শরীরের উচ্চতা বৃদ্ধি কিন্তু কোনও ম্যাজিক নয় যে রাতারাতি সেটা হয়ে যাবে। টিভির বিজ্ঞাপনে অনেক সময়ে দেখা যায় অনেক ব্র্যান্ড এমন কিছু প্রতিশ্রুতি দেয় যেন মনে হয় কয়েক সপ্তাহে উচ্চতা বেড়ে যাবে। কিন্তু আদতে ব্যাপারটা তা নয়।
অনেকক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে স্কিপিং, দৌড় ঝাঁপ, ঘণ্টার পর ঘণ্টা করেও কোনও লাভ হচ্ছে না। তখনই সন্তানের উচ্চতা নিয়ে ভাবতে বসেন বাবা মায়েরা। অনেক সময় শিশুদের শিরদাঁড়াতে ব্যথা থাকলে উচ্চতা বাড়তে ব্যহত হয়। পেশির গঠনের ওপর নির্ভর করে উচ্চতা। শরীরে অপুষ্টি থাকলে উচ্চতা বাড়ে না।
উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন পুষ্টি, ব্যায়াম। ১৮ বছর বয়সের পর আর লম্বা হওয়ার সুযোগ থাকে। উচ্চতার উপর হরমোনের প্রভাব রয়েছে। হরমোন জনিত কারণেই অনেকের উচ্চতা কম বেশি হয়। ১৬ বছরের পর মেয়েদের উচ্চতা তেমন ভাবে বাড়েনা। কিন্তু যদি খেলাধূলার মধ্যে থাকেন, তাহলে ১৮ বছর পর্যন্ত উচ্চতা বাড়ার সুযোগ থাকে।
সন্তান সুন্দর ভাবে বেড়ে উঠুক যদি চান তবে চিপস, বার্গার, কোল্ড ড্রিঙ্কস এগুলো থেকে সন্তানকে দূরে রাখুন। পুষ্টিকর খাবারের অভ্যাস গড়ে তুলুন। যেসব খাবারে প্রোটিন রয়েছেন যেমন- মাছ, মাংস, ডিম, সয়াবিন আর ডেয়েরি প্রোডাক্ট অবশ্য রাখবেন। এগুলো পেশি মজবুত করবে, হাড় শক্ত করে আর উচ্চতা বাড়াতে সাহায্য করে।
কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট যেন শরীরে বেশি না যায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। কেক, পেস্ট্রি, সোডা, মিষ্টি এই সবের থেকে দূরে থাকাই ভালো। ভিটামিন ডি আর ক্যালসিয়াম যেন শরীর পায়। ক্যালসিয়ামের জন্য সবুজ সবজি, ডেয়ারি প্রোডাক্ট খেতে পারেন। গবেষণায় দেখা গেছে যে জিঙ্ক খুব ভালো উচ্চতা বাড়ায়। তাই জিঙ্ক আছে এমন খাবার যেমন বাদাম ও কুমড়া রাখুন খাবারে। ১৮ বছরের পরও ডায়েট চার্টে রাখুন ক্যালশিয়াম, ভিটামিন বি১২, ভিটামিন ডি, প্রোটিনে ভরা খাবার।
যাদের উচ্চতা প্রথম থেকেই কম, ১৮ বছর বয়সের মধ্যেই লম্বা হওয়ার যাবতীয় কৌশল প্রয়োগ করে ফেলতে হবে। রুটিনের মধ্যে নিয়ে আসুন জীবনযাত্রা। নিয়মিত খেলাধূলা শরীর চর্চা করুন। অ্যারোবিক ডান্সের অভ্যাস করতে পারলে খুবই ভালো। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম। হরমোনের সমস্যা থাকলে ডাক্তার দেখিয়ে নিন।
স্ট্রেচিং ব্যায়াম উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য খুবই কার্যকর। আপনি আপনার বাচ্চাকে বলতে পারেন দেওয়ালের দিকে উলটো দিক করে দাঁড়াতে পিঠে ভর দিয়ে। তারপর হাত সামনের দিকে বাড়িয়ে স্ট্রেচ করতে। আবার একই ভাবে দেওয়ালের দিকে উলটো দিক করে পিঠে ভর দিয়ে পায়ের আঙ্গুলের উপর বসুক। তারপর যতখানি সম্ভব নিজের পায়ের পেশি স্ট্রেচ করুক।
এভাবে দশ বার করে দিনে দু বার করুক। আরেকটা ব্যায়াম আছে খুব ভালো। মাটিতে আপনার বাচ্চাকে শুতে বলুন চিত হয়ে। তারপর কোমর পর্যন্ত উঠে পায়ের বুড়ো আঙুল ধরতে বলুন। এতেও কিন্তু খুব ভালো পেশি বৃদ্ধি হয়।
প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কারও কাছে শিখে রোজ যোগব্যায়াম করুন। নিয়মিত যোগাভ্যাস উচ্চতা বাড়বে। মেয়েদের বা ছেলেদের বয়স যখন ১৪ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে, তখন থেকেই শুরু করে দিন এই রুটিন।
অন্যদিকে স্কিপিং বাচ্চাদের খুব প্রিয় একটা খেলা। এতে অনেক বার বাচ্চাকে শূন্য থেকে উপরে উঠতে হয়। ফলে কিছু ইঞ্চি উচ্চতা বাড়ার সম্ভাবনা সব সময় থেকেই যায়। তাই বাচ্চাদের প্রতিদিন এই অভ্যাসগুলো চালিয়ে যেতে বলুন।