সকালে উঠে সবার আগে একগ্লাস পানি পান করা জরুরি। এরপর সকালের নাস্তা খাওয়া। সবাই যে একইরকম নাস্তা খান, তা নয়। আবার সবদিন একই ধরনের নাস্তাও খাওয়া হয় না। কেউ খান লেবুপানি, মেথি ভেজানো পানি; কেউ খান আমন্ড, ছোলা বা ভেজানো বাদাম। একেকজনের রুটিন একেক ধরনের হতে পারে। অনেকে আবার সকালে উঠে কিছুই খান না, মুখ ধুয়ে কাজে বেরিয়ে যান। তারপর ক্ষুধাপেটে যা সামনে পান, তাই খেয়ে নেন। ফলস্বরূপ দেখা দেয় হজমে সমস্যা।
অনেকে আবার সকালের খাবারই খান বেলা বারোটার পরে! এভাবে চলতে থাকলে শরীর তো খারাপ হয়ই, বাড়ে ওজনও। খালি পেটে থাকার পর ঠিকভাবে খাবার না খেলে বাড়তে থাকে রক্তে শর্করার মাত্রা। বিশেষজ্ঞরা তিনবেলা খাবারের মধ্যে সব সময় সকালের খাবারের প্রতিই বেশি জোর দেন। তাদের মতে, সকালের খাবার কোনোভাবেই বাদ দেওয়া উচিত নয়।
শুধু সকালের নাস্তাই নয়, দুপুর কিংবা রাতের খাবারও খেতে হবে নিয়ম মেনে, সময় ঠিক রেখে। আমাদের শরীর ঠিক রাখার জন্য প্রতি বেলার খাবারেরই আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। কারণ এই খাবারের মাধ্যমে আমাদের শরীরে সরবরাহ হয় গ্লুকোজ। আবার আমাদেরই কিছু ভুল অভ্যাসের কারণে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়। তাই কিছু অভ্যাসে আনতে হবে পরিবর্তন। সকালের নাস্তায় এই ভুলগুলো কোনোভাবেই করা যাবে না-
রঙিন খাবার না খাওয়া
সকালের খাবার রঙিন হতে হবে। এতে দেখতে ভালো লাগবে, খেতেও ভালো লাগবে। রঙিন সবজি ও ফলে থাকে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। সকালের নাস্তায় পেঁপে, পেয়ারা, আপেল, কলা, বেদানা, সবেদা ইত্যাদি দিয়ে তৈরি করে খেতে পারেন ফ্রুট সালাদ। সুইট কর্ন, মাশরুম, টমেটো সেদ্ধ করে তাতে বাটার আর গোল মরিচের গুঁড়া ছড়িয়ে খেতে পারেন। কিন্তু সকালের খাবার এ ধরনের খাবার কজনে খান? রঙিন ও পুষ্টিকর খাবার না রাখা, সকালের নাস্তায় অন্যতম ভুল।
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার না খাওয়া
ভালো হজমের জন্য ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার বেশি খেতে হবে। এতে শরীরের হজম ক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি পেটও ভরা থাকবে দীর্ঘ সময়। ওটস হলো অন্যতম ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার। সকালের নাস্তায় ওটস রাখতে পারেন। এছাড়া ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখে কোলেস্টেরলও। সকালের নাস্তায় অন্তত ১০ গ্রাম ফাইবার পাওয়া যায়, এমন খাবার রাখুন।
কার্বোহাইড্রেট বেশি খাওয়া
আমাদের দেশে এখনও বেশিরভাগ মানুষ সকালে ভাত কিংবা রুটিই খেয়ে থাকেন। এটি আপনার রক্তে শর্করা বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করতে পারে। তাই সকালের খাবারে কার্বোহাইড্রেট যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। এর বদলে প্রোটিন খেতে পারেন। চাল, ময়দা কিংবা আলুর তৈরি কোনো খাবারই সকালের নাস্তায় রাখবেন না। পিজ্জা, বার্গার, ক্রিম রোল তো নয়ই! এর বদলে ফল খান, বিভিন্ন বীজ জাতীয় খাবার খান। সেইসঙ্গে খাবেন একটি করে ডিম।
প্রোটিন ও ফাইবার না খাওয়া
সকালের খাবারে প্রোটিন ও ফাইবারের দিকে নজর রাখেন না বেশিরভাগই। কিন্তু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য এই দুই উপাদান খাওয়া জরুরি। এই দুই উপাদান আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করে। যে কারণে ডায়াবেটিস থেকে দূরে থাকা যায়। তাই সকালের নাস্তায় প্রোটিন ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।