তালা’ক পাওয়ার খুশিতে ৩ মণ দুধ দিয়ে গোসল করলেন স্বামী

টা’’ঙ্গাইলের মধুপুর উপজে’লায় স্ত্রী’র কাছ থেকে তালাকের নোটিশ পেয়ে খুশিতে দুধ দিয়ে গোসল করলেন স্বামী আলম (১৮)।

আনন্দে দুই শতাধিক প্রতিবেশীকে দাওয়াত দিয়ে ভুরিভোজ করিয়েছেন তিনি। সোমবার উপজে’লার জা’’ঙ্গালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। উপজে’লার জা’’ঙ্গালিয়া গ্রামের মৃ’’ত নয়ন মিয়ার ছে’লে আলমকে একই গ্রামের মো. আনোয়ার হোসেনের মে’য়ে রিনা আক্তার (১৬) তা’লাকের নোটিশ পাঠালে এ কা’ণ্ড ঘটান।

এদিকে তালাকের নোটিশ পেয়ে আলমের দুধ দিয়ে গোসলের বি’ষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সেই স’’ঙ্গে দুধ দিয়ে গোসল করার ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাই’রাল হয়।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মধুপুর উপজে’লার জা’’ঙ্গালিয়া গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা ও পারিবারিক শিক্ষা একেবারেই তলানিতে।

এখানে বসবাসরত অর্ধেক বাসিন্দা গারো আর বাঙালি। উপজে’লার চারদিকে শালবন। দুই দশক আগেও গ্রামের অধিকাংশ মানুষের প্রধান পেশা ছিল বনের গাছ চু’রি। বর্তমান সরকারের সময়ে উপজে’লায় কিছুটা উন্নয়নের ছোঁয়া লাগায় সড়ক হয়েছে পাকা, বিদ্যুৎ পেয়েছে অনেক পরিবার।তবে নারী শিক্ষা ও পারিবারিক শিক্ষার অবস্থা করুণ।

অধিকাংশ পরিবারে হয় বা’ল্যবিয়ে। এরই ধা’রাবাহিকতায় উপজে’লার জা’’ঙ্গালিয়া গ্রামের মৃ’’ত নয়ন মিয়ার ছে’লে আলমের স’’ঙ্গে একই গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মে’য়ে রিনার প্রে’মের স’ম্পর্ক গড়ে ওঠে। বি’ষয়টি জানতে পেরে তিন মাস আগে আলমের স’’ঙ্গে রিনার বিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বিয়ের এক মাস পার ’’হতে না ’’হতেই নে’শা করা নিয়ে স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়।

এ মনোমালিন্যের একপর্যায়ে স্বামী আলমকে তালাক দেয় স্ত্রী’ রিনা। ওই গ্রামের মুরুব্বি ছামা’দ বলেন, যৌ’’তুক থেকে বঞ্চিত হওয়ায় এই বিয়ে মেনে নিতে পারেনি আলমের পরিবার। ফলে বিয়ের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী নিমন্ত্রণ থেকে বঞ্চিত হয় গ্রামবাসী। বিয়ের পর উভ’য় পরিবারে দেখা দেয় অশান্তি।

অশান্তি নিরসনে বেশ কয়েকবার সালিশ ডা’কা হয়। তবে কোনো সুরাহা হয়নি। এ নিয়ে গ্রামে উত্তে’জনা দেখা দেয়। শেষ পর্যন্ত রোববার তালাকনামা পাঠায় স্ত্রী’ রিনা। এতে স্বামী আলমসহ তার পরিবারের লোকজন খুশি হয়। দীর্ঘদিনের বিরোধপূর্ণ বি’ষয়টি তালাকে নিষ্পত্তি হওয়ায় বাজার থেকে তিন মণ মহিষের দুধ কিনে আনে আলম।

সেই দুধ দিয়ে আলমকে গোসল করানো হয়। সেই স’’ঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আনন্দে সোমবার দুপুরে গ্রামের দুই শতাধিক মানুষকে আলমের বাড়িতে ভুরিভোজ করানো হয়। এ বি’ষয়ে আলম বলেন, এর আগে গো’পনে আরেকটি বিয়ে হয়েছিল রিনার। ওই বিয়ের বি’ষয়টি তার পরিবার গো’পন রেখেছিল।

তালাকের মাধ্যমে গ্রামে শান্তি ফিরে আসার আনন্দে দুধ দিয়ে গোসল করেছি আমি। সেই স’’ঙ্গে গ্রামের দুই শতাধিক মানুষকে আমা’দের বাড়িতে ভুরিভোজ করানো হয়েছে। তবে রিনার দাদা মুক্তার হোসেন বলেন, আলম একজন মা’দকাসক্ত যুবক। প্রায়ই রিনাকে নি’র্যাতন করতো।

এজন্য বৈধ নিয়মে আলমকে তালাক দিয়েছে রিনা। রিনার বাবা আনোয়ার হোসেন বলেন, আলম কামাই-রোজগার করে না। উল্টো নে’শা করে মাতলামি করে। মে’য়ে তার সংসার করবে না বলে তালাক দিয়েছে। এতে আম’র’া খুশি। স্থানীয়রা জানান, একসময় কোনো শুভ খবরে দুধ ঢেলে আপনজনকে আশীর্বাদ করা ছিল পাহাড়ি গারো সমাজের প্রচলিত নিয়ম।

ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোচরা নতুন বধূকে বরণে দুধে স্নান করায়। বিচ্ছেদ হওয়া স্বামী-স্ত্রী’র স’ম্পর্ক পুনরায় একত্রীকরণ হলে দুধ ঢেলে আশীর্বাদের রেওয়াজ এখনো রয়েছে। যাতে সারাজীবন টিকে থাকে সেই স’ম্পর্ক। কিন্তু তালাকের নোটিশ পেয়ে খুশিতে দুধ দিয়ে গোসলের ঘটনা বিরল।