বিশ্ববাজারে এক টানা দরপতনের মধ্যে পড়েছে সোনার দাম। একমাসের বেশি সময় ধরে এই ধাতুটির দাম কমতেই আছে। এতে বিশ্ববাজারে দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন দামে চলে এসেছে স্বর্ণ। দফায় দফায় দাম কমে ২০২০ সালের এপ্রিলের পর এখন আবার প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম সাড়ে ১৬০০ ডলারের নিচে নেমে গেছে।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, আগস্টের মাঝামাঝি থেকে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমছে। গত ১২ আগস্ট প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছিল ১ হাজার ৮০১ দশমিক ৮২ ডলার। সেখান থেকে কমতে কমতে এখন প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৬৪৩ দশমিক ২৬ ডলারে নেমেছে। অর্থাৎ দেড় মাসের কম সময়ের মধ্যে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম কমেছে ১৫৮ ডলার।
এর মধ্যে গত এক সপ্তাহে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম কমেছে ৩১ দশমিক ৬৬ ডলার বা ১ দশমিক ৮৯ শতাংশ। মাসের ব্যবধানে কমেছে ১০৮ ডলার বা ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ।
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমার মধ্যেই দেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম কিছুটা কমেছে। তবে বিশ্ববাজারে যে হারে স্বর্ণের দাম কমেছে, দেশের বাজারে সেই হারে কমেনি। বরং চলতি মাসে বিশ্ববাজারে যখন স্বর্ণের দাম কমের দিকে ছিল, সে সময় দেশের বাজারে উল্টো স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়।
এতে ১১ সেপ্টেম্বর সব রেকর্ড ভেঙে দেশের বাজারে নতুন উচ্চতায় ওঠে স্বর্ণের দাম। সে সময় সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা বাড়িয়ে ৮৪ হাজার ৫৬৪ টাকা করা হয়। এর আগে দেশের বাজারে স্বর্ণের এত দাম আর দেখা যায়নি।
অবশ্য এই রেকর্ড দাম স্পর্শ করার পর সম্প্রতি দুই দফা দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। এর মধ্যে সর্বশেষ ১৯ সেপ্টেম্বর সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩৩ টাকা কমিয়ে ৮২ হাজার ৩৪৮ টাকা করা হয়েছে।
এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৮৭৫ টাকা কমিয়ে ৭৮ হাজার ৬১৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭০০ টাকা কমিয়ে ৬৭ হাজার ৪১৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৫৮৩ টাকা কমিয়ে ৫৫ হাজার ৮৭১ টাকা করা হয়েছে। বর্তমানে দেশের বাজারে এ দামেই স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাধলে বিশ্ববাজারে হু হু করে বাড়ে স্বর্ণের দাম। মার্চের প্রথমার্ধেই প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম দুই হাজার ডলার ছাড়িয়ে যায়। এরপর গত কয়েক মাসে কয়েক দফা স্বর্ণের দাম ওঠা-নামা করে। তবে আগস্টের মাঝামাঝি থেকে পতনের মধ্যে পড়ে স্বর্ণ।
এদিকে স্বর্ণের পাশাপাশি রুপা এবং প্লাটিনামও দরপতনের মধ্যে পড়েছে। গত এক সপ্তাহে রুপার দাম ৩ দশমিক ৬০ শতাংশ কমে প্রতি আউন্সের দাম ১৮ দশমিক ৮৫ ডলারে নেমেছে। প্লাটিনামের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ। এতে প্রতি আউন্স প্লাটিনামের দাম দাঁড়িয়েছে ৮৫৪ ডলার।