অধিকৃত গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি আ’গ্রা’সনের প্রতিবাদে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবাদ বিক্ষোভ অব্যাহত থাকলেও এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কয়েকটি আরব দেশ কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
গত বছর ইসরাইলের সঙ্গে সন্ধি চুক্তি করা বাহরাইন, মরক্কো এবং সুদান এখনও ইসরাইলি বর্বরতার কোনো নিন্দা জানায়নি। আমিরাতের পক্ষ থেকে ইসরাইলের হা’ম’লা’র নিন্দা জানানো হলেও এবার হামাসের জন্যও কঠিন শব্দ ব্যবহার করেছে তারা।
আরব আমিরাত কিছু ক্ষেত্রে গাজার নিয়ন্ত্রণে থাকা হামাসেরও সমালোচনা করছে, আর তাতে যেন ইসরাইলের কথারই প্রতিধ্বনী থাকছে। আর এ দেশগুলোর নীরবতাকেই আরব বিশ্বে ভাঙনের প্রথম ধাপ হিসাবে উল্লেখ করেছে দ্য গার্ডিয়ান।
ইসরাইল বনাম হামাস লড়াই বন্ধে কী করা উচিত এ নিয়ে আরব বিশ্বে অনৈক্যের আভাস পেয়েছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। যেখানে তুরস্ক ও ইরানের মতো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কয়েকটি দেশ গাজায় ইসরাইলের নৃশংস ব’র্ব’রতার নিন্দা জানিয়ে তা বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছে, সেখানে এবারই প্রথম উপরোক্ত দেশগুলো এ বিষয়ে সম্পূর্ণ নীরব রয়েছে।
যদিও এর আগে তাদের ভূমিকা এমন ছিল না। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের করা ইসরাইলের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা নীতি এবং তথাকথিত আব্রাহাম অ্যাকর্ড চুক্তি অমান্য হওয়ার ভয়েই নিশ্চুপ রয়েছে আলোচ্য দেশগুলো।
আর এ কারণেই সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মরক্কো এবং সুদানের জনগণের মধ্যে সাম্প্রতিক ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদ শুরু হলেও দেশগুলো কৌশলে তা স্তিমিত করে রেখেছে।
গত বছর সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের এবং তারপর সুদান ও মরক্কো ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিলে তার নিন্দা জানায় ফিলিস্তিন। তাদের বক্তব্য হচ্ছে এসব দেশ একটি ঐক্যের অবস্থান থেকে সরে গেছে, যার মূল কথা ছিল- শান্তি তখনই সম্ভব যখন ইসরাইল দখলকৃত এলাকা থেকে সরে যাবে।
তেল সমৃদ্ধ পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের যে দেশগুলো গত বছর ইসরাইলের সঙ্গে সন্ধি করেছে, তারাও গাজায় হ’ত্যা’-হা’ম’লা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে, কিন্তু কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা তারা কেউ এখনও বলেনি।
জেরুজালেমে আল-আকসা মসজিদে ইসরাইলের পুলিশের অভিযান এবং গাজা উপত্যাকায় বিমান হা’ম’লা- এসব ঘটনাকে ইসরাইলের ‘নির্ল’জ্জ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ’ আখ্যায়িত করে তার নিন্দা জানিয়েছেন আরব দেশগুলোর কর্মকর্তারা। তবে সেখানেও সূক্ষ্মভাবে তারা ভারসাম্য বজায় রেখে চলেছেন।
রিয়াদের তরুণ আবদুর রহমান আল-তোয়াজরির মতে, যেসব আরব দেশ ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক করেছে, তাদের আবারও সেটা ভেবে দেখা উচিত, কারণ ইসরাইল প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে বলে তার বিশ্বাস হয় না।