পুষ্টি চাহিদা পূরণে ডিমের জুড়ি নেই। ডিম খাওয়ার সব ধরনের উপায়ের মধ্যে সিদ্ধ করে ডিম খাওয়াকে সবচেয়ে পুষ্টিকর উপায় মনে করা হয়। কারণ সিদ্ধ ডিমের ক্যালোরি মোটামুটি কম।
এতে প্রচুর পুষ্টি, প্রোটিন, ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে। আপনি যদি দ্রুত ওজন কমানোর চেষ্টা করে থাকেন তবে সিদ্ধ ডিম আপনাকে সাহায্য করতে পারে। চিকিৎসকরা বলছেন ওমলেট, পোচের তুলনায় সিদ্ধ ডিমই কিন্তু বেশি উপকারি।
গবেষণায় দেখা গেছে, সিদ্ধ ডিম দুই সপ্তাহের মধ্যে ১১ কেজি পর্যন্ত ওজন কমাতে পারে। ওজন হ্রাস ছাড়াও এই ডায়েট হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়, চুল এবং ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে ও ব্লাড সুগারকে কার্যকর উপায়ে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
সিদ্ধ ডিমের কুসুম ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমিয়ে উপকারী কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। তবে অবশ্যই নিয়ম মেনে আপনাকে ডিম খেতে হবে।
ডিমের অনেক উপকার। ডিম খেলে পেট তো ভরেই, তার সঙ্গে নানারকম পুষ্টিকর উপাদানও শরীরে যায়। চিকিৎসকদের মতে, ভাজা বা অন্য কোনও পদের চেয়ে সেদ্ধ ডিমেই বেশি উপকার। যে কোনও বয়সেই ডিম খাওয়া যায়। সব বয়সেই ডিম খেলে উপকার পাওয়া যায়।
সিদ্ধ ডিমে থাকে ৭৮ ক্যালরি, ৫ গ্রাম ফ্যাট, ২ গ্রাম সম্পৃত্ত ফ্যাট, ১৮৭ মিলিগ্রাম কোলেস্টরল, ৬২ মিলিগ্রাম সোডিয়াম, ১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ১ গ্রাম সুগার ও ৬ গ্রাম প্রোটিন। ডিম হালকা সিদ্ধ করা হচ্ছে না বেশিক্ষণ সিদ্ধ করা হচ্ছে, তার উপর পুষ্টিগুণ অনেকটা নির্ভর করছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, বেশিক্ষণ ধরে ডিম সিদ্ধ করলে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দূর করা যায়। সিদ্ধ ডিম ওজন কমাতে সাহায্য করে। সামান্য ক্যালরি থাকায় সিদ্ধ ডিম খেলে শরীরে মেদ জমে না।
শিশুরা নিয়মিত সিদ্ধ ডিম খেলে দাঁত, হাড় শক্তিশালী হয়। গর্ভাবস্থায় মহিলারা নিয়মিত সিদ্ধ ডিম খেলে তাদের ও সন্তানের উপকার হয়।
সিদ্ধ ডিম স্নায়ু ও হৃদযন্ত্র সচল রাখতে কোলিন সাহায্য করে। এটা মস্তিষ্কের মেমব্রেন ও পেশি সুগঠিত রাখতে সাহায্য করে, যা মস্তিষ্কের ঝিল্লি গঠন করতে সহায়তা করে এবং এটা স্নায়ু থেকে পেশিতে সংবেদন পৌঁছাতে সহায়তা করে।
চোখ, চুল ও নখের জন্য উপকারী: সিদ্ধ ডিম চোখের জন্য উপকারী। প্রতিদিন একটা করে সিদ্ধ ডিম খাওয়া ‘ম্যাকুলার’ ক্ষয় কমায়। কারণ এতে আছে লুটেইন ও জ্যাক্সেন্থিন।
সিদ্ধ ডিমের সাদা অংশ কোলেস্টরল কমাতে সাহায্য করে। সকালে কিছু খাওয়ার পর সিদ্ধ ডিম খেলে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়।
তাছাড়া সিদ্ধ ডিম খাওয়া চোখের ছানি হওয়ার ঝুঁকি কমায়। ডিমে উচ্চ মাত্রায় সালফার থাকায় তা ভিটামিন ডি’য়ের ভালো উৎস। যা চুল ও নখ ভালো রাখতেও সহায়তা করে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুসারে, দিনে ৩টি পর্যন্ত ডিম খাওয়ার কোনো সমস্যা নেই। সিদ্ধ ডিম খাওয়া শরীরের পক্ষে ভাল হলেও বেশি খাওয়া মোটেই ভাল নয়। যারা উচ্চরক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন তাদের বেশি সিদ্ধ ডিম বা ডিম না খাওয়াই ভাল। ইউরিক অ্যাসিডের প্রবণতা থাকলে, ডিম এড়িয়ে চলাই উচিত।
তবে ডিম শরীরের উত্তাপ বাড়িয়ে দেয় এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা উন্নত করে। তাই আপনি কোনোরকম ক্রনিক অসুখে ভুগলে ডিম খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।