কুপ্র’স্তাবে সাড়া না দেয়ায় না’রী পু’লিশের স্বা’মীকে শি’বিরক’র্মী সা’জালেন দুই ওসি

দুই ওসির কু’প্র’স্তা’বে সাড়া না দেয়ায় এক না’রী পুলিশ পরিদর্শকের স্বা’মীকে ‘শি’বিরক’র্মী’ সা’জিয়ে ফাঁ’সা’নোর অ’ভি’যো’গ উঠেছে। এছাড়া পূর্বের আ’ক্রো’শ মে’টা’তে এক এসআই দ্বারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে

স্বা’মী’কে শা’রী’রি’ক নি”র্যা’ত’নে’র অ’ভিযো’গ করেছেন ওই নারী পুলিশ পরিদর্শক।বুধবার (২৪ মার্চ) বিকেলে রাজশাহী মহানগর পুলিশ (আরএমপি) কমিশনারের কাছে লিখিতভাবে দুই ওসি ও এক এসআই’য়ের বি’রু’দ্ধে

অ’ভি’যো’গটি করেছেন ওই না’রী পরিদর্শক। অ’ভিযো’’গ ওঠা দুই ওসি হলেন- আরএমপির বোয়ালিয়া থা’নার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ এবং দামকুড়া থা’নায় কর্মরত ওসি মাহবুব আলম। জানা গেছে, দামকুড়া থা’নার ওসি মাহবুব আলম ওই না’রী পরিদর্শকের সাবেক স্বামী। ২০১৮ সালে ওসি মাহবুবের সাথে তার বি’চ্ছে’দ ঘটে।

এরপর ওই না’রী পুলিশ কর্মকর্তা আরেকটি বিয়ে করেন। ওসি মাহবুবও পরে পুলিশে কর্মরত আরেক না’রী’কে বিয়ে করেন। অভি’যো’গকারী না’রী পুলিশ পরিদর্শক বর্তমানে রাজশাহীর চারঘাটে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে সংযু’ক্তিতে কর্মরত আছেন। তার মূল কর্মস্থল ঢাকায় পুলিশের অ’প’রা’ধ তদ’ন্ত বিভাগ (সিআ’ই’ডি)।

সারদা পুলিশ একাডেমিতে দায়িত্ব শেষে আবার ঢাকা সিআ’ইডিতে ফিরে যাবেন। অ’ভিযো’গে তিনি উল্লেখ করেন, ‘২০১৩ সালে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক পুলিশ পরিদর্শক মাহবুব আলমের সাথে আমার বিয়ে হয়। শা’রীরি’ক এবং মা’নসি’ক নি”র্যা’ত’নের স্বী’কার হয়ে আমি নি’রুপা’য় হয়ে ২০১৮ সালে মাহবুব আলমের সাথে বিবাহ বি’চ্ছে’দ ঘটাই।

এরপর থেকে মাহবুব আলম আমাকে তার সাথে যোগাযোগ রাখার জন্য বি’ভি’ন্নভা’বে বি’র’ক্ত করে। পরবর্তীতে পারিবারিক’ভাবে রাজশাহী নগরীর চন্দ্রিমা থা’না’র ললিতা’হার এলাকার আব্দুল ওদুদের ছেলে মাহবুব হুসাইনের সঙ্গে আমার বিয়ে হয় এবং আমি সুখে ‘শান্তিতে বসবাস করছি।’

অ’ভিযো’গে উল্লেখ বলা হয়, ‘রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থা’না’র ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ রাজশাহীতে যোগদান করার পর আমার সাথে পরি’চয় হলে আমি তাকে কথা প্রসঙ্গে আমার বিষয়টা জানাই। এরপর থেকে নিবারণ চন্দ্র বর্মণ আমাকে বিভিন্ন সময় বি’র’ক্ত করতে থাকেন। আমি বিষয়টি না বোঝার ভা’ন করে তাকে এ’ড়ি’য়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।

পুলিশ পরিদর্শক মাহবুব আলম বোয়ালিয়া থা’না’র ওসি (তদ’ন্ত) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেই সময় ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ মাহবুব আলমের বিষয়ে কথা বলার জন্য আমাকে মাঝে মাঝে ফোন করতেন এবং বলতেন ‘একই শহরে অন্য ছেলেকে বিয়ে করে তুমি কি সংসার করতে পারবা? তুমি তো বিপ’দে পড়ে যা’বা।’ এছাড়া পুলিশ পরিদর্শক মাহবুব আলমও আমার বর্তমান স্বামী মাহবুব হুসাইনকে মতিহার থা”নায় ডেকে নিয়ে বিভিন্ন হু’ম’কি দিয়েছিলেন।

বলেছিলেন, ‘না’রী পুলিশ কর্মকর্তাকে বিয়ে করে তুমি ভালো থাকতে পারবে না। ওর সাথে মিশে তুমি আমার সাথে শ’ত্রু’তা তৈরি করো না। অ’ভিযো’গে ওই না’রী আরও লিখেছেন, ‘গত ১৬ মার্চ রাত দেড়টার সময় আমার স্বা’মী মাহবুব হুসাইন আমাকে ফোন করে বলেন বাসায় পু’লিশ এসেছে। আমি আমার স্বা’মীর ফোন থেকে বোয়ালিয়া থা’না’র ওসি (তদ’ন্ত) লতিফের সাথে কথা বলি।

তারা তখন আমার শ্বশুর-শাশুড়ির বাসা থেকে চলে যান। এর কিছুক্ষণ পর আনুমানিক রাত ২টা ২০ মিনিটে পুনরায় এসে আমার স্বা’মীকে নিয়ে যায়। আমি পুলিশ পরি’দর্শক (তদ’ন্ত) লতিফকে ফোন করে বলি তুমি কি ওকে (মাহবুব হুসাইন) নিতে গেছো? লতিফ জানায় হ্যাঁ নিতে গিয়েছি।’ এরপর থেকে আমি অসংখ্যবার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ এনং ওসি (তদন্ত) লতিফকে ফোন করি এটা জানার জন্য যে,

তারা আমার স্বা’মীকে কেন নিয়ে গেছে? কিন্তু আমি পুলিশ বা’হি’নীর একজন সদস্য হওয়া স’ত্ত্বে’ও তারা আমার ফোন রিসিভি করেনি। এরপর সকাল ৮টা ১০ মিনিটের দিকে আমি বোয়ালিয়া থা’না’য় আসি। ডিউটি অফিসার এএসআই চাঁদ সুলতানা আমাকে জানায় যে, আমার স্বা’মীকে বোয়ালিয়া থা’নায় নিয়ে আসা হয়েছে রাত ২টা ৩০ মিনিটের পর।

ওই সময় আমি ডিউটি অফিসারের সাথে এবং থা’নার অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে জানতে পারি আমার স্বা’মীর নামে তাদের কাছে কোনো রাজনৈতিক তথ্য নেই। আমি আমার স্বা’মীর সাথে দেখা করতে চাইলে ডিউটি অফিসার জানায় ওসি স্যারের নি’ষে’ধ আছে। সকাল অনুমানিক ৮টা ৩০ মিনিটে ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ লু’ঙ্গি পরিহিত অবস্থায় থা’নায় এসে হেসে আমাকে বলেন, ‘সেইতো দৌড়াইয়া আমার কাছে আসলা।

কিন্তু সময়মতো আসো নাই, তখনতো আমাকে ভালো লাগে নাই। এরপর তিনি বললেন, ‘তোমার স্বা’মী তো শি’বির করে।’ আমি বললাম, না স্যার ও কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত না।’ তখন তিনি বললেন, ‘পুলিশ কমিশনার স্যারের কাছে তোমার কথা বলি, তিনি বললে তোমার স্বা’মীকে ছেড়ে দেব।’ আমি বললাম, স্যার আমি কি আপনার সাথে কমিশনার স্যারের কাছে যাব?’

নিবারণ স্যার বললেন, ‘না তোমার যেতে হবে না।’ তখন আমি ডিউটি অফিসারের রুমে অ’সহা’য়ের মতো বসে থাকলাম। এরপর আনুমানিক দুপুর একটার দিকে ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ থা’নায় ফিরলেন। আমি পেছন পেছন তার অফিস রুমে ঢুকলাম। তিনি বললেন, ‘তোমার স্বা’মীর নামে মা’ম’লা হবে।’ তখন আমি বললাম, ‘স্যার আমি কি আমার স্বা’মীর সাথে দেখা করতে পারব?’ তিনি অনুমতি দিলেন।

আমি আমার স্বা’মী’র সাথে দেখা করতে গিয়ে দেখি আমার ‘স্বামীর মুখে হাতে আ’ঘা’তের চিহ্ন। আমি আমার স্বা’মীকে দেখে তার দুইটা মোবাইলের একটা ওসি স্যা’রের কাছ থেকে বুঝে নিয়ে কো’র্টে চলে আসি। ওইদিন সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আমার স্বা’মীসহ গ্রে’ফ’তারকৃত অন্যান্যদের কো’র্ট নিয়ে আসে।

তখন জানতে পারি আমার স্বা’মীর নামে স”ন্ত্রা’স দ’ম’ন আই’নের মা’ম’লা দিয়েছে এবং তার নামের পাশে শি’বির’কর্মী লিখে দিয়েছে। অথচ আমার স্বা’মী কোনোভাবেই জামা’ত-‘শিবিরে সাথে জ’ড়িত না। মূলত আমার স্বামী কোনো রাজনৈতিক দলের সাথেই জ’ড়িত নয়। কোনো দলীয় কমি’টিতে আমার স্বা’মীর নাম কেউ দেখাতে পারবে না।

এরপর আমি জে’লখা’নায় আমার স্বা’মীর সাথে দেখা করতে গেলে আমার স্বামী আমাকে জানান, বোয়ালিয়া থা’না’র এসআই মতিনসহ ওই টিমে থাকা অন্যান্য সদস্যরা শুধু আমার স্বামী’কে শা’রী”রিক নি’র্যা”তন করেছে।এস’আই মতিন আমার স্বা’মীকে বলেছে, ‘মাহবুব স্যারের বউকে বিয়ে করার শখ হয়েছে তোর। মাহাবুব স্যার তোর জীবন বরবা’দ করে দেবে। তুই মনে রা’খিস।’

ওই না’রী পরিদর্শক আরও লিখেছেন, ‘আমার স্বা’মী রাজনৈতিক দলের সাথে জ’ড়িত নয়। আমি আমার স্বা’মীকে নিয়ে সহজ স্বাভাবিক ও শান্তিময় জীবন-যাপন করছিলাম। ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ তার ব্যক্তিগত ‘নোং’’রা উদ্দেশ্য আমার উপর প্র’য়োগ করতে না পেরে এবং ওসি মাহবুব আলম আমার উপর পূর্ববর্তী আ’ক্রো’শ থেকে আমার জীবনটা ধ্বং’স করে দেয়ার উদ্দেশ্যে আমার স্বা’মীকে মি’থ্যা’ বা’নো’য়াট মা’মলা’য় চা’লান দিয়েছে।

আমি পারিবারিক এবং সামাজিকভাবে যে’ন হে’য় প্র’তিপ’ন্ন হই সেজন্যই এই ধরনের কাজ করেছে। আমি বাংলাদেশ পুলিশের একজন না’রী সদস্য। শুধুমাত্র ব্যক্তিগত আ’ক্রো’শবশ’ত আমার এবং আমার স্বা’মী’র উপর এই শা’রী’রিক ও মান’সিক নি”র্যা’ত’নে সু’ষ্ঠু তদ’ন্তপূর্বক ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ এবং ওসি মাহবুব আলমসহ আমার স্বা’মীকে যারা থা’নায় শা’রী’রিক’ভাবে নি”র্যা’ত’ন করেছে তাদের বি’রু’দ্ধে আইন’গত ব্যবস্থা নেয়ার বিনীত আবেদন করছি।’

বিষয়টি নিয়ে ওসি মাহবু’ব আলমের সঙ্গে যোগা’যোগ করা হলে তিনি এই ধরনের ঘটনা সঠিক ন’য় বলে দা’বি করেন। তিনি বলেন, আমার সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল। তারপর ছা’ড়াছা’ড়ি হয়ে গেছে। এরপর থেকে তার সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই।

সে আমাকে ফাঁ’সা’তে মি’থ্যা অ’ভি’যো’গ তুলেছে। ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ওই না’রীর’ সঙ্গে কোনো আ’প’ত্তি’ক’র কথা হয়নি। তার স্বা’মীকে সুনির্দিষ্ট অ’ভি’যো’গের ভিত্তি’তে গ্রে’ফ”তার করা হয়েছে। কিন্তু স্বা’মীকে বাঁ’চাতে সে আমার নামে মি’থ্যা অ’ভি’যো’গ তুলেছে।এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক জানান, এ ধরনের একটি অ’ভিযো’গ আ’সার কথা শুনেছি।

অ’ভিযো’গের ভিত্তি’তে তদ’ন্ত সাপে’ক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষে’প নেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, শুনেছি না’রী পুলিশ পরিদর্শক আরএমপির দামকুড়া থা’না’র ওসি মাহবুবের স্ত্রী ছিলেন। পরে ছা’ড়াছা’ড়ি হয়। অ’ভি’যো’গ এলে অবশ্যই ত’দ’ন্ত হবে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা’ও নেওয়া হবে।