যেসব কারণে কোলেস্টেরল বাড়ে, বাড়লে যেসব ক্ষতি হয়

কোলেস্টেরল আসলে কি? এটি কেন বাড়ে? বাড়লেই বা কি হয়? এমন প্রশ্ন জনমনে সচরাচর দেখা যায়। আসুন জেনে নেই কোলেস্টেরল অসলে কি? কোলেস্টেরল মানে হলো লিপিড। আরো সহজ করে বললে কোলেস্টেরল হলো রক্তের চর্বি বা ফ্যাট।

যদি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায় তাহলে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক ও ধমনিসংক্রান্ত রোগে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা বেড়ে যায়। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য অনেকটাই দায়ী।

কোলেস্টেরলে আক্রান্ত হওয়ার কোন বয়স নেই। যেকোনো বয়সেই কোলেস্টেরলের সমস্যা হতে পারে। তবে ধূমপান ও মাদক গ্রহণ, দৈহিক পরিশ্রমের অভাব, খুব বেশি মানসিক অস্থিরতা, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস, ফ্যাটি লিভার ছাড়াও বংশগত কারণে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি হতে পারে।

যেসব কারণে কোলস্টেরল বাড়ে:

ধূমপান ও মদ্যপান: ধূমপান শুধু ফুসফুসের ক্ষতি করে না, বাড়িয়ে দেয় ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রাও। পাশাপাশি ধূমপান কমিয়ে দেয় এইচডিএলের মাত্রা। বিশেষত মহিলাদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি অনেকটাই বেশি। অন্যদিকে মদ্যপান মারাত্মক হারে বাড়িয়ে দিতে পারে কোলেস্টেরলের পরিমাণ। নিয়মিত মদ্যপান ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি করে। বিশেষত যাদের অগ্ন্যাশয় ও লিভারের সমস্যা রয়েছে তাদের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। মহিলাদের ক্ষেত্রে উচ্চ ট্রাইগ্লিসারইড অনেকটাই বাড়িয়ে দেয় স্ট্রোকের আশঙ্কা।

স্থূলতা: ‘বডি মাস ইনডেক্স’ যদি ৩০ বা তার বেশি হয়ে যায় তবে, কোলেস্টেরলের ঝুঁকি বেড়ে যায়। পাশাপাশি অতিরিক্ত ওজন বাড়িয়ে দিতে পারে ডায়াবেটিস, ডেকে আনতে পারে হৃদযন্ত্রের সমস্যা। উচ্চ কোলেস্টেরলের সঙ্গে এই ধরনের সমস্যা থাকলে প্রাণের ঝুঁকি বেড়ে যায় অনেকটাই। তবে ওজন কমলে কমতে পারে কোলেস্টেরলের সমস্যাও।
অতিরিক্ত ওজনে কোলেস্টেরলের ঝুঁকি বেড়ে যায়। হবে ডায়াবেটিস, ডেকে আনতে পারে হৃদযন্ত্রের সমস্যা

খাদ্যাভ্যাস: লাল ও প্রক্রিয়াজাত মাংস, বেশি তেল রয়েছে এমন খাবার বাড়িয়ে দেয় কোলেস্টেরলের মাত্রা। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে আনতে খেতে হবে ওটস, কাঠবাদাম। খাওয়া যেতে পারে মাছও। তবে সব কোলেস্টেরল সমৃদ্ধ খাবারই খারাপ নয়। যেমন ডিমে কোলেস্টেরল বেশি থাকলেও সঙ্গে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান থাকে।

শরীরচর্চার অভাব: আলস্য ও কোলেস্টেরল বৃদ্ধির মধ্যে কার্যত একটি চক্রাকার সম্পর্ক রয়েছে। একটি বাড়লে, বৃদ্ধি পাবে অপরটিও। নিয়মিত শরীরচর্চা কমাতে পারে কোলেস্টেরলের মাত্রা। পাশাপাশি শরীরচর্চা করলে নিয়ন্ত্রণে থাকে স্থুলতাও। শরীরচর্চা বলতে কিন্তু শুধু জিমে যাওয়া নয়, নিয়মিত হাঁটা, সাইকেল চালানো ও সাঁতারের মতো অভ্যাসও সহায়তা করতে পারে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে।