বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে প্রতিদিনই দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যু ও আক্রান্তের মিছিল। মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে আবারও লকডাউন ও কঠোর বিধিনিষেধ জারি করছে বহু দেশ। করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হলেও থামছে না প্রাণঘাতী ভাইরাসটির তাণ্ডব।
মহামারি শুরু হওয়ার পর করোনা ঠেকানো সম্পর্কে বিভিন্ন কথা একাধিক গবেষণায় উঠে এসেছে। এবার ভাইরাসটির সংক্রমণ ও মৃত্যু সম্পর্কে নতুন তথ্য দিলেন যুক্তরাজ্যের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার হার কম হওয়ার পেছনে সূর্যের আলোর সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি করেছেন তারা। প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে ব্রিটিশ জার্নাল অব ডার্মাটোলজিতে।
আগের কয়েকটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছিল, ভিটামিন ডি-এর অভাব করোনায় সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। তবে এবার গবেষকরা বলছেন, ভিটামিন ডি নয়, এর পেছনে রয়েছে অতিবেগুনি রশ্মিই। যেসব অঞ্চলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছায় সেসব এলাকায় মৃত্যুহার কম। যেখানে অতিবেগুনি রশ্মি কম পৌঁছায় সেখানে মৃত্যুহার বেশি। মেডিকেল ব্রিফ এক প্রতিবেদনে এখবর জানিয়েছে।
তারা গবেষণা করে দেখেছেন, ত্বকের সঙ্গে বেশি মাত্রায় সূর্যের আলো সংস্পর্শে এলে সেক্ষেত্রে ত্বক থেকে নাইট্রিক অক্সাইড নির্গত হয়। সম্ভবত এর ফলেই কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব হয়।
মেডিকেল ব্রিফ জানিয়েছে, এই গবেষক দল গত বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় আড়াই হাজার স্থানের কোথায় কতটা অতিবেগুনি রশ্মি থাকে সেটি খতিয়ে দেখেছেন। আর সেই সঙ্গে ওই সব এলাকায় করোনার প্রকোপ কতটা, সেই পরিসংখ্যানও বিশ্লেষণ করেছেন। গবেষণা থেকেই তাদের কাছে স্পষ্ট হয়েছে, যেসব অঞ্চলে সর্বাধিক ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত অতিবেগুনি রশ্মি পৌঁছায়, সেখানে মৃত্যুহার তুলনামূলকভাবে অনেক কম। ইংল্যান্ডের পাশাপাশি ইতালিতেও একই রকম পরীক্ষা চালিয়ে একই ধরনের ফল পেয়েছেন তারা।
গবেষকরা বলছেন, রোদের সংস্পর্শে এলে হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। যেহেতু মারণ ভাইরাসের আক্রমণে হৃদযন্ত্র বিকল হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তাই এক্ষেত্রে তা করোনা রোগীদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে উঠতে পারে। তবে এই গবেষণা পর্যবেক্ষণমূলক প্রকৃতির হওয়াতে কারণ ও প্রভাব নির্ধারণ করা সম্ভব না। কিন্তু এই গবেষণা সম্ভাব্য চিকিৎসা নিয়ে পরীক্ষার পথ উন্মুক্ত করতে পারে বলে মনে করেন তারা।