নেই রাস্তা অথচ ৫ কোটি টাকায় সেতু নি’র্মাণ!

ব্রিজে’র নি’র্মাণ কাজ শেষ হয়েছে দুই বছর আগে। কিন্তু করা হয়নি সংযোগ সড়ক। ফলে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি সেতু কাজে আ’সছে না এলাকাবাসীর। নওগাঁর বদলগাছীর ছোট যমুনা নদীতে নি’র্মাণ করা সেতুটি এখন স্থা’নীয়দের কাছে শুধু সান্ত্বনার প্রতীক।

সমতল থেকে অ’ন্তত ৩০ ফুট উঁচু সেতুর মূল কাঠামোতে পথচারীদের উঠা নামা’র চিত্র অনেকটা পর্বত জয়ের মতো। নদী পারাপারে সহজ পথ না থাকায় স্থা’নীয়রা গত দেড় বছর ধ’রেই সেতুর সংযোগ সড়ক ছাড়াই অসমতল পথে ঝুঁ’কি নিয়ে করছে চলাচল।

নওগাঁর বদলগাছীর ছোট যমুনা নদীর কাদিবাড়ী ঘাট। এ ঘাট দিয়ে দুই পাড়ের অ’ন্তত শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের নদী পারাপার। দীর্ঘ ভোগান্তি অবসান ক’রতে ২০১৭ সালে ৩১ অক্টোবরে এ ঘাটে সেতু নি’র্মাণ কাজ শুরু হয়। নতুন দিনের আশা জাগে এলাকাবাসীর কাছে।

স্থা’নীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের তত্ত্বাবধানে সেতুর নি’র্মাণ শেষ হয়েছে ২০১৯ সালের ৩১ মা’র্চ। কিন্তু সেতু থেকে মূল সড়কে প্রায় ১৬০ মিটার সংযোগ সড়ক নি’র্মাণ না করে ফে’লে রাখে ঠিকাদার। এতে বাধ্য হয়ে অস’ম্পূর্ণ সড়কের অ’ন্তত ৩০ ফুট উঁচুতে থাকা মূল সেতুর ওপর দিয়ে চরম ঝুঁ’কি নিয়ে চলাচল ক’রতে হচ্ছে স্থা’নীয়দের।

এক এলাকাবাসী বলেন, ‘রাস্তা ছাড়া ব্রিজ হয়ে কি লাভ হইছে? রাস্তা ছাড়া ব্রিজ দিয়ে আম’রা কী করব? আগে আমাদের দরকার রাস্তা, তারপর ব্রিজ। আরেক এলাকাবাসী বলেন, ‘এই ব্রিজটা হইছে দুই বছর হচ্ছে। কিন্তু এখনও রাস্তা হওয়ার কোনো আশা দেখছি না। এটা আমাদের চলাচলের প্রধান রাস্তা।

ইথেন এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান সেতুটি নি’র্মাণ কাজে’র দরপত্র পায়। সংশ্লি’ষ্ট ঠিকাদারের দা’বি, জমি অধিগ্রহণ সুযোগ না থাকায় আ’টকে রয়েছে সংযোগ সড়ক নি’র্মাণ কাজ।

সেতু নি’র্মাণ ঠিকাদার মাসুদ রানা বলেন, ‘এই ব্রিজটা করার পূর্বেই রাস্তার জায়গার জমিগুলো অধিগ্রহণ করা উচিৎ ছিল। আমাদের এই প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ করার সুযোগ ছিল না।

যার ফলে তারা জমি অধিগ্রহণ করেনি। ধ’রেন, একটা লোকের দশ কাঠা জায়গা আছে কিন্তু রাস্তার জন্য তার সাত কাঠা জায়গা চলে যাচ্ছে। এটা তো হৃদয়বিদারক। আমাকে জায়গা ক্লিয়ার করে দিবে আমি করে দিব।

সেতুর সংযোগ সড়ক নি’র্মাণ করে দ্রুত চালু করার আশ্বা’স স্থা’নীয় প্রকৌশল বিভাগের এ ক’র্মকর্তার। আর জন প্রতিনিধিরা বলছেন, জনগু’রুত্ব পূর্ণ সেতুটি চালু হলে ব্যা’পক উপকৃত হবে এলাকাবাসী।

বদলগাছী উপজে’লা প্রকৌশলী মো. মোকলেছুর রহমান, ‘এখানে মূল স’মস্যা হচ্ছে, রাস্তা অধিগ্রহণের সুযোগ ছিল না। জমি অধিগ্রহণের সুযোগ থাকলে রাস্তা অনেক আগেই হয়ে যেত।

বদলগাছী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সালাম বলেন, ‘আম’রা জমি অধিগ্রহণে চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু অধিগ্রহণ ক’রতে পারিনি। এবং এলাকাবাসীর দা’বিও ছিল জমি অধিগ্রহণের।

আ’সলে এই প্রকল্পের আওতায় অধিকাংশ জমি অধিগ্রহণের সুযোগ ছিল না। এ নিয়ে এলাকাবাসী আলোচনায় বসেছে। তারা এই স’মস্যা সমাধানের জন্য খুবই আন্তরিক।

আশা করছি এই স’মস্যা খুব তাড়াতাড়ি সমাধান হবে। গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে নি’র্মাণ করা সেতুটি দৈর্ঘ্য ৯০ দশমিক ১৫ মিটার, যার ব্যয় ধ’রা হয়েছে ৫ কেটি ২১ লাখ ২শ ৭৭ টাকা।’