ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে মেনে চলুন এসব নিয়ম

শরীরের বেশি ওজন নিয়ে চিন্তায় থাকেন বেশিরভাগ মানুষ। আবার অনেকে আছেন যারা শরীরকে আর বাড়তে দিতে চান না। তাদের জন্য বেশ কয়েকটি নিয়ম রয়েছে, যেগুলো মানলে অবলম্বন করে ওজন কমানো সম্ভব। চলুন এই সম্পর্কে জেনে নিই-

সকালের নাস্তা

দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার হচ্ছে সকালের প্রাতঃরাশ। ব্রেকফাস্ট আপনাকে পুরো দিন কর্মঠ রাখতে সাহায্য করবে। তবে অনেকেই ওজন কমানোর জন্য সকালে জলখাবার খান না। এ কারণে একটু পর পর খিদে পায় এবং দুপুরের দিকে পরিমাণে অনেক বেশি খেয়ে ফেলেন।

সুতরাং সকালের নাস্তা বাদ দিলে ওজন তো কমেই না বরং আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, সেই সঙ্গে দেখা দেয় নানা রকমের অসুখ বিসুখ। তাই ওজন কমাতে বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে প্রতিদিন সকালে স্বাস্থ্যকর নাস্তা করতে হবে।

ব্যায়াম

ওজন কমানোর জন্য শুধু ডায়েট করলেই হবে না খাদ্য নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অবশ্যই ব্যায়াম করতে হবে। আপনি যতই ডায়েট করুন না কেন, ব্যায়াম না করলে কিন্তু ওজন সঠিকভাবে কমে না। স্বাস্থ্যকর খাবার তালিকা এবং সঠিক ব্যায়ামে এ দুয়ের সমন্বয়ে দ্রুত ওজন কমানো সম্ভব।

খাবার আগে পানি পান

প্রায় সময় দাবি করা হয় পানি ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং এ এক খাঁটি সত্য। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা খাওয়ার আধ ঘণ্টা আগে আধা লিটার পানি পান করেন তাদের ওজন অন্যান্যদের তুলনায় ৪৪% বেশি কমে। কারণ খাওয়ার আগে পানি পান করলে খাবার গ্রহণের পরিমাণ কমে যায়। ফলে শরীর কম ক্যালোরি গ্রহণ করে। এছাড়াও পানি বেশি পান করলে আপনার শরীর হাইড্রেটেড থাকবে এবং ক্ষিদে কম পাবে।

প্রচুর ফল ও শাকসবজি খান

ওজন কমানোর ক্ষেত্রে যে বিষয়টির প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে তা হলো খাদ্যতালিকা। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে ফল ও শাকসবজি রাখতে হবে। শাকসবজি ও ফলমূলে ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকে এবং উচ্চ পরিমাণে ফাইবার থাকে। ক্যালরি কম থাকার কারণে ফলমূল ও শাকসবজি বেশি পরিমাণে খেলেও আপনার ওজন বাড়বে না এবং উচ্চ পরিমাণের থাকা ফাইবার আপনার শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও শক্তি জোগাতে সাহায্য করবে।

গ্রিন টি

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রিন টির মধ্যে থাকা ফ্ল্যাভোনিয়েডস এবং ক্যাফেইন মানুষের দেহের বিপাক ক্ষমতা ও কর্মক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে। গ্রিন টিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট, যা আমাদের দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। সম্প্রতি একটি গবেষণায় জানা গেছে, যারা গ্রিন টি পান করেন এবং নিয়মিত ব্যায়াম করেন তাদের ১৫ শতাংশ দ্রুত চর্বি ঝরে। তাই প্রতিদিন গ্রিন টি অবশ্যই পান করুন।

খাবার কেনার আগে লেবেল দেখে নিন

কোন খাবারে কত ক্যালরি রয়েছে তা খাবারের লেবেলে লেখা থাকে, তাই সবসময় লেবেল দেখে কিনুন। তাহলে আপনার ধারণা হবে, যে এই খাবারটি খেলে আপনি কতটুকু ক্যালরি গ্রহণ করবেন। যেসব খাবারে ক্যালরির পরিমাণ বেশি সেগুলো কেনা থেকে বিরত থাকুন।

ছোট প্লেটে খাবার খান

বড় প্লেটে খেতে বসলে নিজের অজান্তেই বেশি খাওয়া হয়ে যায়। তাই খাবার খাওয়ার জন্য ছোট আকৃতির প্লেট বেছে নিন। কারণ ছোট প্লেটে খাবার বেশি মনে হয় এবং খাওয়া কম হয়।

খাবার সময় তাড়াহুড়া নয়

কম খেতে চাইলে খাবার সময় তাড়াহুড়া করবেন না। কারণ তাড়াহুড়া করে খেতে থাকলে বেশি খাবার খাওয়া হয়ে যায়। তাই ধীরে-সুস্থে ভালো করে চিবিয়ে অন্তত ২০ মিনিট সময় নিয়ে খাবার খান।

পর্যাপ্ত ঘুম

বেশি ঘুমালে যেমন ওজন বাড়ে, ঠিক সেভাবে কম ঘুমালেও ওজন বাড়ে। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের জন্য সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুম যথেষ্ট। অনেকেই মনে করেন যে কম ঘুমালে ওজন কমে, কিন্তু না। বরং ঘুমের অভাব আমাদের ক্ষুধা বাড়িয়ে দেয় ও চর্বি জাতীয় খাবারের প্রতি আকর্ষণ বাড়ায়। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম প্রয়োজন।

প্রক্রিয়াজাত খাবার পরিমাণমতো খাওয়া

প্রক্রিয়াজাত খাবার শরীরের মেদ বাড়ায়। এর মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত পরিমাণে চর্বি ও চিনি। তাই ওজন কমাতে চাইলে বিভিন্ন ধরনের জাঙ্ক ফুড যেমন পিজা, চিপস, কেক, কোল্ডড্রিংকস ইত্যাদি খাবার পরিহার করুন। এগুলো বাদ দিলে দেখবেন, আপনার শরীরে আস্তে আস্তে পরিবর্তন আসতে শুরু করবে।