আমাকে ‘পাপিয়া’ বলে অপবাদ দিয়েছে, অথচ এখন আমিই ভিলেন

ভিডিওটি যেখানে শুরু হয়েছে ঘটনার শুরু তারও আগে। ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সদস্যরা ইচ্ছাকৃতভাবে আমাকে উত্তেজিত করেছেন। আমাকে পাপিয়া, পাপিয়া বলে অপবাদ দিয়েছেন। অথচ এখন আমিই ভিলেন। সবখানে আমার সমালোচনা হচ্ছে…

রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডে সরকারি বিধিনিষেধের পঞ্চম দিনে রোববার (১৮ এপ্রিল) ‘মুভমেন্ট পাস’ ও ‘আইডি কার্ড’ নিয়ে বাগবিতণ্ডায় জড়ান চিকিৎসক, ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ কর্মকর্তা। বাগবিতণ্ডার ভিডিওটি ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় নেটিজেনরা ঘটনাটির সমালোচনা করেছেন।

কেউ উপস্থিত পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন। কেউ আবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাঈদা শওকত জেনির ভঙ্গি ও বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি নিয়ে সোমবার (১৯ এপ্রিল) ডা. জেনি বলেন, ‘ভিডিওটি যেখানে শুরু হয়েছে ঘটনার শুরু তারও আগে। ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সদস্যরা ইচ্ছাকৃতভাবে আমাকে উত্তেজিত করেছেন। আমাকে পাপিয়া, পাপিয়া বলে অপবাদ দিয়েছেন। অথচ এখন আমিই ভিলেন। সবখানে আমার সমালোচনা হচ্ছে।’

ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে জানতে চাইলে ডা. জেনি বলেন, ‘আমি বিএসএমএমইউতে সকাল ৮টা থেকে ডিউটি শুরু করি। দুপুরে অফিস শেষ করে বাসায় ফিরছিলাম। পুরোটা সময় পিপিই পরা ছিল। বাসায় ফেরার সময় মানসিকতাটা কেমন থাকবে, আপনিই বলেন। ওই অবস্থায় গাড়ি আটকানো হলো। আমার কাছে মুভমেন্ট পাস চাওয়া হলো। তাদের বলি, আমি ডাক্তার এবং ডিউটি করে এসেছি।’

‘তখন তারা আইডি কার্ড দেখতে চাইলে বলি, আমি আইডি কার্ড আনতে ভুলে গেছি। তখন তারা বলেন, আইডি কার্ড দেখাতেই হবে। তখন আমি গাড়ি থেকে নেমে এলাম। শরীরে অ্যাপ্রন ছিল। অ্যাপ্রনে বিএসএমএমইউর লোগো ছিল। গাড়ি থেকে নেমে আমি আমার গাড়িতে লাগানো স্টিকার দেখাই। স্টিকারে সম্মুখসারির স্বাস্থ্যকর্মী সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র ছিল। সেটাতে আমার ছবিও ছিল। আমি বারবার দেখানোর পর ম্যাজিস্ট্রেট বললেন, আমরা এগুলো দেখতে রাজি নই। আইডি কার্ড দেখান।’

ডা. জেনি বলেন, ‘অনেক প্রমাণ দেওয়ার পরও তিনি রাজি হচ্ছিলেন না। তখন আমি উত্তেজিত হই এবং গাড়িতে গিয়ে বসি। ম্যাজিস্ট্রেট তখন আমার গাড়ির সামনে এসে গাড়ি সাইডে নিতে বলেন। তর্কের একপর্যায়ে আমি শুনলাম পাপিয়া পাপিয়া বলা হলো। তখন আমি আরও উত্তেজিত হয়ে পড়ি। তাদের প্রত্যেকের আচরণ প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল। অথচ যে আংশিক ভিডিও ছাড়া হলো তাতে আমার ভূমিকাগুলোই দেখানো হলো।’

‘নারী ও মাদককারবারির সঙ্গে জড়িত কুখ্যাত পাপিয়ার সঙ্গে আমাকে তুলনা করা হয়েছে। এটা কোনো কথা! আমি মেনে নিতে পারছি না। এর ন্যায়বিচার চাই।’

ডা. জেনি বলেন, “ভিডিওটি খেয়াল করলে বুঝবেন, আমি বারবার ‘আমরা, আমরা’ বলেছি। আমি আমার নিজের কথা বলিনি। গোটা ডাক্তার সমাজের ভোগান্তির কথা বলেছি। চলমান করোনাযুদ্ধে মোট ১৩০ জন চিকিৎসক মারা গেছেন। ১৩০ পরিবার এতিম হয়েছে। অথচ এখন আমরা ভিলেন।”