কবে মুক্তি পাবেন মাওলানা মামুনুল হক, জানিয়ে দিলো পুলিশ

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি মাওলানা মামুনুল হকের বি;রু;দ্ধে রাজধানী ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় প্রায় অর্ধশত মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এর মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এলাকায় ১৭টি মামলার এজাহারনামীয় আসামি মামুনুল হক।

এছাড়া ঢাকার বাইরে নারায়ণগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চট্টগ্রামের একাধিক মামলাতেও মামুনুল হকের নাম রয়েছে। এসব মামলায় ধারাবাহিকভাবে তাকে গ্রেফতার দেখানো হবে। ফলে সহসাই আদালত থেকে জা;মিন নিয়ে পুলিশি হেফাজত ও কা;রাগা;র থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, মামুনুল হকের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। আমরা পর্যায়ক্রমে তাকে সবগুলো মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জি;জ্ঞাসাবাদ করবো। মামলাগুলোর তদন্ত শেষে দ্রুত আদালতে চার্জশিট দেওয়ার প্রক্রিয়াও চলছে।

ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতের তা;ণ্ড;বের সময় ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় মোট ৫৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এর মধ্যে চারটি মামলার তদন্ত শেষে আদালতে অভি;যোগপত্র দেওয়া হয়েছে। বাকি ৪৯টি মামলার মধ্যে ৩২টি মামলা এখনো থানা পুলিশের কাছে তদন্তাধীন। এছাড়া বাকি ১৭টি মামলা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে তদন্তভার হ;স্তান্তর করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে তদন্তাধীন ১৭টি মামলার মধ্যে ৯টি মামলার এজাহারে মাওলানা মামুনুল হকের নাম উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া পল্টন ও মতিঝিল থানা পুলিশের কাছে থাকা ৩২টি মামলার মধ্যে ৮টি মামলায় মামুনুল হকের নাম রয়েছে।

২০১৩ সালের মামলার নথিপত্র ঘেঁ;টে দেখা গেছে, পল্টন থানার একটি মামলায় (নং ১২) ৩৬ নম্বর আ;সা;মি হিসেবে মামুনুল হকের নাম রয়েছে। এছাড়া পল্টন থানার আরেকটি মামলা (নং ১৮) ১৯ নম্বর আ;সা;মি হিসেবে মামুনুল হকের নাম রয়েছে। মতিঝিল থানার একটি বি;স্ফো;;র;ক মামলায় (নং ১১) ১২৭ নম্বর আ;সা;মি, পল্টন থানার একটি মামলায় (নং ২০) ৩৩ নম্বর আ;সা;মি, মতিঝিল থানার আরেকটি বি;;স্ফো;র;ক মামলা (নং ১২) ১৭২ নম্বর আ;সা;মি হিসেবে মামুনুল হকের নাম রয়েছে।

ডিএমপি সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতের তা;ণ্ড;বের মামলা ছাড়াও সম্প্রতি মোদিবি;রো;ধী আ;ন্দো;লনের সূত্র ধরে সহিংসতার ঘটনায় রাজধানীর পল্টন ও মতিঝিল থানায় ১২টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে মতিঝিল ও পল্টন থানার পাঁচটি মামলায় মামুনুল হকের নাম রয়েছে।

পুলিশ হেডকোয়ার্টাস সূত্রে জানা গেছে, হেফাজতে ইসলামের সাম্প্রতিক স;হিং;;সতায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নারায়ণগঞ্জের একাধিক থানায় হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীর বি;রু;দ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এসব মামলার মধ্যে একাধিক এজাহারে হু;কু;মের আ;সা;মি হিসেবে মামুনুল হকের নাম রয়েছে।

উল্লেখ্য, রবিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় মাওলানা মামুনুল হককে। তাকে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার মোহাম্মদপুর থানায় ২০২০ সালে দায়ের হওয়া একটি নাশকতার মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার হারুন অর রশিদ। তিনি জানান, তাকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে সোমবার আদালতে পাঠানো হবে।

গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, মামুনুল হককে একে একে সবগুলো মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রি;মা;ন্ডে এনে জি;জ্ঞাসাবাদ করা হবে। ঢাকার মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলে ঢাকার বাইরে মামলাগুলোতেও গ্রেফতার দেখানো হতে পারে। ফলে আদালত থেকে জামিন নেওয়ার চেষ্টা করলেও সহসাই তার মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। একটি মামলায় জা;মি;ন পেলে তাকে আরেকটি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে।

গত বছরের শেষ দিকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণে বাঁ;ধা দিতে গিয়ে আলোচনায় আসেন মাওলানা মামুনুল হক। এরপর স্বাধীনতার ৫০ বছর ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা আসার বিরো;ধিতা করে হেফাজতে ইসলাম।

মোদিবিরোধী আ;ন্দোলতে বেপ;রোয়া তা;ণ্ড;বের পরপরই নারায়ণগঞ্জের একটি রিসোর্টে নারীসঙ্গীসহ স্থানীয় লোকজনের হাতে আটক হওয়ার পর আবারও আলোচনায় আসেন তিনি। ওই ঘট;নার পর একে একে তার একাধিক নারীর সঙ্গে ‘অনৈতিক সম্পর্ক’ থাকার বিষয়টি আলোচনায় আসে। যদিও মামুনুল হক দুই নারীকেও তার শরীয়তসম্মত স্ত্রী হিসেবে দাবি করেছেন।