গো’পন ৮ স্ত্রী নক্সাবন্দীর, মা’মলা তুলে নিতে ৪র্থ স্ত্রীকে হু’মকি!

হাসানুর রহমান হোসাইন নক্সাবন্দী ওরফে মো. হাসান। তার প্রধান পরিচয় তিনি একজন মাওলানা। দেশের বিভিন্ন স্থানে তিনি ওয়াজ মাহফিল করে বেড়ান। তবে চতুর্থ স্ত্রীর মা’ম’লায় এখন তিনি ঢাকা কে’ন্দ্রীয় কা’রাগা’রে (কেরানীগঞ্জ) রয়েছেন। চতুর্থ স্ত্রীর অ’ভিযোগ, এখন মা’ম’লা তুলে নিতে নক্সা’বন্দীর পরিবারের লোকজন নানাভাবে চা’প দিচ্ছেন। মা’মলা তুলে না নিলে প্রা’ণনা’শের হু’মকি দিচ্ছেন প্রতারণার শি’কার ভুক্তভোগী নারীকে।

শনিবার (৬ মা’র্চ) দুপুরে ১টার দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রা’ইম রি’পোর্টার্স এসোসিয়েশন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নক্সাবন্দী হুজুরের চতুর্থ স্ত্রী তিন মাসের কন্যা শি’শুকে নিয়ে এসব অ’ভিযোগ করেন। এ সময় তার পাশে বাবা ও মা উপস্থিত ছিলেন।

ওই নারী বলেন, বিয়ের পর আমি জানতে পারি, তার আরও সাত স্ত্রী রয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লার এক স্ত্রী দুইটি মা’ম’লা ক’রেছেন। এমনকি তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়িও হয়েছে। ওই ঘরে দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বড় মেয়ের বয়স ৯ বছর। বিয়ের আগে এত বিয়ের তথ্য গো’পন করে আমা’র স’ঙ্গে প্র’তারণা ক’রেছেন। এরপরও সবকিছু সহ্য করে তার স’ঙ্গে ঘর-সংসার করছিলাম।

কিন্তু গত বছরের অক্টোবর মাসের শেষ দিকে আমা’র বাবার কাছ থেকে বিভিন্ন অ’জুহাতে তিন লাখ টাকা নেয়। যা ৩ নভেম্বর দেওয়ার প্র’তিশ্রুতি দেয়। সেই টাকা ফেরত চাইতে গেলে আমা’র স্বামী হাসান নক্সাবন্দী, ভাই আনাস ও মামা সুজন মোল্লা আমাকে শা’রীরি’ক নি’র্যাত’ন করেন। তারা জা’নায় কোনো টাকা ফেরত দেওয়া হবে না।

এরই মধ্যে গত ২৮ নভেম্বর আমা’র একটি কন্যা শি’শু জ’ন্মগ্রহণ করে। ২৯ নভেম্বর আমা’র কোল থেকে বাচ্চা কেড়ে নিয়ে মে’রে ফে’লার চে’ষ্টা চা’লায়। আমি চিৎকার করলে আনাস আমা’র মুখ চে’পে ধ’রে, আবুল কালাম ও সুজন মোল্লা এ’লোপা’থা’ড়ি কি’ল ঘু’ষি মা’রতে থা’কে। এরপর আমি ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার হোমনায় চলে যাই।

ওই নারী অভি’যোগ করে বলেন, ‘এর আগে ২০১৯ সালের ২ সেপ্টেম্বর পারিবারিকভাবে নক্সাবন্দী হুজুরের স’ঙ্গে তার বিয়ে হয়। কুমিল্লার হোমনার দুলালপুরে এক পীরের আ’স্তানায় ওয়াস মাহফিল ক’রতে গিয়ে এই নারীকে পছন্দ করে। ওই নারীর মা ওই পীরের ভক্ত ছিলেন। সেই সুবাদে নক্সাবন্দী পীরের মাধ্যমে এই নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। রাজি না হলেও পীরের জো’রাজুরিতে একপর্যায়ে বিয়ে হয়।

বিয়ের পর থেকেই যাত্রাবাড়ীর ধলপুর এলাকায় একটি বাসায় নিয়ে তোলেন ওই নারীকে।’ ওই নারী অ’ভিযোগ করেন, বাসায় একা রেখে বাইরে তালা দিয়ে ১০ থেকে ১৫ দিন করে বাইরে থাকতেন এই ভ’ণ্ড হু’জুর। একই ভবনের ছয়তলাতেও একটি বাসা ভাড়া রেখেছিলেন। যেখানে প্রায়ই অন্য নারীদের এনে ঝা’ড়ফুঁক ও বিভিন্ন স’মস্যা সমাধান করার কথা বলে রাত্রিযাপন ক’রতেন। এ নিয়ে বললে আমাকে সবাই মিলে মা’রধ’র ক’রতেন।

মা’রধ’রের পর অ’জ্ঞান হয়ে যাই। এরপর হাসপাতালে গিয়ে ২০২০ সালের ১০ মা’র্চ পরীক্ষা করালে জানতে পারি আমি সন্তান-সম্ভবা। এরপর সন্তান ন’ষ্ট ক’রতে উ’ঠে প’ড়ে লাগে সবাই এবং নি’র্যাত’ন করে। গত ১৮ জুন আবারও নি’র্যাত’ন করলে আমি যাত্রাবাড়ী থা’না’য় জিডি করি। পু’লিশ হাসান নক্সাবন্দীকে থা’নায় নিয়ে আসে। একপর্যায়ে তার ভাই আনাস ও মামা সুজন মোল্লা মুচলেকা দিয়ে থা’না থেকে বের করে নিয়ে যান। এরপর আবার একই রকম অ’ত্যা’চার চালাতে থাকেন।

গত জানুয়ারি মাসে ঢাকার নারী ও শি’শু নি’র্যাত’ন দ’মন আ’দালতে মা’ম’লা করেন ওই নারী। আ’দালত মা’ম’লা আ’মলে নিয়ে মতিঝিল থা’নাকে ত’দন্তের দায়িত্ব দেয়। হাসান নক্সাবন্দী কমলাপুর পুরা’তন বাজার জামে মসজিদের খতিব হিসেবে ক’র্মরত থাকায় মতিঝিল থা’না ত’দন্তের দায়িত্ব পায়।

নক্সাবন্দীর বি’রুদ্ধে সত্যতা পাওয়ায় আ’দালত গত ১৯ ফেব্রুয়ারি গ্রেফ’তাররি পরো’য়ানা জা’রি করে। আর গত ২৬ ফেব্রুয়ারি নক্সাবন্দীকে গ্রেফ’তার করে মতিঝিল থা’না পু’লিশ। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপির প্রতি অনুরো’ধ করে বলেন, ‘আমি নিরীহ পরিবারের গরীব বাবা মায়ের সন্তান। নক্সাবন্দী আমাকে বিয়ে করে প্র’তারণা ক’রেছেন। আমা’র কোলে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

এখন নানাভাবে আমাকে ও আমা’র পরিবারের সদস্যদের হু’মকি ধম’কি দিচ্ছেন নক্সাবন্দীর পরিবারের লোকজন। আমি এ থেকে মু’ক্তি চাই, নক্সাবন্দীর শা’স্তি চাই।’মতিঝিল থা’নার এসআই হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘মাওলানা হাসানুর রহমান নক্সাবন্দীর বি’রুদ্ধে শিগগিরই আ’দালতে চা’র্জশিট দেওয়া হবে।

রি’মান্ডে একাধিক বিয়ের কথা স্বী’কার ক’রেছেন নক্সা’বন্দী। একাধিক ঘরে ছেলে মেয়ে থাকার কথাও জা’নিয়েছেন তিনি। তিনি ওয়াজ মাহফিলের আড়ালে নারীদের টার্গেট করে বিয়ে ক’রতেন। এরপর নানারকম নি’র্যা’তন চালাতেন। এরমধ্যে কেউ কেউ তাকে ছে’ড়ে চলে গেছেন বলে জা’নিয়েছেন। চট্টগ্রামে তার একটি বাড়ি রয়েছে এবং সেখানে তার প্রথম স্ত্রী থাকার কথা স্বী’কার ক’রেছেন নক্সাবন্দী।’