গাজীপুরের শ্রীপুরে মায়ের প্রতি অগাদ ভালবাসার কারনে সবুজ ধান ক্ষেতে দুই প্রজাতির ধান দিয়ে ‘মা’ নামের শিল্পকর্ম ফুটিয়ে তুলেছেন এক কৃষক। টেংরা গ্রামের কৃষক এনামুল হক বিস্তীর্ণ সবুজের মাঠে সবুজ ও বেগুনীর মিশেলে ধানখেতে ফুঁটিয়ে তুলেছেন “মা”। সড়কের ধারে হঠাৎ করে দৃষ্টি আটকে যায় পথিকের। অনেকে থমকে যায়, আগ্রহ নিয়ে দাঁড়িয়ে মায়ের সৌন্দর্য দেখেন। ছবি উঠিয়ে নিয়ে যান, সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে দিচ্ছেন কেউ কেউ।
কৃষক এনামুল হক শ্রীপুর বাজারের পান সুপারির বিক্রেতা। তার বাবা আব্দুল আউয়াল মারা গেছেন বহু বছর পূর্বে। মা জহুরা খাতুন অনেক কষ্ট-সংগ্রাম করে তাকে ও তার এক বোনকে মানুষ করেছেন। তিনি ক্ষুদ্র এ ব্যবসার পাশাপাশি অন্যের জমি লিজ নিয়ে কৃষিকাজ করেন। এবার মাওনা-বরমী আঞ্চলিক সড়কের পাশে প্রায় তিন বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন। এই ধানখেতেই মা নামের শিল্পকর্ম ফুটিয়ে তুলেছেন।
এনামুল বলেন, সবাই তো মায়ের জন্য কতকিছু করে। আমি কৃষক, সারাদিন ধানক্ষেতে থাকি। তাই ধানক্ষেতেই মায়ের জন্য এই উপহার। যার জন্য এই আয়োজন, সেই জহুরা খাতুন মুগ্ধ সন্তানের শিল্পকর্মে। তিনি জানালেন, ছেলে ধানক্ষেতে মায়েন নাম লেখায় খুব খুশি তিনি। আবেগাপ্লুত হয়ে বললেন, আমার ছেলে যেমন আমাকে ভালোবাসে, আমিও আমার ছেলেকে ভালোবাসি।
তিনি আরো বলেন, বেগুনী রঙের ধানগাছ দিয়ে অনেকেই অনেক কিছু তুলে ধরেছেন। তিনি তুলে ধরেছেন মায়ের নাম লিখে। “মা” তার কাছে সবচেয়ে বড় সম্পদ। তিনি দেখেছেন, কেউ মায়ের দোয়া দোকানের নাম দেন, কেউ আবার পরিবহনে লিখেন। তিনি যেহেতু কৃষক তাই ধানের জমিতেই ফুঁটিয়ে তুলেছেন মাকে। নিজের মন থেকে অনুপ্রেরণা ও মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালবাসায় তিনি তার ধানের খেতে মা লিখেছেন।
সন্তানের এমন ভালবাসায় মুগ্ধ মা জহুরা খাতুন। তিনি বলেন, ছেলের এমন কান্ডে তিনি নিজেও অভিভূত। তার ছেলে তাকে খুব ভালবাসে। সবসময় খবর নেয়। দেশে অনেকেই এখন ব্যতিক্রম। বৃদ্ধ বয়েসে মা ও বাবা বোঝা হয়ে যায়। তাদের খবর পর্যন্ত নেয় না। তার ছেলের মতো প্রত্যেকটা সন্তানের এমন মায়ের প্রতি আনুগত্য থাকার প্রয়োজন।