‘আমার বয়স ১০, আমার কী ক্ষমতা আছে?’ ধ্বংসস্তূপে অসহায় শিশুর কান্না

ইসরায়েলি বিমান হামলায় ১০ বছরের নাদিন আবদেল-তাইফের বাড়ি এখন ধ্বংসস্তূপ। চোখের সামনে বোমাবর্ষণে পরিজন-প্রতিবেশীর মৃত্যু দেখছে গাজা উপত্যকা এলাকার বাসিন্দা শিশুটি। এই ‘যুদ্ধ’ থামানোর ক্ষমতা নেই অসহায় শিশুটির। ধ্বংসস্তূপের দিকে দেখিয়ে অসহায় কান্নায় ভেঙে পড়ে নাদিন বলছে, ‘কী করব আমি? আমার কী ক্ষমতা আছে? আমার বয়স মাত্র ১০ বছর…।’ নাদিনের ওই কান্নার ভিডিও এখন অনলাইনে ভাইরাল।

ভিডিও-তে সংবাদমাধ্যম ‘মিডল ইস্ট আই’-কে ছোট্ট নাদিন কাঁদতে কাঁদতে বলছে, কী করব আমি, বলুন? ওই ধ্বংসস্তূপ সরাব? আমার সত্যিই ভয় করছে। আমার লোকেদের জন্য আমি সব কিছু করতে পারি। কিন্তু কী করা উচিত এখন, সেটাই তো বুঝতে পারছি না। আমি বড় হয়ে ডাক্তার হতে চাই, যাতে লোকজনকে সাহায্য করতে পারি। কিন্তু, কিছুই করে উঠতে পারছি না।

নাদিনকে আরো বলতে শোনা যায়, যখনই এসব দেখি, আমার কান্না পায়। শুধু ভাবি, কেন আমাদের ওপরই হামলা হচ্ছে? বাড়ির লোকেরা বলে, আমরা মুসলিম বলে ওরা আমাদের ঘৃণা করে। এখানে এত শিশু থাকে। কেন শিশুদের দিকে মিসাইল মারছে ওরা?

সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, রোববার পর্যন্ত কেবল গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে শিশুর সংখ্যা ৫৫। এ ছাড়া ৩৩ জন নারীও নিহত হয়েছেন। আর, হামলায় এখন পর্যন্ত মোট এক হাজার ২৩০ জন আহত হয়েছে।

ইউনিসেফ বলছে, গাজায় সর্বনিম্ন ছয় বছর বয়সের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। যদিও সাধারণ নাগরিকদের ওপর হামলা চালানোর কথা বরাবরই অস্বীকার করে যাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলেও দুই শিশুর মৃত্যুর খবর মিলেছে। তার মধ্যে একজনের বয়স ছয় বছর।

সম্প্রতি ইসরায়েল ফিলিস্তিনের জেরুসালেমে আল জাররাহ এলাকা দখলে নেয়ার প্রচেষ্টা চালায়। এ নিয়ে সেখানকার ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের মধ্যে থেমে থেমে উত্তেজনা চলে আসছিল। গত ৭ মে পবিত্র মাহে রমজানের শেষ জুমা অর্থাৎ জুমাতুল বিদা আদায় করতে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি আল-আকসা মসজিদে সমবেত হলে ইসরায়েলি বাহিনী তাদের ওপর চড়াও হয়। মসজিদে ঢুকে মুসল্লিদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে ইসরায়েলি বাহিনী। এর দুদিন পর শবে কদরেও আল-আকাসা মসজিদে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে মুসল্লিদের সংঘর্ষ হয়। এর প্রতিবাদে গাজা সীমান্তে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে গত সোমবার থেকে গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।