পণ্যের সরকার নির্ধারিত দামের বেশি নিলে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট (সরাসরি) মামলা করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, ভোজ্য তেলের মতো চাল, চিনি, ডাল, চা-পাতা, রড, সিমেন্টসহ মোট ৮-৯টি পণ্যের দাম নির্দিষ্ট করে দেবে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন।মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দ্রব্যমূল্য নিয়ে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দাম যেটা বাড়ানো উচিত তার চেয়ে বেশি বাড়ানো হয়েছে। যার জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে, ট্যারিফ কমিশন এখন থেকে এসব পণ্যের যে ন্যায্য দাম হওয়া উচিত সেটা নির্ধারণ করে দেবে। ভোজ্য তেলের দাম আমরা যেভাবে নির্ধারণ করি তেমনিভাবে অন্যগুলো নিয়েও ব্যবসায়ী, আমদানিকারক, ব্যবসায়ী নেতারা এফবিসিসিআইসহ সবাইকে নিয়ে বসে যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করা হবে।
এই মূল্য বাজারে জানিয়ে দেওয়া হবে, এই দামেই বিক্রি হতে হবে। এর চেয়ে বেশি নিলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।
টিপু মুনশি বলেন, নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি যদি কেউ নেয়, সেক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে শুধু জরিমানা নয়, আমরা ঠিক করেছি ভোক্তা অধিকার এবং প্রতিযোগিতা কমিশন মামলা করবে। এই মামলায় সাজা হিসেবে তিন বছরের জেল হতে পারে।
ট্যারিফ কমিশনের কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে, সব আইটেমগুলো ১৫ দিনের মধ্যে হিসাব করে এটা বাজারে জানিয়ে দেওয়া হবে, দিস ইস দ্য প্রাইস।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যদি আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে আমাদের নির্ভর করতে হয়, তাহলে কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারের দাম উঠলে এখানেও দাম বৃদ্ধি পাবে। সেক্ষেত্রে সেটাও কতটুকু বৃদ্ধি পাওয়া উচিত তা ঠিক করে দেওয়া হবে। এখন কথা আসছে বিভিন্নভাবে বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে জিনিসের দাম কমেছে। সত্যি কথাই কমেছে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা সয়াবিন তেল ও পামওয়েলের দাম কমতে দেখেছি কিন্তু পাশাপাশি ডলারের দাম (রেট) বেড়ে গেছে। যার জন্য এই হিসাব করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, যে সুফলটা আমরা পেতে পারতাম, আমাদের জনগণ পেতে পারতো, সেটা পাচ্ছি না।
আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের উচ্চমূল্য, আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা সুযোগ নেওয়াসহ সার্বিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে টিপু মুনশি বলেন, সাধারণত আমাদের ট্যারিফ কমিশন ভোজ্যতেল নিয়ে টাইম টু টাইম বসে ঠিক করে। বাড়ানোর দরকার হলে বাড়ায় তাদের সঙ্গে আলোচনা করে। আবার যখন দাম কমে আন্তর্জাতিক বাজারে এবং বাংলাদেশে তার প্রভাব পড়া উচিত সে ক্ষেত্রে কমিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করেছি, বিভিন্ন আইটেমের দাম বেড়েছে, যেটা গ্রহণযোগ্য নয়। যদিও সবগুলোই আমাদের মন্ত্রণালয়ের দেখার কথা ছিল তা কিন্তু নয়।
তিনি বলেন, কৃষি পণ্য রয়েছে, চাল রয়েছে, যেটা খাদ্য মন্ত্রণালয় বা কৃষি মন্ত্রণালয় তারা দেখবে। ডিমের কথা এসেছে মাঝখানে। ডিমের কথা আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আনিনি। আমাদের দেখার ব্যাপারও ছিল না। তারপরেও প্রশ্ন আসার পরে আমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল, ডিম দরকার হলে আমদানি করব। তারপরই ডিমের দাম কমেছে।
মন্ত্রী বলেন, আজ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, কীভাবে দাম কমানো অথবা যথার্থ করা যায়।