একটা বয়সের পর যেকোনো মানুষের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায় কোলেস্টেরল। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়লে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। বুঝে-শুনে খেলেও প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা থেকে কোলেস্টেরল একেবারে বাদ দেওয়া কঠিন।
এর পাশাপাশি যদি কারও পারিবারিকভাবে কোলেস্টেরল হওয়ার প্রবণতা থাকে, তাহলে তো ভীষণ মুশকিল। তবে সঠিক ডায়েট ও লাইফস্টাইল কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কিংবা কোলেস্টেরল হওয়ার প্রবণতা থাকলে তা কমাতে সাহায্য করে।
শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভিটামিন সি ও বিটা ক্যারোটিনসমৃদ্ধ খাবার বেশি খেতে হবে।
কোলেস্টেরল কমাতে যেসব খাবার বেশি খাবেন
প্রথমেই কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কমাতে হবে। ভাত ও রুটির চেয়ে ওটস, বার্লি, ভুট্টা বেশি খাওয়ার চেষ্টা করুন।
শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভিটামিন সি ও বিটা ক্যারোটিনসমৃদ্ধ খাবার যেমন আপেল, কমলালেবু, স্ট্রবেরি, পেয়ারা, ব্ল্যাকবেরি, বাঁধাকপি, কুমড়া, গাজর, ব্রকোলি বেশি খেতে হবে। যেকোনো ধরনের বাদাম, বিশেষ করে আমন্ড ও আখরোট কোলেস্টেরল কমাতে খুবই উপকারী।
যেকোনো ধরনের বাদাম, বিশেষ করে আমন্ড ও আখরোট কোলেস্টেরল কমায়
ডায়েটে সবরকম সবুজ শাকসবজি ও ফল বেশি করে রাখুন। রসুন কোলেস্টেরল কমাতে খুবই কার্যকরী। প্রতিদিন এক কোয়া রসুন খেলে ব্যাড কোলেস্টেরল ও টোটাল কোলেস্টেরল ৯ শতাংশ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। পাশাপাশি রসুন রক্তচাপ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা রাখে।
রেড মিটের পরিবর্তে সপ্তাহে একদিন মুরগির মাংস, দুই বা তিন দিন ডিম খাওয়া উচিত। তবে প্রতিদিন যেকোনো ধরনের মাছ খেতে পারেন।
একবার কোনো তেলে রান্না করার পর সেই তেলে পরে আবার রান্না করা উচিত নয়
তেলে রাখুন নিয়ন্ত্রণ
শরীরে কোলেস্টেরলের ঝুঁকি কমাতে রান্নায় তেলের ব্যবহারের খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সেজন্য রান্নার পদ্ধতি এবং রান্নার তেল সঠিকভাবে নির্বাচন করতে হবে। একবার কোনো তেলে রান্না করার পর সেই তেলে পরে আবার রান্না করা উচিত নয়। এতে তেলের গুণাগুণ তো থাকেই না, উল্টো এটি শরীরের ক্ষতি করে।
নিয়মিত শরীরচর্চা এবং চিন্তামুক্ত থাকলে কোলেস্টেরল অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকে
সব রকম তেল মিশিয়ে খাওয়া উচিত অর্থাৎ কারো বাড়িতে যদি ৬ লিটার তেল লাগে তাহলে ২ লিটার সরিষার তেল, ২ লিটার সানফ্লাওয়ার অয়েল এবং ২ লিটার অলিভ অয়েল খেতে পারেন।
অর্থাৎ ডায়েটে স্যাচুরেটেড, আনস্যাচুরেটেড এবং পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাটের মিশ্রণের ব্যালান্স থাকলে খুব ভালো হয়।
oats
ভাত ও রুটির চেয়ে ওটস, বার্লি, ভুট্টা বেশি খাওয়ার চেষ্টা করুন
মনে চলুন কিছু নিয়ম
কর্মক্ষেত্রে, ভ্রমণে বা যেখানেই কোনো প্রয়োজনে যেতে হলে বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন।
একেবারেই যদি বাইরে খেতেই হয়, তাহলে শুকনো মুড়ি, ছোলা খেতে পারেন। শরীরে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে গেলে ওষুধ প্রয়োজন হবে। কিন্তু নিয়মিত শরীরচর্চা, সঠিক ডায়েট মানলে এবং চিন্তামুক্ত থাকলে কোলেস্টেরল অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
কোমল পানীয়, আইসক্রিম, কেক, পেস্ট্রি, চকলেট, মিষ্টি কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সপ্তাহে অন্তত চারদিন ৩০ মিনিট ব্রিক্স ওয়ার্ক বা জোড়ে হাঁটা দরকার। ব্লাড প্রেশার, ডায়াবেটিস ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ধূমপান, মদ্যপানসহ যেকোনো ধরনের নেশা বর্জন করুন।
যেসব খাবার খাবেন না
ঘি, মাখন, ডালডা, বাটার, চর্বিজাতীয় ও তেলে ভাজা খাবার বাদ দেওয়াই ভালো। কোমল পানীয়, আইসক্রিম, কেক, পেস্ট্রি, চকলেট, মিষ্টি, কেনা ফলের রস, প্যাকেটজাত খাবার কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই এসব খাবার বর্জন করুন।