বগুড়ার ধুনটে ভিজিডি কার্ডধারী দুস্থ, অসহায় নারীরা ব্যাংকে জমাকৃত সঞ্চয়ের টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। ফলে আর্থিক সংকটে পড়ে এসব পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে এ উপজেলার ১০ ইউনিয়নে ভিজিডি কার্ডধারী দুই হাজার ৪৮৬ জন দুস্থ, অসহায় নারী ছিল।
দুই বছরের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা তাদের সুবিধাভোগী নির্বাচিত করেন। সরকারি বিধি মোতাবেক এসব ভিজিডি কার্ডধারীরা নিজ নিজ নামে ব্যাংক এশিয়া ধুনট শাখায় সঞ্চয়ী হিসাব খোলেন। প্রতি মাসে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ভিজিডি কার্ডের ৩০ কেজি করে চাল উত্তোলনের সময় তারা ২০০ টাকা করে ওই ব্যাংকের সঞ্চয় হিসাব নম্বরে জমা করেন।
গত ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে তাদের ভিজিডি কার্ডের মেয়াদ দুই বছর পূর্ণ হয়। ফলে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে সুবিধাভোগীদের সঞ্চয়ের টাকা সুদসহ আসল ফেরত দেয়ার নিয়ম। এ উপজেলার ১০ ইউনিয়নের মধ্যে মথুরাপুর ইউনিয়নের ২৮৩ জন এবং ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের প্রায় ১০০ জন ভিজিডি কার্ডধারী তাদের টাকা আজও ফেরত পাচ্ছেন না। অথচ অন্যান্য ইউনিয়নের ভিজিডি কার্ডধারীরা তাদের সঞ্চয়ের টাকা ফেরত পেয়েছেন।
মথুরাপুর ইউনিয়নের ভিজিডি কার্ডধারীরা জানান, গত দুই বছরে কার্ডের চাল নেয়ার সময় প্রতি মাসে ২০০ টাকা করে সঞ্চয়ের জন্য জমা দিয়েছি। এক টাকা কম হলে তারা চাল আটকে দিতো। মেয়াদ শেষে লাভসহ সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দেয়ার কথা থাকলেও ব্যাংক কর্মকর্তা তালবাহানা করছেন। এদিকে করোনা দুর্যোগের কারণে আর্থিক সংকটে পড়ে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ সেলিম বলেন, এ বিষয়ে ব্যাংকের শাখা কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনো কাজ হয়নি। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ব্যাংক এশিয়া এজেন্ট ব্যাংকিং ধুনট শাখার কাস্টমার সার্ভিস অফিসার তৌহিদুর রহমান বলেন, করোনা দুর্যোগের কারণে ভিজিডি কার্ডধারীদের সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দিতে বিলম্ব হচ্ছে। তবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সমুদয় টাকা ফেরত দেয়া হবে।
ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে ভিজিডি কার্ডধারীদের সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দেয়ার জন্য রোববার ব্যাংক কর্মকর্তাকে চিঠি দেয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দুস্থ নারীরা তাদের জমাকৃত টাকা ফেরত না পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।