আপনার যদি খাদ্যাভ্যাস সঠিক হয়, তাহলে আপনাকে দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতার ঝুঁকি নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। তবে কখনো কখনো খাবারের উপাদান সম্পর্কে না জেনে আমরা ভুল করে থাকি। আর এ থেকে স্বাস্থ্যগত জটিলতার তৈরি হয়। এমন একটি স্বাস্থ্য জটিলতা, যা সরাসরি খারাপ খাদ্যের সঙ্গে যুক্ত তা হলো উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল।
কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) বলেছে, ‘বিশ্বব্যাপী, ইস্কেমিক হৃদরোগের এক-তৃতীয়াংশ উচ্চ কোলেস্টেরলের জন্য দায়ী এবং যোগ করে যে উন্নত এবং উন্নয়নশীল উভয় দেশেই ইসকেমিক রোগের ঝুঁকির কারণ হিসেবে মোট কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়া একটি প্রধান কারণ। ‘ ২০০৮ সালে, প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বেড়ে যাওয়া মোট কোলেস্টেরলের বৈশ্বিক প্রকোপ ছিল ৩৯ শতাংশ (পুরুষদের জন্য ৩৭ শতাংশ এবং নারীদের জন্য ৪০ শতাংশ)।
হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুল অনুসারে, উচ্চ কোলেস্টেরলের কারণে হার্ট সংক্রান্ত জটিলতা হওয়ার ঝুঁকি কমাতে একজনকে লাল মাংস, ভাজা খাবার, প্রক্রিয়াজাত মাংস এবং বেকড পণ্য খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
লাল মাংস
লাল মাংস সব সময় কোলেস্টেরলের জন্য খারাপ বলে বিবেচিত হয় এবং যাদের উচ্চ কোলেস্টেরল আছে, তাদের প্রায়ই লাল মাংস না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়, যাতে শরীরের কোলেস্টেরলের সামঞ্জস্য নষ্ট না হয়। “গরুর মাংস, শূকরের মাংস এবং ভেড়ার মাংসে সাধারণত স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি থাকে৷ হ্যামবার্গার, মাংসের চপ এবং রোস্টের মতো কাটা মাংসে চর্বি সবচেয়ে বেশি থাকে৷ তবে মাংস যে পুরোপুরি বাদ দেবেন তা না। শুধু অনুষ্ঠানে খেতে পারেন। হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আরো ভালো হয় যদি মাংসের পরিবর্তে স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং কোলেস্টেরল কম থাকে এমন প্রোটিন, যেমন চামড়াবিহীন মুরগি বা টার্কি, মাছ এবং মটরশুঁটি খেতে পারেন।
প্রক্রিয়াজাত মাংস
বিশেষ করে উচ্চ কোলেস্টেরলের রোগীদের জন্য প্রক্রিয়াজাত মাংস খেতে নিষেধ করা হয়। প্রক্রিয়াজাত মাংস প্রায়শই কোলেস্টেরল এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট অত্যন্ত উচ্চ মাত্রায় থাকে, যা হৃদরোগের জন্য ক্ষতিকারক। যদিও বিশেষজ্ঞরা প্রক্রিয়াজাত মাংসের জন্য কয়েকটি স্বাস্থ্যকর বিকল্পের পরামর্শ দেন, তবে এগুলো কোলেস্টেরলমুক্ত নয়।
বেকড খাবার
কুকিজ এবং পেস্ট্রি খেতে পছন্দ করে এমন মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। বাচ্চা থেকে শুরু করে বয়স্ক সবাই ডেজার্ট হিসেবে কমবেশি মিষ্টি খাবার পছন্দ করে। কিন্তু চিনি জাতীয় খাবার শরীরের কোনো উপকার তো করেই না বরং রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে।
ভাজা খাবার
অনেক মানুষ চেষ্টা সত্ত্বেও কুড়মুড়ে ভাজা জিনিস খাওয়া বন্ধ করতে পারেন না। কিন্তু এসব খাবার যেমন ক্যালোরি বাড়ায় তেমনি এসব খাবারে যে তেল ব্যবহার করা হয় তা স্বাস্থ্যকর না। এ জন্য ভাজা খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
শরীর সুস্থ রাখতে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া উচিত । অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার শরীরের জন্য ভালো। তবে বয়সের সাথে সাথে অনেক সমস্যা এসে হাজির হয়। এ জন্য চিকিৎসকের সহায়তা নিতে হবে এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে।
সূত্র : দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া।