সম্প্রতি রাজধানীর গুলশা;নের একটি ফ্ল্যাটে আ;;ত্মহ;;ত্যা করা মোসারাত জাহান মুনিয়ার ঘটনায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে দাবী করা হয় সে মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ে যোগাযোগ করা হয় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান অধ্যক্ষ লেফটেন্যান্ট কর্নেল জি এম আসাদুজ্জামান, পিএসসির সঙ্গে। তিনি গণমাধ্যমকে বিষয়টি পরিস্কার করেছেন। তিনি বলেছেন, মুনিয়া তার প্রতিষ্ঠানে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী ছিলেন না। মুনিয়া ২০১৮ সালে তার প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হলেও মাত্র ১০ দিন ক্লাসে অংশ নেয়।
এমনকি প্রথম বর্ষের ষান্মাসিক পরীক্ষায় মোট ৬০০ নম্বরের পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মাত্র ১৭ নম্বর পায়। পরে একাদশ শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ না নেওয়ায় তাকে দ্বাদশ শ্রেণীতে উত্তীর্ণের অনুমতি দেয়নি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। ফলে তাকে প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী বহিষ্কারের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ট্রান্সফার সার্টিফকেট-টিসি নেওয়ার জন্য মুনিয়ার বাবা-মায়ের অবর্তমানে তার বড় বোন নুসরাত জাহানকে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অসংখ্য বার টেলিফোন করা হয়। কিন্তু তিনি কোনো সাড়া না দেওয়ায় তাদের কাছে টিসি দেওয়া সম্ভব হয়নি প্রতিষ্ঠান কর্তৃপেেক্ষর। এজন্য মুনিয়া কাগজে-কলমে প্রতিষ্ঠানটির ছাত্রী হিসেবে থাকলেও মূলত তাকে অনেক আগেই বহি;ষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় প্রতিষ্ঠানটি। ফলে সে কোনভাবেই উক্ত প্রতিষ্ঠানের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী নয় বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল জি এম আসাদুজ্জামান, পিএসসি। প্রতিবেদকের কাছে দেওয়া তার বক্তব্যের পুরো অংশ পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো।
প্রতিবেদক: মোসারাত জাহান মুনিয়া কি আপনার প্রতিষ্ঠানের ছাত্রী ছিল?
অধ্যক্ষ: দেখুন মুনিয়া ২০১৮ সালে মেট্রিক পাশ করার পর আমাদের এখানে ভর্তি হয়। সে মানবিকে ভর্তি হয়। ভর্তি হওয়ার পর থেকে সে খুবই অনি;য়মিত ছিল। ক্লাসে অংশগ্রহণ করত না। ভর্তি হওয়ার পর থেকে সর্বসাকুল্যে সে দশ দিন ক্লাসে অংশ নিয়েছে। ভর্তির বছর হাফ ইয়ারলি পরীক্ষায় মোট ৬০০ নম্বরের পরিক্ষায় সে সর্বসাকুল্যে ১৭ নম্বর পেয়েছিল। ইয়ারলি পরীক্ষায় সে অংশ নেয়নি। যার কারণে আমাদের প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী তাকে পরবর্তীতে দ্বাদশ শ্রেণীতে প্রমোশন দেওয়া হয়নি।
প্রতিবেদক: সেক্ষেত্রে তার বিষয়ে সে সময় প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত কী ছিল?
অধ্যক্ষ: তখন কলেজের নিয়ম অনুযায়ী তাকে ছাত্রত্ব বাতিলের-টিসি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে টিসি দেওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষা বোর্ড থেকে একটা পারমিশনের দরকার হয়। আমরা তার অভিভাবকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। কিন্তু তারা কোনো সাড়া দেয়নি। বিশেষ করে তার বড় বোন নুসরাত জাহানকে অনেকবার টেলিফোন করেছি। তাদেরকে আমরা বলেছি টিসি নিতে। কিন্তু তারা আমাদের কথায় সাড়া দেয়নি, এমনকি টিসি গ্রহণ করেননি। এই কারণে মুনিয়ার বিষয়টি ওই ভাবেই আছে। যেহেতু অভিভাবক টিসি গ্রহণ করেননি শুধু সেই খাতিরে বলতে হয় সে আমাদের ছাত্রী। ফর্মালি টিসি গ্রহণ করলে সে আমাদের এখানে ছাত্রী হিসেবে থাকতো না। এক্ষেত্রে আপনারা তাকে বলতে পারেন ঝরেপড়া শিক্ষার্থী।
প্রতিবেদক: কাগজে কলমে মুনিয়ার বয়স ২৩ বছর। অপরদিকে তার পরিবার দাবী করেছে সে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। কীভাবে?
অধ্যক্ষ: দেখুন মুনিয়া সেই ২০১৮ সালের পরে আর স্কুলে আসেনি। সে মূলত অটো পাশের বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল। ওদের ব্যাচ ২০২০ সালে পরীক্ষা দিয়ে বের হয়ে গেছে। সেই হিসেবে মুনিয়া অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী থাকার কথা এবছর। সে তো প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়ার পর থেকে দ্বাদশ শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হতে পারেনি, ফলে সে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি।
তার মূল অভিভাবক হিসেবে বাবা-মা ছিলনা বলেই তার এই অবস্থা বলে উল্লেখ করেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ। এমনকি তার ভাই-বোনেরা পরস্পর পরস্পরের বি;রুদ্ধে স;ম্পত্তি নিয়ে মা;মলা করতে দেখা গেছে। ফলে তাদের নিজেদের মধ্যেও সম্পর্কের যথেষ্ট অবনতি হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।