাংলাদেশের প্রবাসী শ্রমিকদের বড় অংশ তেল সমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে থাকলেও বৈশ্বিক মন্দায় তাতেও প্রভাব পড়তে পারে। কারণ মধ্যপ্রাচ্যের কোম্পানিগুলো পশ্চিমাদের কাছে যে রপ্তানি করে তাতে প্রবৃদ্ধি কম হলে এসব কোম্পানিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হবে।
সায়মা হক বিদিশা আরও বলেন, বৈশ্বিক মন্দা দেখা দিলে খাদ্য মূল্যস্ফীতিতে সেটি প্রভাব ফেলবে। আমদানি করা পণ্যগুলোর দাম বাড়বে। তবে জ্বালানি তেলের দাম বৈশ্বিক মন্দায় কমে আসলে সেটি কিছু স্বস্তিরও কারণ হতে পারে।
সায়মা হক বিদিশার মতে জ্বালানি তেলের দাম মন্দায় কমে এলে বাংলাদেশের বাজারে তার সমন্বয়টা বুদ্ধিমত্তার সাথে করতে পারলে সাধারণ মানুষ স্বস্তি পাবে।
তবে কৃষি আর রেমিটেন্সে প্রণোদনাসহ আনুষঙ্গিক পদক্ষেপ ঠিক মতো নিতে পারলে মন্দার চাপ মোকাবিলা করা কিছুটা সহজ বলে বলে মনে করেন তিনি।
একই সাথে চলতি বছর ডলার সংকট মোকাবেলায় যেভাবে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে সে ধরনের পদক্ষেপ নেয়ারও প্রয়োজন হতে পারে।