তেলের পাশাপাশি গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে বড় পতন হয়েছে। এক সপ্তাহেই আউন্সে স্বর্ণের দাম কমেছে ৫০ ডলার। অবশ্য এই দরপতনের আগে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে বড় উত্থান হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশেও স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়। তবে গত সপ্তাহের দরপতনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয়ের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
বাজুস সূত্রে জানা গেছে, দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব পালন করা সমিতি আগামী সোমবার বিশ্ববাজারের চিত্র দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। যদি আগামী সোমবার বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমার প্রবণতা অব্যাহত থাকে, তাহলে দেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম কমানো হতে পারে। তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, স্বর্ণের পাশাপাশি গতে সপ্তাহে প্লাটিনাম ও রুপার দামেও বড় পতন হয়েছে। গত সপ্তাহে রুপার দাম কমেছে প্রায় ৬ শতাংশ। আর প্লাটিনামের দাম কমেছে ৪ শতাংশের ওপরে।
গত সপ্তাহে লেনদেন শুরু হওয়ার আগে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছিল এক হাজার ৮৪৩ দশমিক শূন্য ৬ ডলার। সপ্তাহ শেষে তা কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৭৯২ দশমিক ৬৯ ডলার। অর্থাৎ এক সপ্তাহে আউন্সে স্বর্ণের দাম কমেছে ৫০ দশমিক ৩৭ ডলার বা দুই দশমিক ৮১ শতাংশ।
অন্যদিকে গত সপ্তাহে রুপার দাম ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স দাঁড়িয়েছে ২৩ দশমিক ১৩ ডলারে। আরেক দামি ধাতু প্লাটিনামের দাম গত সপ্তাহজুড়ে কমেছে ৭ দশমিক ৫২ শতাংশ। এতে প্রতি আউন্স প্লাটিনামের দাম দাঁড়িয়েছে ৯৫৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ। এদিকে এই দরপতনের আগে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে বড় উত্থান হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়। সর্বশেষ গত ১৩ নভেম্বর ভরিতে দুই হাজার ৩৩৩ টাকা বাড়িয়ে স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করে বাজুস।
এতে সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম হয়েছে ৭৪ হাজার ৩০০ টাকা। ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণ ৭১ হাজার ১৫০ এবং ১৮ ক্যারেটের ৬২ হাজার ৪০২ টাকা। সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম হয়েছে ৫২ হাজার ৮০ টাকা।
স্বর্ণের এ দাম বাড়ানোর বিষয়ে বাজুস সভাপতি এনামুল হক খান ও সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালারে সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে করোনার কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট ও নানা জটিল সমীকরণের কারণে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে অস্থিরতা চলছিল।
এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে অস্বাভাবিকভাবে তেলের দাম বেড়েছে, যার প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারেও।
এছাড়া চাহিদার বিপরীতে জোগান কম থাকায় বিশ্ববাজার ও দেশীয় বুলিয়ন বা পোদ্দার মার্কেটেও স্বর্ণের দাম অনেকাংশে বেড়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতেই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি দেশের বাজারে স্বর্ণ ও রুপার মূল্য পুনর্নির্ধারণ করেছে বলে জানায় বাজুস। অবশ্য স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও রুপার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিশ্ববাজারে দরপতনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হবে কি না জানতে চাইলে বাজুস সাধারণ
সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা জাগো নিউজকে বলেন, আমরা সোমবার বিশ্ববাজারের চিত্র দেখতে চাই।
যদি বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমার ধারা অব্যাহত থাকে, তাহলে দেশেরও বাজারেও স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হবে।