করোনা মহামারীর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প, কৃষি খাত ও রপ্তানিমুখি শিল্পে প্রণোদনা এবং খাদ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বাড়াতে সবচেয়ে কম সুদে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিস্টেন্স (এআইডিএ) তহবিল থেকে বাংলাদেশ সরকারকে ২৫ কোটি ডলারের ঋণ দেবে বিশ্ব ব্যাংক। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ২ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা। পাঁচ বছরের রেয়াতকালসহ ৩০ বছরে ২ শতাংশ সুদসহ এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে বাংলাদেশকে।
এ বিষয়ে সোমবার (১৮ এপ্রিল) সংস্থাটির সঙ্গে একটি ঋণচুক্তি সই করেছে সরকার। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং বিশ্বব্যাংকের পক্ষে সংস্থাটির ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর মোহাম্মদ আনিস চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। ইআরডিতে এ চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
ইআরডি বলছে, করোনার বিরূপ প্রভাব থেকে কার্যকরভাবে উত্তরণে সরকার অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প, কৃষি খাত ও রপ্তানিমুখী শিল্পে প্রণোদনা দেয়াসহ খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি করেছে। বিশ্বব্যাংকের বাজেট সহায়তার এই ঋণ সরকার করোনার পুনরুদ্ধারে নেয়া কর্মসূচিতে ব্যয় করবে। শুধু তা-ই নয়, ডিপিসি সিরিজের আওতায় দুই বছরে বাংলাদেশকে ৫০ কোটি ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক। এর মধ্যে চলতি অর্থবছরে (২০২১-২২) ২৫ কোটি ডলার এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৫ কোটি ডলার। বিশ্বব্যাংকের ডেভেলপমেন্ট পলিসি ক্রেডিটে দুটি মূল বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। একটি হচ্ছে সরকারের রাজস্ব ও আর্থিক খাত, অন্যটি হচ্ছে সহনশীল অর্থনীতির জন্য জীবন ও জীবিকা।
কোভিড-১৯-পরবর্তী অর্থনৈতিক উত্তরণ এবং উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখতে এই ঋণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। এর মাধ্যমে করোনা-পরবর্তী পুনরুদ্ধারের জন্য একটি আর্থিক উদ্দীপনা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে সহায়তা করার পাশাপাশি ভবিষ্যৎ ঝুঁকি মোকাবিলায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা বাড়াবে। বিশ্বব্যাংকের এই ঋণ পরিশোধে বাংলাদেশ ৩০ বছর সময় পাবে। এই ঋণের সুদের হার হবে ১ দশমিক ২৫ শতাংশ, সঙ্গে সার্ভিস চার্জ থাকবে শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ। ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে পাঁচ বছর গ্রেস পিরিয়ড পাবে বাংলাদেশ। এ সময় ঋণের কোনো কিস্তি শোধ করতে হবে না। বাকি ২৫ বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে।