বড় বোনের লো’ভের স্বীকার মুনিয়া

রাজধানীর অভি’জাত এলাকা গুল’শানের একটি ফ্ল্যাট থেকে গত ২৬ এপ্রিল মো’সা’রাত জাহান মুনিয়া (২১) নামে এক ত’রুণীর ম’র’দেহ উ’দ্ধা’র করা হয়। এ সম্প’র্কে বহু তথ্য এসেছে পু’লিশের কাছে। পু’লি’শ প্রা’প্ত তথ্য’গু’লো যাচাই-বাছাই করে এসব ঘট’নার সঙ্গে মুনিয়ার আ’ত্ম’হ’ত্যার সংযোগ আ’ছে কি না তা খতিয়ে দেখছে।

এদিকে নি’হ’ত মুনি’য়ার বড় চাচা চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী মো. শাহদাত হো’সেন সেলিম দাবি করেছেন, আমার ভাতিজি নুসরাত জাহান ও তার স্বামী মেঘনা ব্যাংকের কর্মকর্তা মিজানুর রহ’মান সানির অতি লো’ভের বলি হয়েছে মুনি’য়া।

তারা মুনি’য়া’কে তা’দের স্বা’র্থে ব্যব’হার করেছে। আ’মাদের স’ঙ্গেও মিশতে দিত না। কুমি’ল্লা সদর দক্ষিণের জা’ঙ্গা’লিয়া দৈয়া’রা গ্রা’মের ছেলে মি’জা’নকে ‘অ’সভ্য’ অভি’হিত ক’রে মুনি’য়ার চা’চা সেলি’ম বলেন, ‘পরিবা’রের অ’মতে নুস’রাত বি’য়ে করে মিজা’নকে।

এর’পর সে আ’মার ছোট ভাতি’জি মুনি’য়াকে দিয়ে ধন-সম্পদ অর্জনের হাতি’য়ার হিসেবে ব্যবহা’র করা’র চেষ্টা করে। যার পরি’ণতিতে আজ’ মুনিয়ার করু’ণ মৃ’ত্যু হয়েছে।নি’হ’ত মুনি’য়ার স্থায়ী ঠিকানা কুমি’ল্লার কো’তোয়া’লি থা’নার ম’নোহ’রপুর এলা’কার উজির দী’ঘির দক্ষি’ণপা’ড়ে।

গত’কাল বৃহ’স্পতিবার ওই বাড়িতে গিয়ে এলা’কাবা’সীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মুনি’য়া নবম শ্রেণিতে পড়ার স’ময় কু’মি’ল্লা শহ’রের ৬নং ওয়া’র্ডের শুভ’পুর এলা’কার নিলয় নামে এক যু’ব’কের সঙ্গে পা’লিয়ে যায়।

নিলয় বিবাহিত, দুই সন্তানের জনক। কি’ন্তু মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে কুমিল্লা কো’তোয়া’লি থা’নায় নি’লয়’কে আ’সা’মি করে না’রী ও শিশু নি’র্যা’তন দমন আ’ইনে মা’ম’লা করেন। ঘ’ট’নাটি ২০১৪ সালের। ওই সময় মুনি’য়ার মা-বাবা জী’বিত ছিলেন।

ওই মা’ম’লায় বলা হয়, ‘আ’মার অপ্রা’প্ত বয়’স্ক বোনকে ফুসলিয়ে অ’প’হরণ করে অ’জ্ঞাত স্থানে নিয়ে তার সম্ভ্র’ম লুটসহ জা’নমা’লের ভ’য়া’বহ ক্ষ’তির শ’ঙ্কা করছি। অবি’লম্বে নিলয়’কে গ্রে’প্তার’পূর্বক মু’নিয়া’কে উ’দ্ধা’রক’ল্পে প্রয়ো’জ’নীয় আই’না’নুগ ব্য’বস্থা গ্রহণের আ’বেদন জা’নাচ্ছি।

ওই মা’ম’লার সাড়ে তিন মাস পরে কু’মিল্লার কোতোল থানা পুলি’শ ফেনীতে নিলয়ের এক আ’ত্মী’য় বাড়িতে অভিযান চালিয়ে উ’দ্ধা’র করে আনে মুনি’য়াকে। পরে স্থানী’য়’দের ম’ধ্যস্থ’তায় গ্রা’ম্য বৈ’ঠকে মোটা অঙ্কের জরি’মানা আদা’য়ের মা’ধ্যমে নি’লয়-মুনিয়া’র বিয়ে বিচ্ছেদ ঘ’টানো হয় এবং যে যার পরিবারে ফিরে যায়।

এরপর নুসরাত ঢাকায় পাঠিয়ে দেন মুনিয়া’কে।মুনি’য়ার বড় ভাই আশি’কুর রহমান সবুজ এই প্রতিবে’দককে বলেন, মুনিয়া ঢাকায় এসে একটি না’রী হো’স্টেলে থাকত।মুনিয়ার একা’ধিক আ’ত্মী’য় বলেন, এ সম’য় তার বড় বোন নুস’রা’তের উৎসাহে ও জনৈক হিরু মিয়া’র মাধ্যমে শোবিজ জগতে যাতা’য়াত শুরু হয় মুনিয়ার।

তার সঙ্গে পরিচয় হয় সিনেমার একজন পরিচিত নায়কের। এছাড়া একজন পরিচালক তাকে নায়িকা বানানোর স্বপ্ন দেখিয়ে ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবে নিয়ে যান।তবে মুনি’য়ার ভাই সবুজ দাবি করেন, শুরু থেকেই এসব অপছন্দ করতেন তিনি। কুমিল্লায় একটি আ’য়ুর্বেদিক কোম্পা’নিতে সেল’সম্যা’নের চাকরি করা স’বুজ জান’তেন না মুনিয়া কো’থায় থাকে, কী করে।

এমনকি তার মৃ’ত্যুর খব’রও শুরু’তে সবু’জকে দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেন তিনি। তিনি জানতে পারেন পরি’চিত’জনের মাধ্যমে। পরে তিনি নুসরা’তকে ফোন দেন বিস্তারিত জানার জন্য। সবুজ বলেন, ওই সময়ও নুসরাত অনেক তথ্যই গো’পন করে আমার কাছে।

সবুজ গণ’মা’ধ্যমকে বলেন, ‘আমা’দের পৈ’তৃক সম্পত্তির সমান ভাগ নিয়ে নুসরাত আমি, আমার চাচা, চাচিসহ কয়ে’কজ’নকে আ’সামি করে মা’ম’লা করে। মা’ম’লার কার’ণে স্বাভা’বিক’ভাবে’ই নু’সরাত ও মুনিয়ার সঙ্গে আ’মার দূরত্ব তৈরি হয়।

ওই মা’ম’লা এখনো শেষ হয়নি। তবে সমাধা’নের চেষ্টা চলছে। মুনিয়া নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় শুভ’পুরের নিলয় নামে এক যু’বকে’র সঙ্গে পালা”নোর বি’ষয়ে জানতে চাইলে সবুজ বলেন, ‘তখন মুনি’য়ার বয়স ছিল কম। সে আবেগে পড়ে ভু’ল করেছে।

আমরা পরে সামাজিকভাবে সেটার সমাধান করেছি।বুজ জানান, তার বাবা মু’ক্তি’যো’দ্ধা শফিকুল ইস’লাম মা’রা যান ২০১৫ সালে আর মা মা’রা যান ২০১৯ সালে। এরপর থেকে মুনিয়া সম্পূ’র্ণভা’বে নুস’রাত ও তার স্বামী’র নিয়’ণে ছিল।

ছোট বো’নের এ পরি’ণতির জন্য সবুজ নিজেও তার বোন নুসরাত ও তার স্বামীকে দায়ী করেন। সুবজ বলেন, ‘সেলিম চাচা আমা’দের পরিবারের অ’ভিভা’বক। ছোট চাচা সাজ্জাদ অ’সুস্থ। আমরা যা করার সেলিম চাচার পরা’ম’র্শেই করব।

মুনিয়ার আ’ত্মী’য়রা বলছেন, বাবা-মার মৃ’ত্যুর পর এই বোন-ভগ্নি’পতি’ই ছিলেন মুনিয়ার এক’মাত্র অভিভাবক। টাকার লো’ভে তারা মুনিয়ার জীবন কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন সেটা এক’বার জা’নারও চে’ষ্টা করেননি। বরং ছো’ট বোনকে যথে’চ্ছা’চার করার, যেখানে-সেখানে থাকার স্বা’ধীনতা দিয়ে বোন-ভগ্নি’পতি হাতিয়ে নিয়ে’ছেন মো’টা অ’ঙ্কের অর্থ।

পুলি’শ সূত্রে’র ধারণা, মুনি’য়ার ফ্ল্যাট থেকে ৫০ লাখ টাকা খোয়া যাও’য়ার যে অভি’যোগ উত্থা’পিত হয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অডিও রেকর্ডে, এ টাকাও মুনিয়ার হাত ঘু’রে তার বো’ন-ভগ্নি’পতি’র ঘরে পৌঁছে থা’কতে পারে। পুলি’শ বিষ’য়টি ত’দন্ত করছে বলেও ওই সূত্র জানিয়েছে।

শোবি’জপা’ড়ার ক’র্মী জ’নৈক বা’প্পীরা’জ নিজেকে মুনিয়ার সাবেক প্রেমিক দাবি করে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মুনি’য়ার সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয় ফেই’সবুকে। আমি তাকে পাগ’লের মতো ভালো’বাস’তাম। তাকে বিয়ে করতে চেয়েছিলাম। আমার পরিবারও বিষয়টি জানত। আমার সঙ্গে তার সর্ব’শেষ কথা হয় ২০২০ সালে’র ফেব্রু’য়ারি’তে।

আমি এখ’নো খুল’নাতে আছি। আমার সঙ্গে তার সাম’না’সামনি পরিচয় হয় ২০১৭ সালে হাতির’ঝিলে। সে তখন বনানী বা গুল’শানের দিকে থাকত। প্রথম যেদিন কথা হয় ওই’দিন সে তার এক বা’ন্ধ’বীকে নিয়ে আমাদের আড্ডায় আসে। সে বি’ড়াল পছ’ন্দ করত। আমিও বিড়াল পছ’ন্দ করি। এসব নিয়ে শুরুতে আমা’দের ঘনি’ষ্ঠতা হয়। আমরা প্রায় প্রতি’দিনই দী’র্ঘ সময় ধরে কথা বলতাম।

আ’মরা প্রা’য়ই আ’রজু, কু’তুব আরও কয়েকজন মিলে মাওয়া’সহ ঢাকার বিভিন্ন এলা’কায় যেতাম। আ’মরা রাত-বিরাতে অনেক আ’ড্ডা দিতাম। হঠাৎ সে ফে’ইসবুকে আমা’কে ব্ল’ক করে দেয়। আমার বা’প্পী’রাজ আইডি থেকেই তার সঙ্গে কথা হতো বেশি। সে বেশ হাসি’খুশি ছিল। সে আমাকে আ’ন্ত’রিকভাবে সময় দিত। সে মো’র বিউটিফুল। আমি তাকে মন থেকে পছন্দ করতাম।

বাপ্পী বলেন, ‘আ’মার বাড়ি বাগে’র’হাটের কা’খালী’তে। আমি এখন সেখা’নেই থাকি। বাবা’র ব্যবসা দেখা’শোনা করি। ওর বোনের (নুসরাত) সঙ্গেও ফেই’সবুকে আমার কথা হয়েছে। আ’গের আই’ডিটি এখন আর নাই।

বা’প্পী আরও বলেন, ‘স’ম্পর্কের গভী’র’তার মধ্যেই হঠাৎ না বলে কো’থায় যেন হারিয়ে গে’ল মেয়েটি। না পাওয়ার বিষয়টি সামনে চলে আসল। আমি জা’স্ট ভু’লেই গেছি’লাম ওকে। তারপর গত বছর মার্চের দিকে ওর সঙ্গে আ’মার আবার কথা হয়েছিল। আলাপের এক’পর্যায়ে স্মৃতি’কাতর হয়ে ওঠেন বাপ্পীরাজ। তিনি বলেন, ‘মুনি’য়া দেখতে অনেক সুন্দর ছিল। আমি মন থেকে ওকে চেয়েছিলাম।’ সূত্র: দেশ রুপান্তর