এবার কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বেল!

দেশে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও পটাশিয়াম সমৃদ্ধ ফল বেলের চাহিদা সারাবছরই রয়েছে। বিশেষ করে বয়স্কদের কাছে বেলের কদর সব থেকে বেশি। ভিটামিন সি গ্রীষ্মকালীন বহু রোগবালাই দূরে রাখে। তাই গ্রীষ্মকালেই বেলের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। আর রমজানে ইফতারে বেলের শরবতে রোজাদারদের রয়েছে আলাদা এক তৃপ্তি।

সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারে এক গ্লাস বেলের শরবত দূর করে দেয় রোজাদারের সকল ক্লান্তি।একদিকে সারাদেশে প্রচণ্ড দাবদাহ, অন্যদিকে চলমান পবিত্র রমজান মাস। আর এ সময়ে বেলের চাহিদাটাকে পুঁজি করে একটা বিশেষ সিন্ডিকে’টে বেশি মুনাফার আশায় বেছে নিয়েছে অসাধু পন্থা।

সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে তরমুজ ও কাঁঠাল বিক্রি হতে দেখা গেছে কেজি দরে। আর সেই ধারাবাহিকতায় এবার বরগুনায় কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বেলও। কৃষক ও পাইকারি পর্যায় থেকে পিস দরে কিনে তা কেজি দরে বিক্রি করায় ঠকছেন সাধারণ ক্রেতারা। সরেজমিন বরগুনার বাজারে ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।

তবে কেজি দরে বেল বিক্রি করতে গিয়ে অনেক খুচরা বিক্রেতাও সন্তুষ্ট হতে পারছেন না। তাদের মতে কেজি দরে বেল বিক্রি করাতে খুচরা পর্যায়ের বিক্রেতা ও সাধারণ ক্রেতারাই ঠকছেন। আর লাভবান হচ্ছে কেবল মধ্যস্বত্বভোগী সিন্ডিকেট।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, পিস হিসেবেই বিক্রি হতো বেল। কিন্তু এখন তা কেজি দরে বিক্রি হয়। আর ক্রেতারা বলছেন, সিন্ডিকে’টের কারণে নিরুপায় হয়ে কেজি দরে কিনতে হচ্ছে পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ফলটি। এতে দাম বেশি পড়লেও নিরুপায় তারা।

বরগুনা শহরের রাস্তার পাশের ফল বিক্রেতা খোরশেদ আলম জানান, কখনো বেল কেজি দরে বিক্রি হতে পারে তা সে নিজেও কোনো দিন ভাবতে পারেননি। অথচ এ বছর রমজানেই তরমুজ আর কাঁঠালের দেখাদেখি বেলও কেজি দরে বিক্রি শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, এখন বেল পিস হিসেবে বিক্রি হয় না। এখন বেল বিক্রি হচ্ছে কেজি দরে। আমিও তো সারাজীবন দেখেছি- বেল পিস হিসেবে বিক্রি হয়। কিন্তু এখন তা আর হয় না। এখন কেজি দরেই বেল বিক্রি হচ্ছে।

একই বাজার থেকে তিনটি বেল কেজি দরে ৮৫ টাকায় কেনা আবুল হোসেন হাওলাদার সময় সংবাদকে বলেন, এই তিনটা বেল সর্বোচ্চ ৪৫-৫০ টাকায় পিস হিসেবে কিনতে পারতাম। কিন্তু এখন তা দ্বিগুণ দামে কিনতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে কনজ্যুমা’র অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (সিএবি)-এর বরগুনা শাখার সভাপতি মো. জাকির হোসেন মিরাজ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কেজি দরে বেল বিক্রির কথা আমি এর আগে আর কখনো শুনিনি। সম্প্রতি বরগুনায় এই প্রচলন শুরু হয়েছে। এর ফলে ভোক্তারা ঠকছেন। আম’রা শিগগিরই এ বিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানাবো।’

এ বিষয়ে বরগুনার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্ম’দ সেলিম বলেন, ‘বেল সাধারণত পিস হিসেবেই বিক্রি হয়। এই এলাকার মানুষ পিস হিসেবেই বেল কিনতে অভ্যস্ত। সম্প্রতি বরগুনায় বেল কেজি দরে বিক্রি শুরু হয়েছে। এর ফলে ক্রেতারা ঠকছেন। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে আম’রা ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন মানুষের সাথে কথা বলা শুরু করেছি। শিগগিরই আম’রা এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’এ বিষয়ে বরগুনার জে’লা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে অ’ভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।